বাঙ্গালী জাতির গৌরবময় ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় সংস্কৃতির জন্য অপমানজনক কোনকিছু এই ব্লগে লেখা যাবে না।
ধহৃমায়িত চায়ের কাপ ঘিরে রাজনৈতিক আড্ডা, হালকা আলোচনা_ সবই চলে মধুর ক্যান্টিনে। বাংলাদেশের ইতিহাসের অনেক গুরুত্দ্বপহৃর্ণ ঘটনার সাক্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ক্যান্টিন দিনভর শিক্ষার্থীদের পদচারণায় থাকে মুখর। বাংলাদেশের স্ট্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্দ্বদানকারী ছাত্র ও রাজনীতিকদের কাছে এক সময়ের আশ্রয়স্ট্থল ক্যান্টিনটির নামকরণ হয় প্রতিষ্ঠাতা মধুসহৃদন দের (মধুদা) নামে। সেসব ছাত্র ও রাজনীতিবিদের অনেক বকেয়া শোধ করেননি।
নয় মাস যুদব্দ শেষে অনেকে আর ফিরেও আসতে পারেননি।
স্ট্বাধীনতাযুদব্দের সময় বেশ বড়সড় কিন্তু জীর্ণ দেওয়ালের ক্যান্টিনটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু যুদব্দ শেষে মধুদার পরিবার ও ছাত্ররা মিলে আবার নতুন করে একে গড়ে তোলে। বাংলাদেশের স্ট্বাধীনতা অর্জনের প্রায় 36 বছর কেটে গেলেও মধুর ক্যান্টিন এখনো রক্তক্ষয়ী সেই যুদব্দের স্ট্মৃতি বয়ে চলেছে। মধুদার দুটি ভাস্ট্কর্য এবং আশপাশের মিছিল-সমাবেশ এখনকার প্রজন্মকে মনে করিয়ে দেয় অতীতের সেই উত্তাল দিনগুলোর কথা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ও বর্তমানে সেখানকার রাষদ্ব্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, 'মধুদা আমাদের ইতিহাসের অংশ। স্ট্বাধীনতা সংগ্রামে তার অবদান অন্য কারো চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। '
মধুর ক্যান্টিন ভবনটি নবাব সলিমুল্ক্নাহর সময় তার বিনোদনের জন্য নাচঘর হিসেবে নির্মাণ করা হয়েছিল। আর এখন সেখানে চলে শিক্ষার্থীদের জমজমাট আড্ডা। প্রতিদিন সেখানে প্রায় তিন হাজার শিক্ষাথর্ী হালকা খাবার খাওয়ার কাজ সারে।
মধুদার 46 বছরের ছেলে অরুণ কুমার দে এখন ক্যান্টিনটি চালান। তিনি জানান, আগের মতো রাজনীতির কেন্দ্রস্ট্থল না থাকলেও স্ট্বাধীনতাযুদব্দের স্ট্মৃতি এখনো মধুর ক্যান্টিনকে ঘিরে আছে।
যুদব্দের সময় অরুণের বয়স ছিল 11। সেনারা যেদিন তার বাবাকে ধরে নিয়ে যায় সেদিনের কথা এখনো পরিষ্ফ্কার মনে করতে পারেন তিনি। এ সময় তার মা, বড় ভাই ও বৌদিকে হত্যা করে সেনারা।
সেদিনের কথা স্ট্মরণ করে অরুণ বলেন, '1971 সালের 25 মার্চের মধ্যরাত। হঠাৎ প্রচ- গোলাগুলিতে আমার ঘুম ভেঙে গেল। জানালা দিয়ে দেখলাম সামরিক যান ক্যামঙ্াসের দিকে আসছে। সেনারা অস্ট্প উঁচিয়ে ভবনগুলোতে ঢুকে লোকজনকে বের করে আনছে। '
পরদিন সেনারা এলো মধুদার বাসায়।
এর একদিন পর বল্পব্দুরা ক্যামঙ্াসে লাশের স্টস্নহৃপের মাঝে খুঁজে পায় মধুদার নিথর দেহ।
সেনা অভিযানের সময় সৌভাগ্যত্রক্রমে অরুণ ও তার কয়েক ভাই-বোন বেঁচে যান। এর পরপরই তারা পালিয়ে যান ভারতে। পরে যুদব্দ শেষে 1972 সালে স্ট্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন।
দেশে ফেরার পর বিধ্বস্টস্ন মধুর ক্যান্টিন আবার চালু করার উদ্যোগ নেয় অরুণের পরিবার।
সে সময় বুলেটবিদব্দ ক্যান্টিনের দেয়ালের একটি লেখা এখনো মনে পড়ে অরুণের। লেখাটি ছিল, 'তোমাকে স্ট্মরণ করছি মধুদা। তোমার আত্দ্মত্যাগ আমরা কখনো ভুলব না। '
প্রথমদিকে ক্যান্টিনটি পরিচালনার দায়িত্দ্বে ছিলেন অরুণের বড় বোন। সেই থেকে এখনো পুরনো দিনের মতোই সরগরম মধুর ক্যান্টিন।
অরুণ বলেন, 'স্ট্বাধীনতাযুদব্দ আমাকে খুব বেশিকিছু না দিলেও চির গৌরবের অংশীদার করেছে। আমি আমার অতীত ও বাবাকে নিয়ে গর্বিত। '
হ সহৃত্র : বিডিনিউজ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।