আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আস্তমেয়ের পূর্ণ চিন্তা এবং অপূর্ণ মানুষ জাতি



আচ্ছা আপনি একট কাল্পনিক চিত্র কল্পনা করুন- মানুষ একদল বুদ্ধিমান প্রানীকুল তৈরী করলো- তার মধ্যে মর্যাদা এবং স্বাধীনতাবোধ তৈরী করে তাকে বললো তোমরা হলে আমাদের দাস - তার করনীয় এবং অকরনীয় কার্যবিধি হাতে ধরিয়ে দেয়া হলো - এবং এরপর ঐ প্রানীসকল মানুষ সম্পর্কে ধারনা পোষন করতে পারে? আমি সেই রকম একটা সিচুয়েশনের কথা বলতে চাচ্ছি এবং এর বিকল্পের কথাও। আমি বলছি বিশ্বের একটা বিকল্প ডিজাইন কি এর চেয়ে ভালো হতে পারতো কিনা? আমার মনে হয় বিশ্বের ডিজাইন হিসেবে এই ডিজাইনের চেয়ে ন্যায্য ডিজাইন সম্ভব ছিলো। অবশ্য এই কথাটি অবশ্যই মানুষের অস্তিত্ব'র সীমাবদ্ধতাকে স্বীকার করেই বলা। মূলত অনন্তকালের চেহারা যার কাছে পরিস্কার তার কাছে পৃথিবীর একশবছর কিংবা হাজার বছর কোন গুরুত্বই আনে না। আবার বেশিরভাগ মানুষ যারা তাদের ইন্দ্রীয়ানুসারে চেনা পৃথিবীর বাইরের অনন্তকালের চেহারা জানে নি সেখানে জীবনের প্রতিটি মূহূর্তই মূল্যবান।

আস্তমেয়ে এবং যারা ইহকাল পরবতর্ী জীবনের রূপ অনুভব করেছেন তারা এ কথা বলতেই পারেন। অনন্তকালকে নিজেরকাল হিসেবে বিচার করলে পৃথিবীর সবচাইতে দীর্ঘস্থায়ী ঘটনাটিও তুচ্ছাতিতুচ্ছ কোন কিছুর চাইতেও তুচ্ছ - জেসাস ক্রাইস্ট -তার কাছে তার উপর অত্যাচারকে শেষ বলে জানেন নি - কারন তিনি আগের এবং এর পরের ব্যাপারটি জানতেন। এ কারনে এ ভয়াবহ অত্যাচারকে তিনি স্বাভাবিকভাবে সহ্য করে গেছেন। বোধহয় আপনি আখেরাতের সত্যজানা মানুষকে এই পারস্পেকটিভে দেখার কথা বলছেন যেখানে মৃতু্য একটা খোলশ বদলানোর মতই সাধারন একটা ঘটনা - ধরে নিলাম এটি কোন ঘটনা নয়- সেেেত্র প্রশ্ন ওঠে এই অতি তুচ্ছ কোন কালের বিচারে অনন্তকাল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া যায় কি ? প্রায়ই মহাশক্তির তুলনায় মানুষের ুদ্রবুদ্ধির উদাহরন আস্তিকেরা দিয়ে থাকেন, সেেেত্রও এই তুচ্ছ বুদ্ধি নিয়ে মহাকালকে যে মানুষ বোঝে নি তাকে অজ্ঞানতার জন্য শাস্তি দেয়া কতটুকু যুক্তিসঙ্গত। একটি শিশুকে তার অপরাধের জন্য কতটুকু শাস্তি দেয়া যেতে পারে।

ও আর একটি প্রশ্ন মাথায় আসলো অপ্রাসংগিকভাবে, তাও বলি- অন্যান্য তুচ্ছ প্রাণীর পরকালে গতি কি? যদি পরকালে তাদের জন্য কিছুই না থাকে তবে তার জন্য প্রান হারানোটাই অনেক বড় নয় কি? আর যদি কোরবানির এই পশুগুলির পরকালে সুন্দর জীবনের ব্যবস্থা থাকে তবে সে কি রুপে সেখানে বিচরন করবে? আপনি পরীা সিস্টেমের কথা বলছেন। আপনি কি মনে করেন না একটি ছাত্রের ব্যর্থতা শিকের ব্যর্থতা? আর যেখানে ছাত্রের বোঝারই মতা বিচার না করে কাসে নেয়া হলো পরীা দেবার জন্য সেটিতো পরীকের আরো ব্যার্থতা কারন- শিক হিসেবে সে ব্যর্থ হলো ছাত্রটিকেই বুঝতে। সেেেত্র তার জন্য উচিৎ ছিলো অন্যভাবে বোঝানো - এমনভাবে যেন সে বুঝতে পারে - তা না করে অবোধ জনকে পরীার ভেতরে ঠেলে দেয়াটা অন্যায্য কারন সেেেত্র জেনেশুনেই তাকে এক নিষ্ঠুর ফলাফলের মুখোমুখি ঠেলে দেয়া হলো। ভালো শিক প্রত্যেকটি ছাত্রের ভেতরে গুন সঞ্চারিত করতে পারেন আর না পারলে তার দায় তার নিজেরও। ধরে নিলাম ছাত্রটি শেখাবার পরও শিখছে না - সেেেত্র উপায় কি? তাকে শাস্তি দেয়া না শেখানো।

