আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডুবাই ও সারজাহ শহরে

কিছু দেশ দেখার সুযোগ হয়েছে এই জীবনে। ভ্রমণ আমার ভাল লাগে্‌ তাই সবার মাঝে তা জানাতে চাই। সবার উপরে ভালোবাসি বাংলাদেশ । ধন্যবাদ ডুবাই - ইউনাইটেড আরব আমিরাত লন্ডন থেকে ফেরার পথে ইউনাইটেড আরব আমিরাতের এই রাজ্যতে আমার প্রথম যাওয়ার সুযোগ হয় ১৯৯৩ সালে। বাংলাদেশের তুলনায় ডুবাই এর বিমান বন্দর বেশ উন্নত ।

লন্ডন থেকেই ডুবাই এর ভিসা সংগ্রহ করেছি, যদিও দেশ থেকে নিয়ে যাওয়াই নিয়ম । ইমিগ্রেশন থেকে বের হতে তেমন সমস্যা হয়নি। এয়ার পোর্ট থেকে বিমান এর গাড়ীতে করে ডুবাই শহরে নিয়ে এলো । পনের বিশ মিনিট এর পথ, তখন সকাল হয় হয়। বাংলাদেশ বিমান ডেরা ডুবাই এলাকার হোটেল ফোয়েনসিয়াতে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল ।

দুই তারা হোটেল , রুম গুলো মধ্যম মানের। ডুবাই টাওয়ার এর কাছে এর অবস্থান। রুমে জিনিষপত্র রেখে ঘুম দিলাম। ৯টার দিকে উঠে নাস্তা করলাম। হোটেলেই ব্যবস্থা আছে ।

তারপর ফ্রেস হয়ে ডুবাই শহর দেখতে বের হলাম । ডেরা ডুবাইর আশে পাশেই অনেক বাংলাদেশীর বসবাস। দোকান পাটে অনেকে চাকুরী করে । ডুবাই শহরের মধ্যেকার রাস্তাগুলো তেমন চওড়া না। তবে গাড়ীর সংখ্যা প্রচুর, আস্তে আস্তে গাড়ী চলে।

মানুষ পারাপারে অগ্রাধিকার দেয় গাড়ী চালকেরা । সূর্যের তাপ বেশ। ঘেমে যাওয়ার অবস্থা, অনেক লোকজন কেনাকাটা ও ঘোরাফেরা করছে মার্কেট এলাকায়। ডিউটি বা ট্যাক্স কম বলে এখানে সব ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বাণিজ্য করে বেশ শান্তিতে। ডুবাইতে তখন অনেক উন্নয়নের কাজ চলছিল ।

বিশাল ভবন নির্মাণ কাজ তখন শুরু হয়েছিল। শহরের কেন্দ্রেই সুন্দর পার্ক বানানো হয়েছে । বসার জায়গা, ফোয়ারা, ফুলগাছ সবকিছুই সুন্দর ভাবে সাজানো । ঘাসও ফুল গাছে সজীবতা ধরে রাখার জন্য কৃত্রিম ভাবে পানি দেয়া হচ্ছে । সদিচ্ছা ও চেষ্টা থাকলে মরুভূমির বুকেও সবুজের চাষ করা যায় আর আমাদের সবুজ বাংলাদেশ অবহেলায় মরুভূমি হচ্ছে ।

১৯৯৫ সালে আবার ডুবাই এয়ার পোর্টে নেমে সারজাহতে গিয়েছিলাম । সারজাহ কন্টিনেন্টালে তখন বাংলাদেশ বিমানের ক্ররা থাকত । বেশ সুন্দর হোটেল। বিদেশী পর্যটকে ভরপুর, ডুবাই এয়ার পোর্ট থেকে ২০ দিরহাম দিয়ে সারজাহ যাওয়া যায় টেক্সিতে। সারজাহ শহর তখন লবনাক্ত জলাভূমির মত ।

বালি ফেলা হচ্ছে সেইসব জলমগ্ন জায়গাতে। নতুন শহরের পত্তনের জন্য । ট্রাফিক এমন ভাবে করা হচ্ছে যেন এক রাস্তা দিয়ে এসে অন্য রাস্তা দিয়ে যাওয়া যায়। সব ওয়ানওয়ে রাস্তা । সারজাহ ষ্টেডিয়াম তখনও ক্রিকেটের জন্য বিখ্যাত ছিল ।

