আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোথায় হারিয়ে গেল নোলক সালমারা ?

ক্লোজআপ-১ এর প্রথম বারের বিজয়ী নোলকের যেমন কোনো খবর নেই তেমনি দ্বিতীয় বারের বিজয়ী সালমারও কোনো খোঁজ নেই আজকাল। এরমাঝে নোলক একবার খবরের কেন্দ্রতে এসেছিল। একটি গুজব(সত্য কিনা জানি না) এসেছিল যে, সে নাকি রেস্তোরার বেয়াড়ার সাথে অমার্জিত ব্যবহার করেছিল। আর সঙ্গীত অঙ্গনে নোলক, সালমাদের উপস্থিতিও নেই। এটাই প্রমান করে যে, কিছু বিশেষ কারণে তাদেরকে বিজয়ী করে তুলা হয়েছিল।

কারণ গানের জন্য হলে আজও তারা দর্শকের হৃদয়ে থাকতো। কিন্তু নোলকের গানও যেমন সমাদৃত হয়নি, তেমনি সালমার নতুন এ্যলবামটাও বিশেষ শ্রেণীর মানুষদেরকে লক্ষ্য করে বের করা হয়েছিল। একজন এতো বড় তারকার কাছ থেকে যা কিনা আশা করা যায় না। কিন্তু ক্লোজ আপ-১ এর কাছে আমি কৃতজ্ঞ একটি কারণে। একটি মার্জিত, বিনীত, পরোপকারী, মিষ্টভাষী এবং দেশপ্রেমিক মানুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য।

আর তার নাম হল আবিদ শাহরিয়ার। ক্লোজ আপ-১ এর প্রথম বারের একজন তারকা। সে রবীন্দ্র সঙ্গীত-এ পারদর্শী। এই ধারার গান-এর শ্রোতা কমে যাওয়ায় সে প্রথমে বাদ পড়ে গিয়েছিল, কিন্তু পড়ে আবার দর্শকদের ভোটেই সে ফিরে আসে। কিন্তু আবারও সেই একই কারণে তাকে পরে বাদ পড়ে যেতে হয়।

কিন্তু আমি তার অদাম্ভিক, অমায়িক আচরণ দেখে খুবই অবাক হয়েছি, আবার তার প্রতি শ্রদ্ধাশীলও হয়েছি। সাধারণত কোনো ক্লোজ আপ-১ তারকাকেই আমি কোনো জনকল্যাণ মূলক কাজ করতে দেখিনি। রিঙ্কুকে দেখেছি কনসার্ট করতে গিয়ে জায়গার নাম ভুল করে হাসির পাত্র হতে। রাশেদ-কে দেখেছি ইউনিভার্সিটির সামনে দাঁড়িয়ে অন্য আরেক প্রতিযোগীর সাথে অমার্জিত এবং উচ্চ-স্বরে কথা বলতে(যা কিনা একজন তারকার কাছ থেকে আশা করা যায় না)। কিন্তু আবিদ এর কাজ দেখে আমি খুবই খুশি হয়েছি।

তার মতো সুন্দর মনের মানুষ অনেক কম হয়। কোথাও ভাষা প্রতিযোগিতা হচ্ছে একথা যদি তিনি শুনেন, তাহলে শত অসুবিধা থাকতেও সেখানে হাজির হয়ে দর্শকদেরকে আনন্দের সুযোগ দান করে থাকেন। আবার গনিত প্রতিযোগিতায়েও তার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। সাধারনত তারকারা এসকল কাজের জন্য টাকা নিয়ে থাকে। কিন্তু আবিদ একাজ-এর জন্য টাকা নিয়ে থাকেন বলে জানা নেই।

মূলতঃ মনের টানেই সেখানে তিনি ছুটে যান। এখানে হয়তো তার কিছু স্বার্থপরতা থেকে থাকতে পারে। শিশু কিশোরদের মাঝে গিয়ে তিনি হয়তো আবার শিশু কিশোর হয়ে যেতে চান। কিন্তু তার উপস্থিতদের মাঝে উৎসাহ-এর সৃষ্টি করে থাকে। তার প্রাণবন্ত কথা তাদেরকেও উৎসাহিত করে বড় হয়ে দেশের জন্য কিছু করতে।

সম্প্রতি আবিদ আরও একটি সুন্দর কাজ করেছেন। তার সহপাঠির অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা বাবার অপারেশন-এর জন্য গান গেয়ে তিনি আবারও মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার অসহায়ত্বর কথা শুনে তার মনও না কেঁদে পারেনি। তাইতো তিনি নিজে থেকেই কনসার্টের ব্যবস্থা করেছেন এবং স্পন্সরের ব্যবস্থাও করেছেন। এই কন্সার্ট থেকে উত্তোলিত টাকা এবং আরও কিছু সুন্দর মনের মানুষ যেমনঃ ইমদাদুল হক, আনিসুল হক প্রমুখ ব্যাক্তিদের সহায়তায় অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধার অপারেশনের টাকা খালি তুলিয়েই দেননি, তারা অপারেশনের সময়ও তার পাশে থেকে তার রোগমুক্তির জন্য দোয়া করেছেন।

খোদা-তাল্লাহ এতোগুলো সুন্দর মনের মানুষের প্রার্থনা ফেলতে পারেননি। সর্বশেষ সংবাদ হল, অপারেশন সফল হয়েছে। আবিদ-এর মতো আরও কয়েকজন মানুষ যদি কষ্টে দিন যাপনকারী মানুষদের পাশে এসে দাঁড়াতো, তাহলেই আমরা একটি সুন্দর ভোরের স্বপ্ন দেখতে পারতাম। যেখানে মানুষ অন্য মানুষের দুঃখ দেখে কাঁদবে, যেখানে অহমিকা থাকবে না, থাকবে না ধনী-দরিদ্রের ভেদাভেদ। সবশেষে, আবিদ তোমায় জানাই হাজারো সালাম।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.