আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্রাউন অব কুইন

সময়কে কাধে নিয়ে চলো বন্ধু
আগে ইংল্যান্ডে সংসদ বসার সময় ডিউক, আর্ল এবং ভিসকাউন্টের স্ত্রীরা ব্যাংকের নিরাপদ ভল্ট থেকে যে যার মুকুট নিয়ে অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে যেতেন। তাদের রাজমুকুট পরা উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত এবং সজীব করে তুলত। এমনকি রানী বা রাজকুমারীদের সুসজ্জিত চুলকে বেঁধে রেখেছে এই রাজমুকুট, কিন্তু এখন এ দৃশ্য একেবারেই দুর্লভ। একটি মুকুট তার মালিকের আভিজাত্য, গর্ব এবং সমৃদ্ধির পরিচয় বহন করে। একই সঙ্গে নির্মাতার শিল্প শৈলীর অপূর্ব দক্ষতাকেও তুলে ধরে।

আর সে মুকুট যদি হয় রাজমুকুট তাহলে তো প্রতিনিধিত্ব করে যুগ এবং বংশ মর্যাদার। এই মুকুট পরে রানী বা রাজকুমারীরা বিশেষ অনুষ্ঠানগুলোতে দীপ্তি ছড়িয়ে থাকেন। তবে ইদানীং রাজ পরিবারগুলোতেও আগের সেই আভিজাত্য নেই। এখনকার অনুষ্ঠানগুলোতে রাজকুমারীদের মুকুট পরে আসতে খুব কমই দেখা যায়। আগে ইংল্যান্ডে সংসদ বসার উদ্বোধনী দিনে ডিউক, আর্ল এবং ভিসকাউন্টের স্ত্রীরা ব্যাংকের নিরাপদ ভল্ট থেকে যে যার মুকুট নিয়ে ওই বিশেষ অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে যেতেন।

তাদের রাজমুকুট শোভিত উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত এবং সজীব করে তুলত। কিন্তু আজকাল ডিউক আর আর্লদের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে। রানী বা রাজকুমারীদের সুসজ্জিত চুলকে বেঁধে রেখেছে রাজমুকুট, কিন্তু এখন এ দৃশ্য একেবারেই দুর্লভ। মাঝে মধ্যে বাকিংহাম প্যালেস বা উইন্ডসর ক্যাসেলের স্টেট ব্যাংকোয়েটের রাজকীয় অনুষ্ঠানে মুকুট পরে আসেন রানী ও রাজকুমারীরা, তখন রাজমুকুটের দীপ্যময় ছটায় মুগ্ধ হওয়ার সুযোগ পান অভ্যাগতরা। তবে সাধারণ মানুষরাও যাতে এই মুকুট দেখার সুযোগ পান তার ব্যবস্থা করা হয় সবসময়।

আমেরিকার বোস্টন শহরে মিউজিয়াম অব ফাইব আর্ট একবার ৮০টি অপূর্ব সুন্দর রাজমুকুট প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেছিল। এই প্রদর্শনীর নাম দেয়া হয়েছিল ক্রাউনিং গ্লোরিজ। এখানে সপ্তদশ শতাব্দী থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত বহুমূল্যের মুকুট রাখা হয়েছিল। এই প্রদর্শনীর জন্য সাহায্য করেছিলেন প্রিন্সেস ডায়ানা। তবে তিনি বলেছিলেন কাজটা তার জন্য বেশ কঠিন ছিল কারণ মুকুটের মালিকরা ভয় পাচ্ছিলেন যে, একবার মুকুট পাঠালে সেগুলো যদি চুরি হয়ে যায়।

তবে ডায়ানা তার কাজ করেছিলেন সঠিকভাবে। প্রথমে গিয়েছিলেন ব্রিটিশ রাজপরিবারে। কিন্তু তাকে প্রত্যাখিত করা হয় এই বলে যে রানীকে সবসময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতে হয় তাই এটা দেয়া যাবে না। প্রিন্সেস অ্যানের কাছে গেলে তিনিও সেই একই জবাব দেন। পরবর্তীতে ডায়ানা আর্ল স্পেন্সারের কাছে গিয়েছিলেন তিনি তাদের বিখ্যাত মুকুটটি ধার দিতে পারবেন কিনা জানতে।

এই মুকুট এক সময় প্রিন্সেস ডায়ানা পরতেন। মুকুটটি তৈরি হীরা দিয়ে। ১৭৬৭ সালে ভিসকাউন্টেস মন্টেগুর জন্য এটি তৈরি করা হয়। মুকুটটি বর্তমানে প্রিন্সেস অব ওয়েলস মিউজিয়ামে রাখা আছে। ডায়ানা বিয়ের সময় এই মুকুটটি পরেছিলেন।

পরে নানা রাজকীয় অনুষ্ঠানে তাকে এই মুকুট পরে যেতে দেখা যায়। আর্ল স্পেনসারও ডায়ানাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন নানা অজুহাত দেখিয়ে। তবে এখানে স্থান পেয়েছিল মোনাকোর প্রিন্সেস গ্রেসের রাজমুকুট। ১৯৭৬ সালে এটি তৈরি করে ভ্যান ক্লিফ অ্যান্ড আর্পেলস। অভিনেত্রী গ্রেস কেলি এ মুকুট পরে তার মেয়ে প্রিন্সেস ক্যারোলিনের বিয়েতে।

প্রিন্সেস ডায়ানাকে বিয়েতে যে উপহার দিয়েছিলেন সেটা পুরোটাই হীরা দিয়ে বানানো এবং ১৯টি বড় বড় মুক্তা ছিল। ১৯১৪ সালে রানী মেরীর জন্য মুকুটটি তৈরি করে রাজকীয় গহনা প্রতিষ্ঠান অ্যাসপ্রে অ্যান্ড গারার্ড। প্রায় প্রতিটি রাজমুকুট তৈরির পেছনে রয়েছে রোমান্টিক ও করুন কিছু ঘটনা। যেমন প্রিন্সেস গ্রেস অব মোনাকো তার মেয়ের বিয়েতে মুকুট পরে যাওয়ার সময় গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যায়। সংগৃহীত
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।