কিছু ব্রান্ডের খেলনা ও কাপড় চোপড় এর দোকান ও ছিল সেখানে। তবে এখনকার মত এত জমজমাট হয়নি। সারজাহ কন্টিনেন্টাল এর নিজস্ব বিচ এলাকা আছে । সেখানে প্রখর রৌদ্র উপেক্ষা করে লোকজন সানবাথ করছে । রোদছাতা ও চেয়ার লাগানো আছে হোটেল গেষ্টদের জন্য।

বিকাল বেলা তাপ একটু কমে এলে আস্তে আস্তে বের হলাম আশপাশ ঘুরে দেখার জন্য । রাতে ফিরতি ফ্লাইট তাই কিছুক্ষণ ঘুরে ফিরে এলাম হোটেলে । মোটামুটি তিনবার আরব আমিরাতে আসার সুবাদে এদেশের উন্নতির দৃশ্য নিজ চোখে দেখে ভাল লাগছিল । সবকিছু সাজানো ও পরিকল্পনা মোতাবেক বানানো । একটা জাতি এভাবেই উন্নতি লাভ করতে পারে ।

ডুবাইতে পর্যটক হিসেবে না বলে নিজেকে ক্রেতা বলতেই ভাল লাগছে, কারণ কেনাকাটার জন্য এত ভাল জায়গা আমি আর দেখিনি । সবকিছু হাতের নাগালের মধ্যে । দামও তেমন বেশী না । ভাল দোকান থেকে কিনলে জিনিষটাও উন্নত পাওয়া যায়। ডুবাই এয়ার পোর্টের ডিউটি ফ্রি দোকান গুলোর কথা সর্বজন বিদিত ।

১৯৯৩ সালের ডুবাই এয়ার পোর্ট আজকের মত এত আলোঝলমলে না হলেও বেশ চাকচিক্যপূর্ণ ছিল । চারিদিকেই আলোর বন্যা । শেষরাতের দিকে হিথরো থেকে আমাদের প্লেন ডুবাইতে ল্যান্ড করল । ডুবাই শহর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য বিখ্যাত অনেক দোকান ও সুক বা বাজার আছে । দেশে যাব তাই সবার জন্য কিছু না কিছু গিফ্ট কিনতে হবে।

হোটেলেও বাংগালী পেলাম বাইরেও অনেক দেশী লোকজন আছে । আমাদের জিজ্ঞাসা করল কি ধরনের জিনিষ কিনতে চাই, আমি বললাম সবার হাতে কিছু দেয়ার মত জিনিষ হলেই চলবে । বলল চট্টগ্রামের কবির এর দোকানে চলে যান সব পাবেন । হোটেল থেকে বেরিয়ে হাঁটা শুরু করলাম । রোদের বেশ তাপ ।

নতুন নতুন বিল্ডিং নির্মান এর কাজ চলছে । এক তলা ছোট ছোট দোকান দিয়ে এলাকা ভর্তি কিছু কিছু দোকন সাধারন মানের । রাস্তার কোনে কবীর এর দোকান বা ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর পেয়ে গেলাম । এখন বাংলাদেশেও যে ধরনের ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর দেখা যায় এটা তার তুলনায় মুদি দোকানই বলা চলে । অজস্র জিনিষপত্রে ঠাসা তবে তেমন সাজানো না এবং নয়ানাভিরামতো নয়ই ।

এশিয়ার লোকদের জন্য মূলত এই সব দোকান । আমি ঘুরে ঘুরে আমার প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সংগ্রহ করলাম । দাম যাই হোক না কেন ডিসকাউন্ট পেলাম ও কিনে তৃপ্তি লাগল। বাইরে রোদ বেশ কড়া। দেখা বা চিত্তবিনোদন এই কড়া রোদে সম্ভব ও নয় ।

তাই ঠিক করলাম যা যা কিনতে চাই তা আগে কিনে ফেলি পরে বিকেলে রোদ পড়লে আশে পাশের এলাকা ঘুরে দেখা যাবে। বিকেলে হোটেল থেকে বের হয়ে বাজার এলাকায় এসে দেখলাম ঘড়ির স্তুপ । আমাদের দেশে কাপড় চোপড় যে রকম স্তুপ করে বিক্রি করে সে রকম করে হাজার হাজার ঘড়ি সাজিয়ে রেখেছে । বাংলাদেশী, ইন্ডিয়ান অথবা পাকিস্তানীরা এগুলো বিক্রি করছে। দাম তেমন বেশী না তবে গ্যারান্টি আছে কিনা জানি না বিধায় ভাল দোকানে গেলাম ।

