আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বস্তা বাবা

জীবনকে খুব কাছ থেকে দেখতে চাই। গতানুগতিকতার গন্ডি থেকে মুক্তি চাই। এতে হয়তো শুনতে হবে অনেক অপমানের বাণী। ভয় করি না।

যারা অনেকদিন ধরে ঢাকায় আছেন তারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন যে ঢাকার রাস্তায় প্রায়ই বিভিন্ন রকম পাগল দেখা যায়।

এদের অনেকেই নগ্ন অবস্থায় রাস্তায় রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে অথবা কেউ কেউ শুধু একটি নেংটি পরিহিত অবস্থায় হাঁটাহাটি করে। ইদানিং দেখছি এরকম কিছু পাগল হটাত করেই মানুষকে আক্রমন করে বসছে। । তারা অনেকেই পথচারীর কাছে এসে বলে মাগো অথবা বাবা (লিংগ ভেদে)২ টা টাকা দেন । এরকম অবস্থায় কেউ তাদের সাথে কথা বাড়াতে চায়না।

তাড়াতাড়ি টাকা দিয়ে লোকটিকে বিদায় করলেই যেন সবাই হাফ ছেড়ে বাঁচে। আমিও সাধারণত সবার মতই টাকা দিয়ে আপদ বিদায় করি। বেশ কিছুদিন আগে আমি কমলাপুরের পাশের রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম। তখন রাত প্রায় একটা। হটাত দেখলাম যে কে যেন আমাকে ডাকছে বলছে "ঝুটা ,এদিকে তাকা।

"আমি ডানে বামে তাকালাম । কিন্তু কাউকেই দেখতে পাচ্ছিলাম না। আবার সেই কন্ঠ শুনতে পেলাম। "ঝুটা"। পিছনে ফিরে দেখি যে একজন লোক বস্তা গায়ে দিয়ে আছে।

তার পুরো শরীর বস্তা দিয়ে আবরিত। তার চোখে ভারি কাল ফ্রেমের চশমা । মুখে দাড়ি গোঁফের জংগল। মাথায় অনেক লম্বা চুল। আমাকে বলল এদিকে আয়।

বলতে বলতে সেই পাগল খুব কাছাকাছি চলে এল। আমি পাগলদেরকে এমনিতেই খুব ভয় পাই। ভাবছিলাম যে দৌড় দিব কি না। কিন্তু আমি আমার পায়ে কোন শক্তি পাচ্ছিলাম না। ততক্ষণে লোকটি একে বারে আমার খুব কাছাকাছি চলে এল।

আমাকে বলল ঝুটা, তোকে দিয়েই হবে। আমি বললাম কি হবে বাবা? -ঝুট তুই কিছুই জানিস না? আমি ভয়ে ভয়ে মাথা নেড়ে না করলাম। পাগল আমাকে বলল আমি বস্তা বাবা। সারা দিন বস্তার মধ্য থাকি। আমি যা বলি তাই হয়।

তোকে দিয়েই হবে। -আমি আবার বললাম কি হবে বাবা? -"তার আগে আমাকে তুই ১০০ টাকা দে। আমি বলতেছি। "আমি মনে মনে বললাম, এই কেইস। আমার ভয় তখন কিছুটা কমলো।

আমি বললাম বাবা আমার কাছে তো এত টাকা নাই। বাবা রেগে গেলেন। বললেন তোকে দিয়ে কিছুই হবে না। আমি বাবাকে বললাম বাবা আমি যাই তাহলে? বাবা আমাকে বললেন ঝুটা ,তুই ধবংস হ। তুই নিপাত যা।

তোর বউ নিপাত যাক। তুই নিরবংশ হ। আমি বাবা কে বললাম ,বাবা আমি তো এখনও বিয়েই করি নি। আমার বউ আসবে কোথা থেকে। বাবা বললেন ,এখন ও বিয়েই করিস নি?তো তুই করছিস কি এত দিন? -বাবা আছে নাকি আপনার কাছে কেউ?তাহলে তো আমার উপকার হয়।

-যার পকেটে ১০০ টাকা নাই তার আবার বিয়া। কত আছে তোর কাছে? আমি বললাম মাত্র ৫ টাকা আছে। কিনতু বাবা এত কম দিলে তো আপনার অপমান হবে। -আচছা ৫ টাকাই দে। আমি বাবা কে ৫ টাকা দিলাম।

-বাবা মনে হয় একটু খুশিই হলেন। বললেন যা তুই নিরবংশ হবি না। আল্লাহ তোর উপর খুশি আছে। যা তোর ১ ডজন বাচ্চা হবে। হায় আল্লাহ বাবা বলে কি? -বাবা এইটা আপনে কি বললেন ১ ডজন?১ ডজন পোলাপানকে কি খাওয়াব? -বাবা বলল,বস্তা খাওয়াবি।

বুঝছস? ভাগ্য ভাল ৫ টাকা দিলাম। ১০ টাকা দিলে কি যে বলতো কে জানে? রাত প্রায় আড়াইটা ,এমন সময় টহল পুলিশ বাঁশি বাজাতে লাগল। বাশির শব্দ শুনে বাবাকে কেমন যেন আতঙ্কিত মনে হল। পুলিশও কাছে আসতে লাগল। আর বাবাও তার গায়ের বস্তা খুলতে লাগল।

বাবা কেন গা থেকে বস্তা খুলতে লাগল তখনও বুঝিনি। আমি বাবাকে বললাম বাবা কি করছেন?বস্তা বাবাই তো ভাল ছিল। এখন দেখি বস্তা খুলে পুরোপুরি নাংগু বাবা হয়ে গেছেন। বাবা আমার দিকে তাকিয়ে তার হলুদ দাঁত কিরমির করে বললেন "ধুর, তোর ছাতার নাংগু বাবা। "বলেই বস্তাটি আমার দিকে ছুড়ে দিলেন এক দৌড়।

বস্তা পরে দৌড়াতে অসুবিধা তাই বাবা বস্তা খুলেই দৌড় দিল। যত দূর চোখ যায় বাবার দৌড় দেখলাম। একজন টোকাই আমাকে বলছে ও ভাইজান বস্তা নিয়া খাড়াইয়া আছেন কেন?আমারে দিয়া দেন। ও ,তাই তো আমি বস্তা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি কেন?আমি বস্তাটা তাকে দিয়ে বাসায় চলে আসলাম। ইমির


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.