আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অর্থমন্ত্রীর দুই পুত্রের বাগান বাড়ী

সময়... অনাদি... হতে... অনন্তের... পথে...

দেশের আলোচিত বিগত জোট সরকারের ক্ষমতাধর সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের ২ পুত্র শফিউর রহমান ও কায়সার রহমানের নামে মৌলভীবাজারের মাইজদি ও নারায়নছড়া মৌজার ২‘শ একর এসএ রেকর্ডভুক্ত পাহাড়ী বনভুমির বন্দোবস্ত বাতিল করেছে ভুমি মন্ত্রনালয়। সরকারের ইতিবাচক এ নিদের্শের পর নারায়নছড়া ও মাইজদি পাহাড় এলাকার শত শত বাসিন্দারা এলাকায় মিষ্টি বিতরন করে উল্লাস প্রকাশ করছে। জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার নারায়নছড়া ও মাইজদি পাহাড়ের ২‘শ একর ভুমি তৎকালীন জোট সরকারের সময়ে ২০০২ সালের ৯ মার্চ সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের ২ পুত্র শফিউর রহমান ও কায়সার রহমানের নামে বন্দোবস্তের আবেদন করা হয় পিতার নাম গোপন করে । এসময় ১‘শ একর ভুমি শফিউর রহমান পরিচালিত শাহজালাল টি এষ্টেট ও ১‘শ একর কায়সার রহমান পরিচালিত শাহজালাল হ্যাচারী এন্ড ফিশারিজের নামে লিজের দলিল সম্পাদন করে দেওয়া হয়। তথ্য মতে জানা যায় ২০০২ সালের ডিসেম্বর মাসে শাহজালাল টি এষ্টেট ও ২০০৩ সালের এপ্রিল মাসে শাহজালাল হ্যাচারী এন্ড ফিশারিজের নামে ২‘শ একর ভুমি বরাদ্দ দেওয়া হয়।

যা অকৃষি জমির বরাদ্দের নীতিমালা কিংবা চা বাগান বরাদ্দের আওতায় পড়েনা। তৎকালীন জোট সরকারের মতাবলে তথ্য গোপন করে জমি লিজ দেওয়া হলেও তখন প্রভাবশালী মন্ত্রীদের কারনে কেউ তথ্য ফাঁস করতে সাহস করেনি। উক্ত ভুমিতে প্রায় ৫‘শ টি পরিবারের বসবাস থাকলেও তা বরাদ্দের সময় গোপন করে বনভুমি উল্লেখ করা হয়। ভুমি বরাদ্দ দেওয়া হলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের সহজে উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি। এসময় অর্থমন্ত্রী পুত্র সাবেক এমপি কারারুদ্ধ নাসের রহমান, ধর্মপুত্র শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপি‘র সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মহসিন মিয়া মধুর নেতৃত্বে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে শফিউর রহমান ও কায়সার রহমান মাইজদি পাহাড়ের বাসিন্দা উচ্ছেদের চেষ্টা চালায়।

এ সময় বিএনপি‘র ক্যাডার ও পুলিশের সাথে পাহাড়ের বাসিন্দাদের রক্তয়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এ সংঘর্ষে কম পক্ষে আহত হয় শতাধিক বাসিন্দা। বিনষ্ট করা হয় পাহাড়ের ফসল আনারস, লেবু সহ প্রায় ২০ লাখ টাকার সম্পদ। এ ঘটনায় পাহাড়ী বাসিন্দাদের পক্ষে মৃত-আঃ কদ্দুছ এর পুত্র মোঃ ছমির মিয়া বাদী হয়ে সাবেক জোট সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের ৪ পুত্রসহ ৮০ জনের বিরোদ্ধে ৫০০ নিরিহ বাসিন্দাদের মারপিট, ভুমি দখল ও লুটপাটের অভিযোগ এনে শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৩৮/৮৬।

ধারা- ১৪৮/ ৪৪৭/ ৩২৩/ ৪২৭/ ৫০৬/ ১০৯ দঃ বিঃ। এরই প্রেক্ষিতে ভুমি মন্ত্রনালয় দীর্ঘদিন পর গত ১৩ আগষ্ট গুরুতর অপরাধ দমন সংক্রান্ত টাস্কফোর্স সরকারের একজন উপদেষ্টার সুপারিশ করা দরখাস্ত সহ ওই জমির বন্দোবস্তের যাবতীয় নথিপত্র জব্দ করে। ১৪ আগষ্ট বরাদ্দ বাতিলের নথি সচিব পর্যায়ে অনুমোদন করা হয়। কিন্তু উপদেষ্টার কাছে নথি পাঠানোর মুহুর্তে মৌলভীবাজার জেলা প্রসাশকের কাছ থেকে নতুন করে প্রতিবেদন নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এদিকে সচিব মুসলেহ উদ্দিন জমির বন্দোবস্ত বাতিল করতে দ্রুত নথিপত্র উপস্থাপনের নির্দেশ দিলে উপদেষ্টা ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেন নথি অনুমোদন করেন।

মৌলভীবাজার জেলা প্রসাশন সুত্রে জানানো হয়, জমি বরাদ্দ দেওয়ার সময় জেলা প্রসাশনের প্রতিবেদনে কিছু তথ্য গোপন করা হয়। তথ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে ওই জমিতে প্রায় ৩‘শ পরিবারের বসবাস, ধান চাষাবাদ হয়, রয়েছে মসজিদ ও মাদ্রাসা। তবে জমিটি বনাঞ্চল হিসাবে রেকর্ডভুক্ত। অকৃষি জমির বরাদ্দের নীতিমালা কিংবা চা বাগান বরাদ্দের আওতায় পড়েনা। এসএ খতিয়ানের বনাঞ্চল ভুমি পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয়ের হওয়ায় ভুমি মন্ত্রনালয়ের বরাদ্দ দেওয়ার এক্তিয়ার নেই।

এটি অবৈধ বরাদ্দ হিসাবে চিহিßত করে বরাদ্দ বাতিল করা হয়। ভুমি মন্ত্রনালয় থেকে এ আদেশ জারি করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়। ছবির ক্যাপশনঃ সাবেক অর্থমন্ত্রীর ২ পুত্রের নামে বরাদ্দ দেওয়া ভুমির একাংশ। দৈনিক আজকের কাগজ,১৯ আগষ্ট.২০০৭

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.