সেখানে নিজের জন্য ও অন্যান্য আত্মীয়দের জন্য সুন্দর দেখতে কিছু ঘড়ি কিনলাম । দোকানদার বেশ ভাল এবং ঘড়িগুলোও চমৎকার। পকেটের টাকাও শেষের দিকে তবে মূল জিনিষ কেনা হয়নি এখনো । ডুবাইতে স¦র্ণের জিনিষও তখন বাংলাদেশের চেয়ে কম দামে ও ভাল ভাল নকসার অলংকার পাওয়া যেত। এখন (২০০৫) যে এলাকায় গোল্ড সুক আছে সেই এলাকাতেই স¦র্ণের দোকান গুলো ছিল, তবে তা ছিল বেড়ার মত পার্টিশান দেয়া দোকান ।

এখনকার মত বিশাল তোরণ এর ভিতর এসি লাগানো সোনার দোকান তখন ছিলনা । গরমে ঘামতে ঘামতে লোকজন স¦র্ণের জিনিষ কিনত । প্রথমে দুই তিনটা দোকান ঘুরে স¦র্ণের গ্রাম ও ভরির দাম যাচাই করে নিলাম । ১১.৬ গ্রামে এক ভরি, দাম মোটামুটি দেখলাম সব জায়গাতেই এক । কয়েকটা চেইন, চুড়ি ও কানের আইটেম কিনলাম ।

হাল্কা কিন্তু দেখতে সুন্দর । মোটামুটি ঘেমে গেলাম । হেটে হাটেলে এলাম, জিনিষপত্র গুছিয়ে একটু রেষ্ট নিলাম । লাঞ্চ করে আবার বের হলাম । তখন সূর্যের তাপ একটু পড়ন্ত ।

হেঁটে হেঁটে অন্যান্য দোকান পাটও দেখলাম । বিভিন্ন দেশ থেকে লোকজন জিনিষপত্র কিনে প্লেন বোঝাই করে নিজেদের দেশে নিয়ে যায় । ব্যবসার জন্যই এদেশ টিকে আছে আর আছে নিরাপত্তা । সন্ধ্যার পর আমাদের বিমান । ট্যাক্সি নিয়ে এয়ার পোর্টে চলে এলাম , সময় মতই বিমান চলে এলো ।

প্রয়োজনীয় ফর্মালিটি শেষ করে বোর্ডিং ব্রিজ দিয়ে বিমানে আরোহন করলাম । ২০০৫ সালে আইভরি কোষ্টের আবিদজান শহর থেকে দেশে ফেরার পথে নাইরোবি ও ডুবাই শহরে ট্রানজিট যাত্রী হিসেবে থাকতে হবে । ডুবাই পর্যন্ত কেনিয়া এয়ার এরপর বাংলাদেশ বিমানে করে ঢাকা আসার টিকেট আছে আমাদের সাথে। ডুবাইতে নামার পর ট্রানজিট যাত্রী হিসেবে প্রয়োজনীয় ফর্মালিটি শেষ করলাম। আমাদের প্রায় ২০ ঘন্টার মত যাত্রা বিরতী ডুবাইতে।

ভিসা নেই কাজেই বাইরে যেতে পারব কিনা ভাবছিলাম। হঠাৎ ডিউটি ফ্রি শপের কাছে আমাদের সাথে কেনিয়া এয়ারলাইন্সের একজন কর্মকর্তার সাথে দেখা হলো । ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম । আমরা ভিসা পাওয়া যাবে কিনা এব্যাপারে কথা বললাম । প্রথম ভেবেছিলাম ল্যান্ড মার্ক হোটেল কর্তৃপক্ষ ভিসার ব্যবস্থা করবে ওরা তা করেনি ।

আবিদজান থেকে রওয়ানা হওয়ার আগে ই মেইলে হোটেল বুকিং করে হোটেল কর্তৃপক্ষকে ভিসার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করেছিলাম । তা করা হয়নি দেখলাম । আমিরাতস এর বিমানে আসলে এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষ ট্রানজিট ভিসা দিয়ে দেয় । আমরা বাইরে বের হবার রাস্তার পাশে চেয়ারে বসে অপেক্ষা করছিলাম । কেনিয়া এয়ারওয়েজ এর প্রতিনিধি ভিসা প্রসেসিং কাউন্টারে কথা বলার পর আমাদের পাসপোর্ট নিল ।

