ভস্ম হই। মৃত্যুর চুমু আমার কপোল ছুঁয়ে যায়। বেঁচে উঠি আবার। নতুন দিনের আশায়। বেঁচে উঠি বারবার।
(আগের পর্বের পর...)
শুনলাম পঞ্চাশ টাকার মত দিলে ক্লাশ না করার দোষ মউকুফ হয়ে যায়। তার উপর আড্ডা মারার নেশা, কবিতা নিয়ে দিকদারী, সিগারেট। এসবের পাল্লায় পড়ে আস্তে আস্তে আমরা ক্লাশ করা ছেড়ে দিলাম।
গল্প উপন্যাস পড়তাম আগেই। অল্প বিস্তর কবিতাও পড়তাম।
এর মধ্যে জানা গেল প্রলয় আবৃত্তি করে। প্রলয়ের দারুন ভরাট কণ্ঠে আবৃতি শুনতাম আমরা বিভিন্ন কবিতার। তার উপর আমরা দুজনেই কবিতা লিখি। তাই প্রচুর কবিতা পড়া হতে লাগল। আস্তে আস্তে আমরা আধুনিক, উত্তর আধুনিক ছাড়িয়ে নাগরিক কবিতার দিকে আগাতে থাকি।
সঙ্গে তখন শান্তিনিকেতনীয় কবি কবি ভাবের সাইড ব্যাগ নিয়ে ঘুরতাম।
প্রলয়ের কবিতা গুলো শক্ত হোত। তাই তার পাঠক পাওয়া যেত না। আমি আবার আগ্রহ করে সেগুলো পড়তাম। পড়ে বিজ্ঞের মতো মন্তব্য করতাম।
তাই প্রলয়ের সদ্যপ্রসুত কবিতাগুলোর ধাইমা হলাম আমি। প্রসব করতে না করতে আমাকে পড়াত।
এর মাঝে কিভাবে যেন মাথায় ভুত চাপল একটা সংগঠন করা যাক। দুষ্টু বুদ্ধিটা আমার মাথা থেকেই এসেছিল। জয় আর প্রলয়ও রাজি হয়ে গেল।
আরেকটা ব্যাপার উল্লেখ করা হয়নি জয়ের বাবা ছিল বাঙলা কলেজের প্রফেসর। তাই আমাদের ধারনা ছিল যে সাংগঠিনক ব্যাপারে কলেজের সার্পোট পাওয়া যাবে।
এভাবে পাগলামী করে শুরু হল আমাদের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সৌকারু’। ‘সুন্দর কাজ করতে চায় যারা’ এরকম একটা মানে দাঁড় করিয়ে অভিধানের বাইরে থেকে শব্দ নিয়ে শুরু হল আমাদের সংগঠন। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট করা হল আমাকে, অবশ্যও আমারো আপত্তি ছিল না।
সৌকারু নিয়ে আমাদের উন্মত্ততা কম ছিল না। শুরু হল সদস্য সংগ্রহ। যতদুর মনে পড়ে সস্তায় ফরম ছাড়ার কারনেই হোক আর সংগঠনের আর্কষনেই হোক প্রায় শ-খানেক ফরম বিক্রী হল। মোটামুটি কার্যক্রম শুরু হল আমাদের। প্রথমে অধ্যক্ষা হাজেরা নজরুল (নাম যতদূর মনে পড়ে এটাই ছিল) ম্যাডামের সাথে আলাপ করে ঠিক করা হল আমাদের সাথে বানিজ্য বিভাগের একজন ম্যাডাম ইন্টারভিউ নিতে সাহায্য করবে।
যাদের ফরম বিক্রী করা হয়েছিল তাদে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হল। সিম্পল কে কি জানে এটা ইভালুয়েট করাই ছিল উদ্দেশ্য। সেখানে বেশ কিছু ভালো পারফর্মার পেলাম আমরা। তারপর শুরু হল বিপুল উৎসাহে কাজকর্ম।
শেষতক আমরা সৌকারু থেকে দেয়াল পত্রিকা, বেশ কয়েকটি আবৃত্তি অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিলাম।
একবছরের টাইম স্প্যানে এটাকে ভাল সাকসেসই বলতে হবে। সৌকারু থেকে পরে বেরিয়ে এসেছিল বেশ কিছু ভাল ভাল পারফর্মার, যারা আবৃত্তি, নাটক এসবে জড়িত হয়েছিল পরবর্তীতে।
(পরের পর্বে থাকছে শেষাংশ)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।