আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অ্যাপেল কোম্পানির রহস্য উম্মোচন

ম্যাঅ্যাও. একটি নিষ্পাপ শব্দ
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ডগুলোর একটি অ্যাপেল। ১৫৬ বিলিয়ন ডলারের মূলধনের বিশাল টেকসাম্রাজ্য তৈরির পিছনে আছে অনেক জুলুম আর ছল-চাতুরি। স্বর্ণমোড়কে থাকা দুর্গন্ধময় গোবরের কিছু পর্দাফাস করা হল ১) শ্রমমূল্য কমানোর জন্য তারা চীনে মোবাইল উৎপাদন করে। যদিও তাদের ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রাংশগুলো অনেক দামি তবুও এই কম শ্রমমূল্য তাদের পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখে। তারা দিন প্রতি ১২ ঘণ্টার কাজের বিনিময় প্রায় ২২ ডলার দিয়ে থাকে।

২) তারা সাধারনত নিম্নমানের ইলেক্ট্রনিক পণ্য উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠানের দিকে চোখ রাখে। দীর্ঘদিন পর্যন্ত ফক্সকন এর সাথে তাদের চুক্তি থাকলেও পরে ফক্সকন সরকারিভাবে শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর আদেশ পাওয়ায় অ্যাপেল তাদের মুখ ফিরিয়ে নেয়। শুধু তাই নয়, শ্রমিকদের আরও কম বেতন দেয় এমন চীনা প্রতিষ্ঠান “পেগাট্রন” এর সাথে চুক্তিতে আসে। ৩) পরিবেশদূষণে অ্যাপেল কোম্পানির জুড়ি নেই। ২০১১ সালে তারা প্রায় কার্বন নিঃসরণ ২৩.১ মেট্রিকটন কার্বন নিঃসরণ করার জন্য দায়ি।

পরবর্তীতে পরিবেশ সুরক্ষার কথা বললেও ২০১২ সালে তাদের কার্বন নিঃসরণ আরও ৩৪% বৃদ্ধি পায়। ৪) আই, এইচ, এস এর রিপোর্ট অনুযায়ী, একটি আইফোন তৈরি করতে ২০৭ ডলার খরচ পরে। আর বিক্রি করে ৫৮০ ডলারে। এই হিসাব মডেলভেদে ভিন্ন হলেও সবমিলিয়ে অ্যাপেল ৪৮-৫৮ ভাগ পণ্য বিক্রি না করেই তাদের মুনাফা গোনা শুরু করে। আর সামগ্রিক কোম্পানির খরচের দিকে দেখলে সেটা ৩০ ভাগে নেমে আসে।

এক উগ্র পুজিবাদি মনোভাব নিয়ে চলছে অ্যাপেল। ৫) ২০০৭ সালে অ্যাপেল আইফোন বাজারে আনে যা ছিল মোবাইল প্রযুক্তির জন্য একটা বিপ্লব। তবে স্টিভ জবের মৃত্যুর পর থেকে অ্যাপেল তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা অনেকটা হারিয়েছে। ৬) আইফোন ও অ্যাপেল এর অন্যান্য প্রোডাক্ট এ সমোলচিত কল্টান নামক ধাতু ব্যবহার করা হয়। কল্টার তাপপ্রতিরোধক ও আদর্শ বিদ্যুৎ পরিবাহী।

কিন্তু এই ধাতু অনেক দুর্লভ ও দামি। এই ধাতুর জন্য কঙ্গতে যুদ্ধ পর্যন্ত হয় আর ১৯৯৮ সালে প্রায় ৫-৭ মিলিয়ন মানুষ যুদ্ধে মারা যায়। ৭) অ্যাপেল কোম্পানি তাদের গ্রাহকদের তথ্য আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকের কাছে পাচার করে এমন অভিযোগও আছে। গারডিয়ান বেশ কিছু সময় আগে একটা ফাস হওয়া ডকুমেন্ট প্রচার করে তাতে লেখা ছিল প্রিজম নামের একটি গোপন প্রোগ্রাম এর কথা। অ্যাপেল তাদের ইউজারদের কল, টেক্সট, ব্রাউজ করা সাইট, লোকেশন সব তথ্য বিলিয়ন ডলারের বিনিময় এটি অ্যান্ড টি, ভেরিজন, স্পিরিট ইত্যাদি কোম্পানির কাছে পাচার করে।

৮) আইটিউন আসার পর সঙ্গীত রেকর্ড এর বিক্রি প্রায় ৫০ ভাগ কমে যায়। বর্ডার, টাওয়ার এর মতো রেকর্ডিং ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ হয়ে যায়, তার সাথে হাজার হাজার ব্যাক্তি মালিকানায় থাকা ক্যাসেট বিতান বন্ধ করে দিতে হয়। আইটিউন বাধ্য করে শিল্পীদের তাদের গানগুলোর অ্যালবাম আইটিউন এ বিক্রি করতে। যেখানে প্রতিটি অ্যালবাম বিক্রির ৩০ ভাগ টাকা অ্যাপেল গ্রহণ করবে, ৬০ ভাগ মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি আর মাত্র ১০ ভাগ পাবে শিল্পী। ৯) আইফোন এ আরেকটি চরম জিনিস হল তারা কখনো ইউজার এর পিছু ছাড়ে না।

অর্থাৎ আইফোন এর ভিতর ট্র্যাক করার এমন প্রযুক্তি আছে যা মোবাইল বন্ধ থাকুক, নষ্ট হয়ে যাক ঠিকই খুজে পাবে। বর্তমানে আইফোন এ ম৭ নামের একটি চিপ ব্যবহার করা হয় যার মাধ্যমে ইউজার এর তাৎক্ষনিক অবস্থান জানা যাবে তার সাথে গতিবিধি ও নির্দিষ্ট সময়পর সম্ভাব্য অবস্থানও জানতে পারবে অ্যাপেল। ১০) অ্যাপেল এর যখন খারাপ অবস্থা চলছিল তখন অ্যাপেল তাদের দাতব্য কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেয়। তারা জানায় কোম্পানির অবস্থা ভাল হলে আবার তারা শুরু করলে তবে টিম কুক সিইও হবার আগ পর্যন্ত এমনটা হয়নি। গতবছর অ্যাপেল ১০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে।

শুনতে খুব ভাল লাগলেও এটা আসলে তাদের মুনাফার হিসেবে কিছুই না। এমনকি হেটাওয়ে স্টিল কোম্পানির মতো প্রতিষ্ঠান যাদের সিএসআর কর্মকাণ্ড তুলনামুলক কম প্রয়োজন তারাও অ্যাপেল থেকে ১৫ গুন বেশি দাতব্য কাজের সাথে জড়িত। ১১) অ্যাপেল তাদের অধিকাংশ তরল সম্পত্তি একটি আইরিশ সাবসিডিরির কাছে রাখে ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার জন্য। যদিও টম কুক তার বক্তব্যে এমন ভাব দেখায় যে অ্যাপেলের দেশপ্রেম উতলায় পড়ছে। সাবাশ টম কুক।

১২) অ্যাপেল যে স্বার্থপর এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তারা সফটওয়্যার, অ্যাপ বানায় নিজেদের ব্যবহৃত পণ্যের জন্য। এমনকি তাদের কিছু কিছু সেবা গুগল থেকে নিম্নমানের হলেও ইউজাররা বাধ্য শুধুমাত্র তাদের সেবা গ্রহণ করতে। অ্যাপেল এর ম্যাপ এর মধ্যে অন্যতম।
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.