আমরা অপেক্ষা করছিলাম । দেখি কি হয় । সেখানে বাংলাদেশী এক ইঞ্জিনিয়ারের সাথে দেখা হল । এমিরাতস এ এসেছে ওরাই ভিসা দিচ্ছে । আমরা অপেক্ষা করছি ভিসার জন্য।

এমন সময় প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র পেলাম । ভিসার জন্য লাইনে দাড়ালাম । তেমন কিছু জিজ্ঞাসা করেনি কাগজ পত্র দেখে ট্রানজিট ভিসা দিল । কোন ফি নিল না ভিসার জন্য। বাইরে তখন রাত তিনটা ত্রিশ মিনিট ।

মানুষ গাড়ী তেমন নেই । এয়ারপোর্ট লিমুসিন টেক্সিতে লাগেজ উঠালাম । বললাম ল্যান্ড মার্ক হোটেলে যাব । আরব দেশী ড্রাইভার । ৪ টার দিক ল্যান্ড মার্ক হোটেল এলাম ।

আমাদের বুকিং করা ছিল । ৭ তলাতে আমাদের রুম । বেশ সুন্দর রুম ৩ বেড ,টয়লেট অত্যন্ত উন্নতমানের । সাবান, নতুন তোয়ালে ও অন্যান্য আনুষংগিক জিনিষ পত্র সবই আছে । গোসল করে ফজরের নামাজ পড়লাম ।

তারপর ঘুম দিলাম । হোটেলের ফ্রিজের পানি কিনলাম ও খেলাম । ঘুম থেকে উঠতে উঠতে ৯ টা বেজে গেল । হোটেল ভাড়ার সাথে নাস্তাও আছে । রাতে জেনে নিয়েছিলাম নাস্তার সময় ১০ টা পর্যন্ত ।

সেভ করে রেডি হয়ে নাস্তা খেতে নীচে ডাইনিং রুমে এলাম । বিউটিফুল ডাইনিং রুম । সব বোর্ডাররা খেতে এসেছে। ব্রেড,ডিম,বিন,জুস,ফল ইত্যাদি সহযোগে হেভী নাস্তা হলো । রুমে এসে প্রস্তুতি নিয়ে শহর দেখতে বের হলাম ।

ডিজিটাল ক্যামেরা কিনতে গেলাম । ২/৩ টা অরিজিনাল কোম্পানীর শোরুম আশপাশেই ছিল। ডিউটি ফ্রি শপে দাম বাইরের চেয়ে একটু বেশী । এরপর আশপাশের এলাকার ছবি তুললাম । দেশের সবার জন্য গিফট কিনতে ঘড়ির দোকানে ঢুকলাম।

ছয়টা লেডিস ঘড়ি কিনলাম , আমার জন্যও একটা ভাল মডেলের ক্যাসিও ঘড়ি কিনলাম । তারপর গোল্ড মার্কেট এ গেলাম । ১৯৯৩ সালে এগুলোতে গরমের কারনে থাকা যেত না তখন ছোট ছোট দোকানে সোনার অলংকার বিক্রি হতো । নতুন ভাবে সাজানো হয়েছে এই মার্কেট । নতুন বিল্ডিং এসি লাগানো।

দারুন আরাম কেনাকাটা করে । কিছু সোনার চেইন ও খেলনা কিনলাম গোল্ড সুক এর আশপাশ থেকে । এখন শহর দেখা । খবর নিয়ে নিলাম বাস ষ্ট্যান্ড ও লোকাল ট্রান্সপোর্ট সম্পর্কে । ডুবাই থেকে সারজাহ যাওয়া যায় বাসে করে ভাড়া লাগে ৫ দেরহাম ।

ঘড়ির দোকানের মালিকের ছেলে ইন্ডিয়ান মুসলিম, বেশ ভাল । কথা বলে মজা পেলাম । সে আইডিয়া দিল কিভাবে এয়ারপোর্টে যেতে হবে । এয়ারপোর্টও বাসে যাওয়া যায় । দুপুর বেলা লাঞ্চ খেতে গেলাম বাংলাদেশী হোটেলে ।

