আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নীহা, একজন আধুনিক মেয়ে..(২)



তুমি আমার মা নও মা তুই শান্ত হ। কী হয়েছে তোর। সরি, আই হ্যাভ টেকেন এ ডিসিশন, আই উইল নেভার কল ইউ ম্যাম। তুমি আমার অভিভাবক। তোমার মেয়ে আমি।

এই পর্যন্ত। আমি তোমাকে মা বলে স্বীকার করি না। মানে কী যা তা বলছিস। তুই একমাত্র আপন। আমার একমাত্র সুখ।

এছাড়া আমার আর কে আছে? এখন নেই কিন্তু এক সময় ছিল। মানে? মানে এখন তোমার বয়স নেই তাই অনেকেই তোমার কাছে আসছে না। তোমার চেয়ে সুন্দরী বয়সকম সমাজকর্মীর অভাব নেই। তাই তুমি আমার দিকে ঝুকে পড়ছো তোমার বাকি জীবনের আশ্রয়স্থলকে নিরাপদ রাখতে চাইছো। তুই কার সঙ্গে কথা বলছিস তা কি মনে আছে।

আমি তোর মা। না তুমি আমার মা নও। মা দাবী করার মতো কোন কাজ তুমি করো নি। তোমাকে আজ আমার কথা শুনতেই হবে। আমার মনে কত ক্ষোভ জমা আছে, কত কষ্ট জমে আছে।

তুমি কোন দিন জানতে চাওনি। যখন জানতে চাইছো। আজ তোমাকে শুনতেই হবে। ছোট বেলার কথা মনে আছে। আমি সারাদিন কাঁদতাম।

রহিম কাকার মেয়ে আমার সাথে খেলতে চাইতো কতো বাহানা করতো। অথচ তুমি বাসায় আসলে আর কোন কান্না নেই। তোমার কোলে শুয়ে পড়তাম। সেই সময়টা তুমি দিনের পর দিন, রাতের পর রাত বাইরে কাটিয়েছো। তোমার দেশপ্রেম।

দেশের গরীব মানুষের জন্য তোমার সে কী ভালবাসা। যার জন্য তুমি মেয়ের ভালোবাসাকে বিসর্জন দিলে। তোমার কোলে মাথা রেখে যখন তোমার মেয়ে থাকার কথা তখন তুমি বাইরে কক্সবাজার, সিলেট, বরিশালে। মাতৃত্বকে দাবীয়ে রেখে নিজের শরীরকে তুলে দিয়েছো অন্যের হাতে। বিনিময় তোমার দেশের গরীব মানুষের জন্য সাহায্য পেয়েছো।

গুলশানে তোমার বাড়ি হয়েছে। নাম খ্যাতি, স্ট্যাটাস হয়েছে। কিন্তু তোমার মেয়ে যে মা হারা। বাবাকে সে পায়নি। মায়ের ব্যক্তি স্বাধীনতার মূল্য দিয়েছে তার মেয়ে।

নিজেকে বাবা শূন্য রেখে। বাবার আদর বঞ্চিত হয়ে। তুমি বাবার অনুপস্থিতি টের পাওনি। সেখানে অন্য কেউ এসে তোমার চাওয়া পুরণ করেছে। কিন্তু আমার শূণ্যতা তো পূরণ হয় নি।

আমি তো বলতে পারিনি, বাবা তুমি আমার জন্য রং পেন্সিল নিয়ে এসো। তোমাকে একটি ফুল একে দেব। আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বাবাও বলেনি, মা লী মা আমার। আমার রাগ ভাঙাতে কোন দিন বলেনি চল মা তোকে পৃথীবির সেরা জামাটাই কিনে দিবো। জীবন একটাই।

সেটাকে যেভাবে যত খুশি ভাবে ভোগ করা যায়। যেন কোন অংশ বাদ না পরে। তুমি আধুনিক মেয়ে। তোমার জীবন শুধু ঘরে বসে চার দেয়ালে বন্দি হয়ে কাটবে তা হয় না। জীবনের নানা রং তোমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে।

তাই তুমি তোমার ‘উপভোগ’ ‘স্টাটাস’ ‘সম্মৃদ্ধি’ টাকেই দেখেছ। এবং সেটাকে নিজের করে পেতে চেয়েছো। স্নেহ, মায়া মমতা, ভালবাসা, বন্ধন এগুলো তোমার কাছে অর্থহীন মনে হয়েছে। তুমি তো তোমার ‘উপভোগ’ ‘স্টাটাস’ ‘সম্মৃদ্ধি’ সব পেয়েছো। এখন আর কি চাও।

আমার কাছে তোমার কী সুখ থাকতে পারে? আমি জানি এটা তোমার সুখ না। এটা তোমার নির্ভরতা। দিন সবার এক যায় না। তোমার আগের জৌলুস নেই। শরীরের চাহিদাও নেই।

