আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

@জামায়াতের মনোগ্রামকে ইস্যূ করে ইসলামের শত্রুদের ষড়যন্ত্র থেকে সাবধান!

জন্মোপার থেকে পৃথিবী হয়ে অনন্তে >>> ©www.fazleelahi.com

দাঁড়ি পাল্লার আরবী হলো মীযান, যা একাধারে পরিমাপনে ব্যবহৃত হয়, তুলাদণ্ড, বিচার-সুবিচার-ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়, আখেরাতের বিচারেও মীযান বা দাঁড়ী পাল্লা স্থাপন করে মানুষের পাপ-পূণ্যের হিসাব করবেন আল্লাহ্ তা'আলা। কেউ যখন দাঁড়ি পাল্লা দিয়ে পরিমাপ করে, তখন স্বভাবতঃই দাঁড়ি পাল্লাকে উচ্চে তুলে ধরে, এতে কিন্তু কোনভাবেই ফয়সালাকারী বা পরিমাপকের অপমান হয় না বা স্বাভাবিক মস্তিষ্কসম্পন্ন কেউ এ নিয়ে কোন প্রশ্নও উত্থাপন করে না। কেননা, মূল পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত তো দাঁড়িপাল্লার ধারকের; দাঁড়ি পাল্লার নয়। অতএব, পৃথিবীর জন্য আল্লাহ্ নামের সাথে দাঁড়ি পাল্লার সংযোগ হলো মানুষের জন্য আল্লার বিধানকৃত ন্যায়-নীতি, জীবন-পদ্ধতি, সংবিধান, আইন-কানুন ইত্যাদি। আর আখেরাতের জন্য মানুষের কৃতকর্মের ভাল-মন্দ পরিমাপ করা হবে দাঁড়ি পাল্লায় যা আল্লাহ্ তা'আলা হাশরের দিন তাঁর বিচার ব্যবস্থাপনায় স্থাপন করবেন।

উভয় অর্থেই আল্লাহ্ নামের সাথে দাঁড়ি পাল্লার সংযোগ এবং অত্যন্ত স্বাভাবিক ভাবেই পরিমাপক বা বিচারক ন্যায় দণ্ডকে উচ্চে তুলে ধরে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করেন বা পরিমাপ করেন বলে আল্লাহ্ শব্দের উপরে দাঁড়ি পাল্লা থাকাটা অযৌক্তিক নয় এবং এতে কোনক্রমেই আল্লাহ্ সোবহানাহু ওয়াতা'আলাকে অসম্মান কিংবা খাটো করা হয় না। তদুপরি, এটা একটা মনোগ্রাম, যেখানে ইসলামী ভাবধারার একটা কাঠামোর ভেতরে মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রাখা হয়েছে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ তা'আলাকে। অত্যন্ত সাধারণ নিয়মেই যেন আল্লাহ্ তাঁর ন্যায়ের ফয়সালা বা পরিমাপক হিসেবে মীযানকে উচ্চে তুলে ধরেছেন। এতে তাঁর "আইন-বিধান দাতা" ও "ন্যায় বিচারক" গুণাবলীর চমৎকার বহিঃপ্রকাশ সুস্পষ্ট। এবং এর দ্বারা প্রতীয়মান যে, সকল ক্ষমতার উৎস ও সর্বোচ্চ ন্যায় বিধান করতে পারেন কেবলমাত্র আল্লাহ্ রাব্বুল 'আলামীন।

তাঁর উচ্চকিত মীযান বা ন্যায়ের বিধানই পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হওয়া বাঞ্ছনীয়, পৃথিবীর শান্তি-শৃংখলার জন্য অপরিহার্য। তারপর নীচের ভিত্তি-মূলে রাখা হয়েছে أقيموا الدين অর্থাৎ, "দ্বীন তথা ইসলাম প্রতিষ্ঠা কর"। যা পৃথিবীতে মানুষের জন্য আল্লাহ্ প্রদত্ত সবচেয়ে বড় কাজ। উক্ত মনোগ্রাম ঠিক যে উদ্দেশ্য প্রকাশ করে এবং এর ধারক-বাহকেরাও যে জন্য প্রাণান্ত সাধনা করে যাচ্ছে। তাই পৃথিবীতে মুসলমানদের জন্য এই গুরু দায়িত্ব পালনের জন্য প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা থাকতেই পারে, তদুপরি যেখানে মানুষের আখেরাতী জীবনের শেষ বিচারেও এই দাঁড়িপাল্লার মাধ্যমেই আল্লাহ্ চূড়ান্ত বিচার-ফয়সালা করবেন।

তাই আমার দৃষ্টিতে মনোগ্রামের কাঠামো সাজানোতে কোনভাবেই আল্লাহ্ তা'আলাকে খাটো করা তো নয়ই; বরং তাঁর ফয়সালা, তাঁর বাণী তথা তাঁর সুউচ্চতম ন্যায়দণ্ডকেই উচ্চকিত করার মাধ্যমে মূলত তাঁকেই উচ্চকিত করে দেখানো হয়েছে। যা الله শব্দ ও দাঁড়িপাল্লার দ্বারা প্রকাশ। এবংأقيموا الدين অর্থাৎ, "দ্বীন তথা ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা" নীচে রাখা হয়েছে যা মানুষের কাজ, আল্লাহ্ শব্দ এবং তাঁর তুলাদণ্ড উপরে রেখে বুঝানো হয়েছে যে, যে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা মানুষের দায়িত্ব, তা আল্লাহ্ তা'আলারই ন্যায়-বিধান, মহাসত্যের ফয়সালা ও সকল অন্যায়-অবিচার-যুলুমের অবসান। সুতরাং এই মনোগ্রাম বা এতে ব্যবহৃত শব্দ الله যা আল্লাহ্ তা'আলার ইসমে যাত, তাঁর উপরে অনেকটা আরবী ّ (তাশদীদ)-এর মত করে দাঁড়িপাল্লার ব্যবহার কোনক্রমেই আল্লাহ্ রাব্বুল ইয্যাত ওয়াল জালালের জন্য নূন্যতমও অবমাননাকর নয়। এক শ্রেণীর নিন্দুকের ছড়ানো বিভ্রান্তি যা মূলত তাদের ইসলাম বিরোধীতারই একটা পর্যায়ক্রমিক অংশ এই অপপ্রচারণা।

তাই, যারা তাদের উর্বর মস্তিষ্ক চষে এই বলে বেড়াচ্ছে যে, "জামায়াতের মনোগ্রামে আল্লাহ্ শব্দের উপরে দাঁড়ি পাল্লা রেখে আল্লাহ্ তা'আলাকে খাটো করা হয়েছে" তাদের এই হীন উদ্দেশ্য প্রণোদিত প্রচারণায় কেউ যেন বিভ্রান্ত হবেন না। সে লক্ষ্যেই সর্বসাধারণ ব্লগ পাঠকদের জন্য এই লেখা। উল্লেখ্য যে, এই লেখার সবটুকুই আমার নিজস্ব পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা; জামায়াতের নয়। ২২.০৯.২০০৭, মদীনা মুনাওয়ারা, সৌদি আরব।



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.