আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অর্ধশতাব্দীর প্রাচীন বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস করে মেঝেতে..

সময়... অনাদি... হতে... অনন্তের... পথে...

কুলচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ৫২ বছর পরও কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি না পেয়ে আজ সংক্টাপন্ন। ১৯৫৫ সালে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার উত্তরসুর গ্রামের স্বর্গীয় কুলচন্দ্রের ছেলেরা সমাজের শ্রমজীবি, বিত্তহীন দরিদ্র শিশু কিশোরদের মধ্যে শিক্ষার আলো বিতরণের মহানব্রত নিয়ে স্কুলটির প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর পর্যায়ক্রমে স্কুলটি সরকারি হওয়ার ২০/২৫ বছর অতিক্রম হলেও এখনোও এর অবাকাঠামোগত উন্নয়নে সরকারের কোন মহলই এগিয়ে আসেনি। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছাত্র-ছাত্রীরা মেঝেতে বসে ক্লাস করছে। অধিকাংশ ক্লাস রুমেরই দরজা-জানাল ভাঙ্গা।

স্কুলে নেই কোন সীমানা প্রাচীর, যার কারণে গবাদি পশুর অবাদ বিচরণ স্কুল প্রাঙ্গনে। অথচ স্কুলটির লেখাপড়ার মান ভালো। এরই মধ্যে স্কুলটি উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে একমাত্র শতভাগ পাশের কৃতিত্ব অর্জন করেছে। ২০০৬ সালে সেন্টার পরীক্ষায় সব ছাত্র-ছাত্রী কৃতকার্য হয়। গত বছর এই স্কুল থেকে ৯৫% ছাত্র-ছাত্রী বৃত্তিলাভ করে।

এছাড়া বিভিন্ন খেলাধুলায়ও এই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা একাধিকবার জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। ১৯৫৫ সালে কুলচন্দ্রের ছেলেদের বানিয়ে দেয়া বাংলো টাইপের আধপাকা টিনশেড ঘরে প্রতিদিন ৫শ’ ছাত্র-ছাত্রী কাস করছে। স্কুলের শিকক্ষ-শিকিক্ষারা কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে প্রতিদিনই দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকেন। ঝড়-বৃষ্টির দিন এলে এই দুশ্চিন্তা বেড়ে যায় আরো কয়েকগুণ। কখন জানি ধ্বসে পড়ে স্কুল ভবনটি! বছর খানেক আগে এলজিইডি থেকে পাওয়া ২২ হাজার টাকা দিয়ে শুধুমাত্র অফিস করে দরজা-জানাল ঠিক করানো হয়েছে দরকারি নথিপত্র সংরক্ষণের জন্য।

স্কুল কতৃপক্ষ অনেক লেখালেখির পরও ভবন সংস্কার করার জন্য কোন বরাদ্দ আনতে পারেন নি। স্কুলের প্রধান শিকক্ষ সত্যন্দ্র পাল এর সাথে কথা হলে তিনি বেদনা ও হতাশ হৃদয়ে বলেন, সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমে বিভিন্ন স্কুল বিল্ডিংয়ে রূপান্তরিত হচ্ছে। কিন্তু আমরা বিল্ডিং চাইনা। আমাদের সবক’টি করে দরজা-জানালা ও ছাত্র-ছাত্রীদের বসার ব্রেন্স এবং স্কুলের নিরাপত্তার জন্য সীমানা প্রাচীর তৈরি করে দিলেই তৃপ্ত হতাম। তিনি বলেন, ৫শ’ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মাত্র ৩৩ জোড়া ব্রেন্স রয়েছে স্কুলে।

তাই বাধ্য হয়েই ছাত্র-ছাত্রীদের মেঝেতে বসাতে হচ্ছে। এলাকাবাসী জানান, স্কুলটির প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত কোন মহৎ ব্যক্তি বা কোন সংগঠনের পক্ষ থেকেও কেউ এগিয়ে আসেনি একটু সংস্কার করে দেওয়ার জন্য। তাদের দাবি অর্ধশতাব্দী প্রাচীন মানুষ গড়ার এই প্রতিষ্ঠানটিকে যেভাবেই হোক ঠিকিয়ে রাখতে হবে। তাই স্কুলটি সংস্কার বা নুতন ভবন না বানিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের সুষ্ঠু লেখাপড়ার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের আশু হস্তপে কামনা করছেন এলাকাবাসী। স্কুলটির সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাওয়া হলে, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা একে এম রুহুল আমিন বলেন, নতুন বিল্ডিংয়ের জন্য ট্রেন্ডার কল করা হয়েছে।

এরপর কাজ শুরু হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।