আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সেক্স এন্ড ফিলসফি ও কলকাতার দর্শক

খুব গোলমেলে, নিজেও ভাল জানি না। তবে আছে,এই ঢের।

চলচ্চিত্র উত্সবের পঞ্চম দিনে নিউ এম্পায়ারেরর শেষ শো ছিল তাজাকিস্তান/ইরান এর সিনেমা "সেক্স এন্ড ফিলসফি' । মসেন মাখমালবাফ এর সিনেমা । কলকাতার সিনেমাপাগল মানুষ যে ঝাপিয়ে পড়বে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই তার উপর যদি এরকম একখান নাম হয় ।

সিনেমাটি দু'বার দেখান হল, প্রথমবার পঞ্চম দিনে নিউ এম্পায়ারে আর দ্বিতীয় ও শেষবার ষষ্ট দিন মানে গতকাল নন্দন-১এ। নন্দন-১ এর দর্শক সব ডেলিগেটস কার্ড , গেষ্ট কার্ড আর ভি আই পি কার্ডধারী । আমি ছিলাম নিউ এম্পায়ারের দর্শক, টিকিটধারী! সিনেমা বোদ্ধা বন্ধু আমার রেসের বই ( ফেষ্টিভ্যালের সিনেমার তালিকা ) এ দাগ দিয়ে লিখে দিয়েছিলেন, মাষ্ট । আমি প্রথমবার দেখব মাখমালবাফের সিনেমা সেজন্যে যথেষ্টই উত্সাহ আর আগ্রহ ছিল । হলে বসে সেক্স এন্ড ফিলসফি দেখব সেই নিয়ে একটু উদ্বিগ্নও ছিলাম, বন্ধুটি আশ্বস্ত করলেন, নিশ্চিন্তে যাও, দেখে এসো, মসেন মাখমালবাফের সিনেমা দেখা এক অভিজ্ঞতা ।

মিস কোর না । আগে থাকতে টিকেট করা ছিল, উত্তর কলকাতার ষ্টার থিয়েটার থেকে কালপুরুষ দেখে নিউ এম্পায়ারে যখন পৌঁছুলাম সিনেমা শুরু হতে তখনও দু ঘন্টা দেরী । অপেক্ষার সময় কাটাতে বারিস্তাঁ'তে বসে পড়লাম কফি আর রেসের বই নিয়ে । আধঘন্টা আগে চোখে পড়ল লাইন দিতে শুরু করেছে মানুষ , তো আমিও গুটিগুটি পায়ে লাইনে গিয়ে দাঁড়ালাম । আধ কিলোমিটারেরও বেশি লম্বা লাইন ঘুরে গিয়ে আবার পড়ছে চৌরন্গীর রাস্তায়, এমন সময় গেট খুলে ভেতরে যেতে বললে প্রায় দৌড়ে ভেতরে গিয়ে আগে ভাগে বসে পড়ি সীট নিয়ে, বলা কি যায়, টিকেট হাতে থাকলেও সীট পাবো কীনা ! যা লাইন দেখলাম ! বসে পড়ে নিশ্চিন্তে চাদর গায়ে জড়িয়ে আশ পাশে তাকাতে চোখে পড়ল, নিচে, উপরে ও তারও উপরের টাওয়ারে শুধুই মানুষের মাথা ! বাতি নিভলে চলচ্চিত্র উত্সবের পরিচিতি দেখতে দেখতেই কানে এল চেঁচামেচির আওয়াজ, ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকাতে দেখি একদল মানুষের সাথে হাতাহাতি হচ্ছে হলে প্রহরারত লোকের ।

যাঁদের সাথে হাতাহাতি হচ্ছে তারা সবাই পাসধারী, আর প্রহরীদের বক্তব্য, এখানে আর সীট নেই, কার্ড নিয়ে যাঁরা এসেছেন, তারা এখানে সিনেমা দেখতে পাবেন না! ভিড়টাকে ঠেলে বাইরে নিয়ে যাওয়া হল দেখতে পেলাম, ইতিমধ্যে টাইটেল শুরু হওয়াতে আমি মন দিলাম সিনেমাতে । কিন্তু ঐ ভিড়ের মারমুখী জনতার কি হল জানতে কৌতুহলী চোখ বারে বারেই দরজার দিকে তাকাতে চোখে পড়ল, কিছু একটা রফা করে ঐ ভিড় এসে ঠাঁই নিয়েছে দু'সারি সীটের মাঝের চলাচলের পথের নিউ এম্পায়ারের নোংরা কার্পেটে ! সিনেমার শুরুতেই ম্যাজিক দেখতে পেলাম, হয়ত এই ম্যাজিকের কথাই বলেছিলেন সিনেমাপ্রিয় বন্ধুটি । এক চল্লিশে পা দেওয়া পুরুষ তাঁর জন্মদিনে এক নাচের স্কুলে ডেকেছেন তার বান্ধবীদের । অভিনব তার নিমন্ত্রন পদ্ধতি । ম্যাজিকের এখানেই শুরু ।

একে একে চারজন । অসাধারণ চার সুন্দরী রমণী একে একে এসে স্কুলের সামনে এক গাছের কোটরে লুকিয়ে রাখা চাবি নিয়ে ঢুকল নাচের স্কুলের ভেতরে, যে এসেছে সে জানে না যে আরও কেউ আসবে । একে একে চারজনের পরে এলেন সেই প্রেমিক, চল্লিশে পা দেওয়া 'জন' । ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে নাচ, ব্যালে । হাজির ট্রুপও ।

পরের ভাগে সমাপ্য-

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।