আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

=মসজিদুন্ নববীর ইফতারী

কাব্য-দিনের কথাঃ স্পর্শের আগুনে! অন্যদিগন্ত: www.fazleelahi.com

মদীনা মুনাওয়ারায় আমার ভাল লাগার শেষ নেই, মসজিদুন্ নববী, মসজিদ কূবা থেকে শুরু করে অন্যান্য শহরের চাইতে মদীনার মানুষদের ভাল ব্যবহার ও মসজিদুন্ নববীর ইফতারী পর্যন্ত। শেষটি নিয়েই বলি আজ। মসজিদুন্ নববীতে প্রথম ইফতারীর অভিজ্ঞতা খুবই অদ্ভুত লেগেছিল। সীমানার প্রায় বাইরে থেকেই বাচ্ছা থেকে বুড়ো পর্যন্ত অনেকেই দাঁড়িয়ে আছে আর মুসুল্লীদের হাত ধরে, কখনো জড়িয়ে ধরে, কখনো একটা হাতকে এমনভাবে পেঁচিয়ে বগলদাবা করে টেনে নিয়ে যাচ্ছে যেন ইহজীবনে আর ছাড়া হবে না। খুবই বিরক্ত হয়েছিলাম প্রথমে।

কেননা, একজন এ হাত ধরে টানছে তো আরেক জন অন্য হাত; কোন দিকে যাই? মাঝে মাঝে তো রাগ করে দু'জনের কাছ থেকেই হাত ছাড়িয়ে পালিয়ে বাঁচতাম। কিন্তু আমার এই রাগ আর এই ধারনা ভ্রান্ত প্রমাণিত হলো যখন প্রিয় নবীর হাদীস অধ্যয়ন করার সুযোগ পেলাম। প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: مَنْ فَطَّرَ صَائِمًا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِهِ غَيْرَ أَنَّهُ لَا يَنْقُصُ مِنْ أَجْرِ الصَّائِمِ شَيْئًا ((যে ব্যক্তি কোন সওম সাধনাকারীকে ইফতার করালো সে তার (সওম পালনকারীর) সমান অতিরিক্ত সওয়াব পেল অথচ সওম পালনকারীর সওয়াব থেকে একটুও কমবে না। )) [সুনানুত্ তিরমিযী: ৩/৩০১, সহীহ্] পৃথিবীর আর কোথাও এমন আতিথেয়তার দৃষ্টান্ত আছে বলে আমার জানা নাই। থাকবে নাই বা কেন, এ যে প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের শহর, মসজিদ, আদর্শভূমি! বরকত, বরকত ও কল্যাণে পরিপূর্ণ এই মদীনা মুনাওয়ারা! খুব বেশী কিছু খাবার নয়, একটা দই, এক টুকরো রুটি, কিছু খেজুর; এগুলোই মৌলক।

সাথে থাকছে আরবীয় কফি, দইয়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়ার জন্য কয়েক প্রকার ঝালবিহীন মশলার গুঁড়ো, কখনো চাও জুটে যায়, কখনো খেজুরে বানানো পিঠা –এই তো। অথচ কি সুন্দরভাবেই না ক্ষুধা মিটে যায় আর তৃষ্ণা মেটে পবিত্র জমজমের সুপেয় বরকতময় পানিতে। তদুপরি আতিথেয়তাতেই যেন মনটা পরিপূর্ণ হয়ে উপছে পড়তে চাইছে কিছু বাইরেও। আর তারই ফলশ্রুতিতে অনেক সময় মেহমানরাও মেজবানের সহযোগিতায় লেগে যেতে দেখা যায়। ইফতারীর আয়োজন তো চলতে থাকে আসরের পর থেকেই, তারপর থেকে তিলাওয়াতের ক্রমাগত মধুর সুর, দু'হাত তুলে দো'আ বিনিত ধ্বনি আর তরতাজা খোরমা খেজুরের শীতল খুশবুতে ভরে উঠে অন্তরাত্মা।

এভাবেই সওয়াব, বরকত ও শারিরিক এবং আত্মিক পাওনাতে আমি প্রতি বছরই যেন অপেক্ষায় থাকি পবিত্র রমাদানে মসজিদুন্ নববীর ইফতারীর। (বলা বাহুল্য যে, সওমের মৌলিক কল্যাণ তো রয়েছেই, এখানে শুধুমাত্র ইফতারীর পরিধিতেই গৌণ অর্থে "অপেক্ষা" বুঝানো হয়েছে। ) ২০.০৯.২০০৭, মদীনা মুনাওয়ারা, সৌদি আরব।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.