বয়সের কারনে নষ্টালজিক হচ্ছো। তাই আমার দিকে ঝুকে পড়া। আমাকে আকড়ে ধরে তুমি তোমার নির্ভরতাকে নিশ্চিত করতে চাইছো। তাই আমাকে নিয়ে তোমার উদ্বেগ। তোমার প্রশ্ন।

তাই আমাকে কিছু বলতে চাইছো। কিন্তু আমি জানি তুমি কী বলবে। যে মেয়ের বাবা নেই। মা অধিকাংশ সময় বাড়ির বাইরে রাত কাটায়। মেয়ে একা থাকে।

যাকে ভাল মন্দ শাসন করার কেউ নেই। সে মেয়ের কাছ থেকে তুমি কি আশা করতে পারো। আমার জীবনেও তো রোমাঞ্চ আছে। আছে প্রচুর জিজ্ঞাসা। প্রথম যে দিন আমার ‘মিন্স’ হয় সেদিনের কথা তোমাকে বুঝাতে পারবোনা।

কতটা ভয় পেয়েছি। তুমি তখন ইন্ডিয়াতে। বাসায় যারা কাজ করে তারা সবাই আমার বয়সে বড়। কাউকে কিছু বলতে পারিনি। সারা শরীরে জ্বর।

পুরো এক সপ্তাহ যে আমি কী ভাবে কাটিয়েছি, সে কী কষ্ট তা আমি বুঝেছি। কারো সাথে শেয়ার করতে পারিনি। রহিম কাকার মেয়ে ছাড়া। এক সময় নিজের ভিতরে একটা চাহিদা শুরু হয়। সে এক অন্য রকম অনুভুতি।

যা ভাষায় বোঝানো যায় না। শুধু অনুভব করা যায়। আমার অন্যান্য অনুভূতিতো ভোতা। সেখানে এই অনুভূতিটা প্রবল হয়ে দেখা দিলো। সে সময়ের একটি ঘটনা আমার ভিতরটাকে সম্পুর্ণ পাল্টে দিলো।

হয়তো তোমার মনে থাকার কথা। আমি গিয়েছিলাম রাঙামাটি। স্কুল থেকে ৫ দিনের শিক্ষা সফর। হঠাৎ আমাদের কিছু মেয়ে অসুস্থ হওয়ায় আমরা ২ দিন পরেই ফিরে এলাম। রাতে বাসায় ফিরতে সমস্যা হবে বিধায় আমারএকই ক্লাসের ১ বান্ধবী ও তার কাজিন আমাদের বাসায় চলে এলো।

তুমি বাসায় নেই। রাতে বন্ধু বান্দব মিলে আড্ডা দিলে যা হয়। এক সময় খেয়াল চাপলো ছবি দেখার। চলে গেলাম কম্পিউটারের কাছে। আমি আর আমর বন্ধু রীমন।

কম্পিউটার ওপেন করলাম। অটোপ্লেতে যে ছবিটি শুরু হলো তা দেখে তো আমি লজ্জায় নেই। থ্রি এক্স ছবি। সাথে সাথে বন্ধ করে দেই। আমার কম্পিউটারে থ্রী এক্স ছবি আসবে কোত্থেকে? রহিম কাকাকে জিজ্ঞেস করলাম আমার রুমে কেউ ঢুকেছে কিনা।

সে কিছুই জানে না। রহিম কাকার মেয়েকে জিজ্যেস করলাম। সে আমাকে দিল এক গোপন তথ্য। এই আমি প্রথম জানলাম আমি বাড়িতে না থাকলে মাঝে মাঝে মুহীন আঙ্কেল আমাদের বাড়িতে আসে। রাতে থাকে।

এর পর রীমনের সাথে আমার সখ্যতা গড়ে উঠে। এ বিষয়ে আলাপ হয় ফোনে প্রচুর কথা হয়। বিভিন্ন ধরনের এক্স ছবি নিয়ে আলোচনা হয়। এক পর্যায় নিজেদের লজ্জা ভেঙ্গে যায়। একদিন ও আমার বাসায় আসে।

১১টা দিকে আসে। একথা ও কথা বলি দুপুরে বাহির থেকে চাইনিজ নিয়ে আসি। খেয়ে দেয়ে দুজনে একসাথে গল্প শুরু করি। আবারো সেই এক্স আলোচনা। ও উত্তেজিত হয়।

আমাকে জড়িয়ে ধরে। আমার ঠোটে চুমু খায়। আমি প্রথম প্রথম না বলেছি। কিন্তু অনুভূতির জোর আমাকে পরাস্ত করে। আমিও এক সময় সুখ অনুভব করি।

.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.