আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এই দেশে আক্রান্ত হলেই বিদেশে 'ঠাঁই' (asylum) পাওয়া যায়, এই যে 'বাস্তবতা' তৈরি হয়ে আছে, এটা কি দেশের জন্য কোনো মতেই সুখকর? কিংবা সন্মানজনক?

অ আ অনুন্নত এবং বিপদসঙ্কুল দেশগুলিতে 'মুক্তমনা' এবং উচ্চকণ্ঠ লোকজন যখন বিপদে পড়ে তখন সুইডেন বা ইউরোপীয় কিছু দেশ তাদের 'আশ্রয়' দিতে আগ্রহী হয়ে থাকে। সাদা চোখে এতে আমরা কোনো সমস্যা দেখতে পাই না। 'অনুন্নত' বা বিপদসঙ্কুল রাষ্ট্রের ছাপ্পর গায়ে লাগিয়ে নিতে বাংলাদেশের খুব একটা কষ্ট করতে হয় নি। তসলিমা নাস্রীন সহ বেশকিছু উচ্চকণ্ঠ দেশ ছেড়ে 'পালাতে' বাধ্য হয়েছেন কিংবা নিহত হয়েছেন। যারা পালিয়ে বেঁচেছেন, তারা ঠিক কেমন জীবন যাপন করছেন, কিংবা তাদের অন্তর কতটুকু মুক্ত রয়ে গেছে তার খোঁজ কেউ কি রাখেন? আমরা দেখতে পাই তসলিমা দেশের ভেতরে থাকতে যতটুকু সাহসী ছিলেন, তার ছিটেফোঁটাও এখন তার ভেতরে হয়তো আর অবশিষ্ট নেই।

ক্যাচাল বাধাবার একটা সাইকোলজিক্যাল সমস্যা তার ভেতরে এসেছে বলে বাজারে গুঞ্জন, অনেক দিন ধরেই। বাকিদের কথা আমরা তেমন আর শুনতে পাই না। http://www.nagorikblog.com/node/8769 । এসাইলাম বা আশ্রয়প্রার্থনা নিয়ে যে কথাগুলি বলেছিলাম, তা বোধহয় আরেকধাপ বাড়িয়ে বলার সময় হয়েছে। ইসলামিস্ট কিংবা তাদের তাঁবেদার সকল সরকার (বর্তমান কিংবা অতীত) দেশের এই উগ্র ও জঙ্গী 'ভাবমূর্তি' বজায় রাখতে খুবই আগ্রহী।

তাই সরব কণ্ঠ যখন আক্রান্ত হয়, তখন বিদেশী মিডিয়া যেভাবে বিষয়টাকে অঙ্কণ করে, সরকার যেভাবে নীরব থাকে, পুলিস যেভাবে নিজের হাত, পা এবং বিশেষ অঙ্গ আপন গুহ্যদ্বারমধ্যে প্রবিষ্ট করে হাসিমুখে বসে থাকে, সকল প্রতিবাদ, সুবিচারের সকল আর্তনাদ বিফলে যেতে থাকে যেভাবে, তেমনি একটা শ্রেণীর মুখ থেকে শোনা যেতে থাকে অমোঘ সেই বাণী, " 'বেঁচে' থাকতে হলে সরব কণ্ঠকে দেশ ছেড়ে চলে যেতেই হবে!! " কেন? দেশ ছেড়ে চলে গিয়ে যদি বেঁচে থাকতে হবে, তাহলে দেশের ভেতরে অগনিত যতো সরব কণ্ঠ আছে, তারা কি মুখ বন্ধ করে এই পুঁতিগন্ধময় বাতাস সেবন করেই বেঁচে থাকবে? নিজেদের বুড়ো বাপের মতো তরুণ তরুণীরা কি রেখে ঢেকেই 'কথা' বলতে হবে শুধুমাত্র 'বেঁচে থাকা' নিশ্চিত করতে? আমরা কি আসলেই এতোটা ফাঁপা হবে জন্মেছি? নিজের মনের কথা খুলে বলা, বিজ্ঞাণ ও দর্শণ নিয়ে প্র্যাকটিক্যাল আলোচনা করা, বৈশ্বিক বলদারগু অর্থ্যাৎ 'ধর্ম' এবং এর অপব্যবহার নিয়ে উচ্চকণ্ঠ হওয়া কিংবা অর্থনীতির সমস্যাগুলি নিয়ে সরব হওয়া কি 'আক্রান্ত' হবার জন্য যথেষ্ট? এই দেশে আক্রান্ত হলেই বিদেশে ঠাঁই পাওয়া যায়, এই যে 'বাস্তবতা' তৈরি হয়ে আছে, এটা কি দেশের জন্য কোনো মতেই সুখকর? কিংবা সন্মানজনক? আমি যে দেশের নাগরিক, সে দেশটা কেন সেই আশ্রয়দানকারী ইউরোপীয় দেশটির মতো সহনশীলতা ও বাক-স্বাধীনতার চর্চা হবে না? সংবিধান যদি আমাকে এই বাক-স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়, তাহলে তার চর্চা করতে গিয়ে অপশক্তির হাতে আক্রান্ত হলে সেই রাষ্ট্র আমাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসবে না কেন? কেন সেই দেশের গনমাধ্যম, সুশীল সমাজ ভেড়ুয়ার মতো লেজ লুকিয়ে গর্তে গিয়ে লুকোবে? সৌদি অর্থ এবং পাকিস্তানী ইনটেলিজেন্সের ছায়ায় গড়া ডিজিএফআই কি বসে বসে ঘাস খায়? ইসলামিস্ট মেশিনারী পুরো বিশ্বজুড়ে যে তান্ডব করছে, তার বিরূদ্ধে যুদ্ধে যদি সকলেই এক না হই, তাহলে যা আছে আমাদের তাও একদিন ছিনিয়ে নিয়ে যাবে ইসলামিস্ট এবং তাদের সুশীলগন। আমাদের সরবতা আরো তীব্র হবে, নয়তো নিভিয়ে দেবার জন্য বিপক্ষ শক্তি সর্বদাই সচেষ্ট, কখনো প্রকাশ্যে কখনো চালাকির ভেতর দিয়ে। এসাইলাম বা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা তেমনই একটি চালাকি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।