আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামায়াত, মুজাহিদ ,সাঙ্গপাঙ্গ আর নব্য জামাতীরা তো মানুষ নয়। এরা শকুনের দল!

সময়, কবিতা, ছোটগল্প, দেশ, দেশাচার

মরিচাকান্দী থেকে নরসীংদি। লন্চে গ্রামের সাধারণ মানুষের সাথে শহুরে সাহেবদের ভীড়। প্রতিটি চেহারাতেই ভয় আর দুর্ভাবনার ছাপ। প্রতিটি মানুষই যেন মুত্যকে সামনে রেখেই বেরিয়েছে পথে। কারো সাথে কারো কথা নেই, সে সাহসও হারিয়ে ফেলেছে সবাই।

নদীর পানি থেকে ভেসে আসছে দুর্গন্ধ। ভয়ঙ্কর দুর্গন্ধ, ভয়াল দুর্গন্ধ। সবার চোখ নদীর বুকে নিবদ্ধ, দৃষ্টিতে বেদনার ছাপ। কিসের এই দুর্গন্ধ? লাশ! লাশ! লাশ! এ দুর্গন্ধ লাশের । পশুর নয়, মানুষের লাশ।

শত শত বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের। নারী, পুরুষ, শিশু নির্বিশেষে। নরসিংদী থেকে ঢাকা অবধি বাসযাত্রা। রাস্তায় রাস্তায় বাস থামিয়ে তল্লাশী। হায়েনার কুটিল চেহারায় আজরাইল সেজে পাকি সেনাদের দল, আর তাদেরকে সহায়তায় রাজাকারের শকুনী চোখ।

এ যাত্রা অপরিচিত নয়। পাঁচদোনা বাজার। প্রায় প্রতিটি দোকান পুড়ে ভস্মীভুত? রাস্তার দু’পাশে লাশ। আগুনে পোড়া লাশ, বন্দুকের গুলিতে ক্ষতবিক্ষত আমার ভাইবোনের লাশ! আশ সে লাশ ঘিরে শকুনের বিকৃত উল্লাশ! রাস্তার ধারে খালে বিলে লাশ। কারো শরীর খুবলে খেয়েছে মাছ, কাক আর শকুনের দল।

একটি লাশের কথা এখনও চোখের সামনে দেখতে পাই। অর্ধেক পানিতে, অর্ধেক ডাঙ্গায়। শক্ত হয়ে যাওয়া দু’হাত উচু করে তলা। দুই হাতে জলজ আগাছা ঝুলে তসবিহর মতো। মনে হচ্ছে, আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ তার মৃত্যুর আগে।

এ দৃশ্য কারো দেয়া বর্ণনা নয়। নিজে দেখেছি। এখনও ঘুমের ঘোরে, দু:সপ্নে দেখি। জামাত, ধর্মান্ধদের উল্লাসে আরো বেশী দেখি। মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা।

মধুমিতা সিনেমা হল। স্তুপিকৃত করে জমিয়ে রাখা লাশ! মানুষের লাশ। এদেশের মুক্তিকামী মানুষের লাশ। আর শকুনের উল্লাস! আজও দেখি সেই শকুনেরই উল্লাস! কেন এত লাশ? কারা এই গনহত্যার হোতা আর তাদের দোসর? ইতিহাস কি নিজেই নিহত? আজও কি তার প্রমান দিতে হবে, যে এর হোতা পাকিস্তানী বর্বর বাহিনী আর তাদের দোসর রাজাকার, আল বদর, আর আল শামসএর পৈশাচিক গনহত্যার ফসল? জামাতের শকুন মুজাহিদ এতদিনে একটি কাজের কাজ করেছে। নিজের ফাঁদে নিজেই দিয়েছে ধরা।

আমাদের নব্য জামাতীর দল এতদিন রাজাকার, আল বদর, আর আল শামস এর হত্যাকারীদের সাথে জামাতের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে এসেছে। এবার মুজাহিদ “বাংলাদেশে কোন যুদ্ধাপরাধী নেই” বলে হত্যাকারীদের সাফাই গেয়ে নিজেদের অপরাধের প্রমান দিয়েছে। এই নব্য রাজাকের প্রতি সার্বক্ষনিক ঘৃনা। এরা ধর্মের প্রমান দিতে চৌদ্দশো বছরের আগের কাহিনী গড় গড় করে বলে যায়, অথচ ৩৭ বছর আগের কাহিনী ভাবতে গিয়ে কোন সঠিক যোগসুত্র খুজে পায়না। আমার কাছে এই চৌদ্দশো বছর আগের কাহিনীর চেয়ে ৩৭ বছর আগের এই অনেক বেশী মর্মগ্রাহী।

আমি হিন্দু না মুসলিম, তাতে কিছু যায় আসে না, আমি নাস্তিক না আস্তিক এটাও কোন বিবেচনার বিষয় নয়, আমি মানুষ বলেই আমার কাছে আমার কাছে ৩৭ বছর আগের এই গনহত্যা অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ন, আমার মানসে অনেক বেশী স্পষ্ট। জামায়াত, মুজাহিদ ,সাঙ্গপাঙ্গ আর নব্য জামাতীরা তো মানুষ নয়। এরা শকুনের দল!


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.