আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরি দিন

ধরুন, সকালে দেখলেন রোদের ঝিলিক, দুপুরে হঠাৎ বৃষ্টি। নিজেকে বাঁচানোর কোনো পর্যাপ্ত প্র্রস্তুতি নেই। শুধু পোশাক বাঁচালেই তো হবে না, সঙ্গে থাকা ব্যাগটিও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। প্রতিদিনের দরকারি জিনিসপত্র ছাড়াও অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ কাগজও থাকে। তাই তো অনেক সময় বৃষ্টির কবল থেকে নিজেকে রক্ষার চেয়ে ব্যাগ বাঁচানোই বেশি জরুরি হয়ে পড়ে।


এ রকম মিশ্র আবহাওয়ায় পোশাক বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও সাবধান হওয়া দরকার। রোদ-বৃষ্টি থেকে নিজেকে বাঁচাতে চাই পূর্বপ্র্রস্তুতি।
এ সময় চিন্তাভাবনা করে পোশাক পরা উচিত। কেননা বৃষ্টির পাশাপাশি গরমও থাকে। সে কারণে সুতির কাপড় পরা ভালো।

এতে গরম কম লাগবে। হালকা আকাশি, হালকা গোলাপি, হালকা হলুদ রংয়ের পোশাক পরতে পারেন। তবে পাজামা বা সালোয়ারটা গাঢ় রংয়ের হলে ভালো হয়। কাদাপানি ছিটকে এলেও সহজে বোঝা যাবে না।
“মেয়েরা ফতুয়াও পরতে পারেন।

তবে জিনসের সঙ্গে না পরাই ভালো। জিনস ভিজলে ভারী হয়ে যায়। ফলে হাঁটাচলায় অসুবিধা হতে পারে। বেড়াতে যাওয়ার সময় ফতুয়া বা কাপ্রিও পরতে পারেন। তবে পোশাকটি যেন আরামদায়ক হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

অনেকে স্কার্ট পরতে পছন্দ করেন। হাল ফ্যাশনের স্কার্টগুলো লম্বাই হয়। সে ক্ষেত্রে রাস্তাঘাটে কাদাপানিতে এটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ ধরনের পোশাক এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। ” বললেন নগরদোলার হেড অব অপারেশনস আলী আফজাল।



চরকার স্বত্বাধিকারী জাভেদ কামাল মনে করেন, টি-শার্ট ও ফতুয়া এই মৌসুমে তরুণদের জন্য উপযুক্ত পোশাক। বৃষ্টির দিনে গাঢ় রংয়ের প্রাধান্য থাকা উচিত। বৃষ্টিতে ভিজলে শরীরের সঙ্গে পোশাক এঁটে থাকলেও খারাপ দেখাবে না। যে ধরনের প্যান্টে স্বচ্ছন্দ বোধ হয়, সেটাই পরাই ভালো। গ্যাবার্ডিন কাপড়ের প্যান্ট, ট্রাউজার পরা যেতে পারে।

জিনস এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। বৃষ্টির দিনে শুকানোর ঝামেলা থাকে।
জাভেদ কামাল আরও বলেন, “খেয়াল রাখবেন, পোশাকটির রং পাকা কি না। তা না হলে বৃষ্টির পানিতে ভিজে জামা থেকে রং উঠে গায়ে লেগে একাকার হয়ে যাবে। ”
টি-শার্ট, ফতুয়া, হাতাকাটা শার্ট অবশ্যই যেন সুতির হয়।

কাদা থেকে বাঁচতে প্যান্টের নিচটা একটু গুটিয়ে পরা উচিত।
আবহাওয়া যেমনই থাকুক, ঘর থেকে বের হওয়ার আগে ব্যাগটি দেখে নিন। পরামর্শ দিলেন ওমেন্স ওয়ার্ল্ডের রূপ বিশেষজ্ঞ কণা আলম।
তিনি আরও বলেন, “এ সময়ের প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক জিনিস নিতে ভুলবেন না। ব্যাগে অবশ্যই ছাতা কিংবা বর্ষাতি, ছোট তোয়ালে, চিরুনি ও প্লাস্টিকের বাড়তি ব্যাগ রাখবেন।

এ সময় পানিরোধক ব্যাগ ব্যবহার করাই ভালো। রেকসিন, প্যারাস্যুট কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে চামড়ার ব্যাগ ব্যবহার করা উচিত নয়। ”

সাজসজ্জা বিষয়ে কণা আলমের পরামর্শ হচ্ছে, “এ সময়ে সাজসজ্জায়ও সচেতন হতে হবে। মেয়েরা চুল পনিটেইল, ফ্রেঞ্চ বেণি কিংবা খোঁপা করতে পারেন।

চুল যেন খোলা না থাকে। বৃষ্টিতে চুল ভিজলে বাসায় ফিরে অবশ্যই ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে। এই সময়ে গরমও বেশ থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজপড়ুয়াদের মেকআপ করার প্রয়োজন নেই। সকালে ফেসওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিতে হবে।

ঘর থেকে বের হওয়ার আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। কাজল, আই-লাইনার, মাশকারা অবশ্যই পানিরোধক হতে হবে। সানস্ক্রিন দেওয়ার ১৫ মিনিট পরে প্রেসড পাউডার ব্যবহার করুন। আসল কথা, এ আবহাওয়াতে হালকা সাজ তরুণীদের জন্য মানানসই। যখনই বের হোন না কেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আলাদা প্লাস্টিকের ব্যাগে রেখে দিন।

ক্যালকুলেটর কিংবা মোবাইল ফোন রাখার জন্য পানিরোধক মোড়ক আগেই কিনে রাখুন। ”
রাস্তায় অনেক সময় ছাতা নিয়ে চলাচলে অসুবিধা হয়। সে ক্ষেত্রে রেইনকোট কিনে নিতে পারেন। এতে পুরো শরীর, এমনকি সঙ্গে থাকা ব্যাগটিও বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাবে। কাদা ছিটকে এসে পোশাক নষ্ট হওয়ার ভয়ও থাকে না।


মৌচাক মার্কেটের রহিম জেনারেল স্টোরের আবদুর রহিম বলেন, “পানিরোধক নানান মোড়ক পাওয়া যায়। এসব কিনলে বইখাতা, কাগজ, মোবাইল, ফোন ও ক্যালকুলেটর পানি থেকে বাঁচানো যায়। এছাড়া ছাতার কাপড়ে তৈরি রেইনকোট ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। ”
পায়ের স্যান্ডেলটা কী পরবেন, তা নিয়েও তো কম ঝক্কি পোহাতে হয় না। এ বিষয়ে হাজারিবাগের এসএ লেদার গুডসের মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “এ সময় প্লাস্টিক এবং পিভিসির পানিরোধক স্যান্ডেল পরা উচিত।

একদম চটি না পরে হালকা উঁচু স্যান্ডেলই ভালো। এতে করে কাদা-ময়লা পানি পায়ের ভেতরে ঢুকবে না। চামড়া, রেকসিনের তৈরি স্যান্ডেল, জুতো এড়িয়ে যাওয়া জরুরি। ছেলেরা প্লাস্টিকের জুতা পরতে পারেন। একটু খোলা স্যান্ডেল পরুন, যাতে বাতাস ঢুকতে পারে।


ব্যস, আপনার প্রস্তুতি শেষ। এবার নির্ভাবনায় বেরিয়ে পড়ুন।
 
প্রচ্ছদের ছবি : রানাক মার্টিন
অন্যান্য ছবি : ইমরান আলি ইমাম

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.