পাকিস্তানী দেখতে একটা লোককে জিজ্ঞাসা করলাম বাংলাদেশী হোটেল কোথায়, সে দেখিয়ে দিল । বেশ মজা করে সব্জী,মুরগী , ভাত খেলাম । সাথে চা। অনেক অল্প খরচ । হোটেলে এসে জিনিষ পত্র গোছালাম তারপর নীচে চেক আউট এর জন্য গেলাম।

৭০ ডলার লাগল সব মিলিয়ে । জনপ্রতি হোটেল খরচ পঁয়ত্রিশ ডলার, বেশ ভালই । হোটেলের নীচে লাগেজগুলো জমা রাখলাম । এখানে সিষ্টেমে আছে । আমরা সারজাহ যাওয়ার জন্য বেরিয়ে পড়লাম।

ছোট মাইক্রোবাস ৪০ মিনিটের মত লাগে । আমাদের পেছনে ২/৩ জন বাংলাদেশী বেশ কথা বলছিল । এই সারজাহ শহরে ৯৫ সালে এসেছিলাম । সারজাহ কন্টিনেন্টাল হোটেলে ছিলাম তখন। এখন সারজাহ চেনার কোন উপায় নেই ।

অজস্র বাড়ী ঘর আকাশ ছুয়েছে । বহুতলা বিল্ডিং সুন্দর সুন্দর মার্কেট ও অফিস কমপ্লেক্স এমন ভাবে বানানো হয়েছে যে সকালে সূর্য উঠার সময় একদিকে ছায়া থাকে এবং বিকেলে সূর্য ডোবার সময় অন্য দিকে ছায়া পাওয়া যায় । পথচারীরা ছায়ার ঠান্ডায় ভাল ভাবে হেঁটে বেড়াতে পারে সুন্দর পরিকল্পনা । ছায়ার জায়গা গুলোতে বেশ ঠান্ডা, বসে বিশ্রাম ও নেয়া যায়। বাস ষ্ট্যান্ড এ নামার পর বাংগালী দুজনের সাথে পরিচয় হলো ।

চা খাওয়ার জন্য আমাদের জোর করে হোটেলে নিয়ে গেল । সারজাহ শহরের ছবি তুললাম বেশ কিছু । বেশ কিছু ছোট খাট শোপিস কিনলাম দোকান থেকে । তারপর ফিরতি বাসে ডুবাই । আসার সময় কেরালার এক মুসলিম সেলসম্যান এর সাথে কথা হলো ।

ইয়ং ছেলে, চশমার দোকান চাকুরী করে ও এসিসিপি প্রাইভেটে পড়ছে । বেশ সংগ্রামী ছেলে ভালই লাগল । হোটেলে এসে একটু ফ্রেশ হলাম । তারপর হোটেল বয় টেক্সি ঠিক করে দিল । এয়ারপোর্ট এ এলাম ।

টেক্সি ড্রাইভার ভারতীয়। সে নিরাপদে এখানে টেক্সি চালায় কোন সমস্যা নেই, ভাল আয় হয় । তাছাড়া টিপসও পায় । ফ্যামিলি নিয়ে সুখে আছে । সে বলল এখানে থাকার জন্য বেশ ভাল ।

টেক্সি চালনা নিরাপদ । আমরা খুশি হয়ে ওকে টিপস দিলাম । একটা খুশি ভরা ড্রাইভারের চেহারা দেখে এয়ারপোর্টে ইন হলাম । বিমানের কাউন্টারে কোন লোকজন নেই । ঘন্টাখানেক পর চেক ইন শুরু হলো ।

তারপর বিভিন্ন ফরমালিটিস করে ভিতর এলাম । ডিউটি ফ্রি থেকে কিছু কেনা হলো না । বিমানে উঠার আগে হঠাৎ হ্যান্ড ব্যাগগুলো নিয়ে নিল ও টেগ দিল । মূল্যবান জিনিষগুলো বের করে নিলাম । বাসে করে বিমানের কাছে নিয়ে এলো বোর্ডিং ব্রিজে বিমান দাড়ায়নি ।

অনেক দেশী মানুষ। সময় মতই ফ্লাই করল বিমান । এরপর বাহরাইনে ১ ঘন্টা যাত্রা বিরতী কিছু যাত্রী নামল । বিমানেই ছিলাম বাইরে যেতে দেয়নি। তারপর ঢাকার উদ্দেশ্যে বিমান উড়াল দিল ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৭ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।