উৎকর্ষতার উন্নতি নয় শাস্তি এবং পুরস্কারই যদি পরীার মূল ল্য হয় তাহলে এটি খুব ভালো পদ্ধতি হিসেবে মেনে নেওয়া যায় কি? আচ্ছা আপনার কিংবা আপনাদের কি মনে হয় - কোনটা ভালো , শুদ্ধতার শিা নাকি ভুলের শাস্তি অথবা কৃতকার্যতার বাহবা? আপনার ভাষা আমি পড়তে পারছি। আপনি বলবেন শিার জন্য এটি জরুরী। নিশ্চয়ই আমরা আমাদের মানুষের শিা ব্যবস্থায় এখনো পুরোপুরি প্রয়োগ করতে পারিনি- কিন্তু এখন কনসেপ্টচুয়ালী এখন শিা ব্যবস্থ্যায় এটির প্রয়োগের কথা ভাবা হচ্ছে - এনকি পরিমিতভাবে এর প্রয়োগ দেখা যাচ্ছে খুব খোলা চোখেই- ছাত্রদের ব্যর্থতাকে শিকের ভূমিকাকে মূল্যায়ন করা হচ্ছে, ছাত্রদের শারীরিক নির্যাতনের পরিবর্তে বুঝিয়ে শুনিয়ে পারটিসিপেটারী ওয়েতে বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষতা বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে। ইন্টারেকশান বা গতিশীলতার পরিবর্তে আনুগত্য যেই সিস্টেমের ভালো মন্দের নির্ণায়ক সেই সিস্টেমে আসলে কতটুকু অগ্রগতি সম্ভব? আপনি এেেত্র বলবেন ধর্ম গতিশীল - এখানেও আছে নানা চিন্তার নানা মুক্ত পথ- নিশ্চয়ই তাই কিন্তু আস্তমেয়ে নিজেই অনেকবার বলেছেন যে যে ইতিবাচকভাবে বুঝবার জন্য যে জানতে চাইবে সেই বুঝবে। কোরআনও বলে এটি বিশ্বাসের উপর আনুগত্যকে দাবী করে।

এটি তর্কের খাতিরে কেউ অস্বীকার করলে কোরআনের ভিত্তিকেই অস্বীকার করা হবে। কিন্তু নেগেশন কিংবা সন্দেহ অথবা বিরুদ্ধবাদীতা - জ্ঞানের অর্জনে একটি পদ্ধতি হিসেবে আমরাাবিস্কার করেছি? সেেেত্র জ্ঞানার্জন যদি বৈধ হয় তবে সন্দেহ, অস্বীকার, বিরুদ্ধযুক্তিবাদীতা দূষনীয় হবে কেন? আর যা একেেত্র বৈধ - তা আর এক েেত্র কেন বৈধ হবে না? আনুগত্য'র কথা বলতে চাইছি - যদি শক্তির নিরিখে আনুগত্য লাভের শর্ত হয় তবে পাড়ার মাস্তান বলতে পারে এখানে আমার শক্তি বেশি তুমি আমাকে মানো না এটি তোমার অপরাধ। আমাদের কি তাকে মেনে চলা উচিৎ কি উচিৎ না? এই হিসেবে স্বৈরাচারী এরশাদের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন ভূল ছিলো- ভূল ছিলো 1971 - কারন সেটা মতাবানদের বিরুদ্ধে আমরা কথা বলেছি। না কি শুধুমাত্র তার েেত্রই এই ব্যাপারটি প্রযোজ্য হবে? একজন মতাবানের চাইতে শিকের হৃদয়ই কি অধিক আনুগত্য দাবী করে না ? আর একটি কথা আস্তমেয়ে বলেছিলেন- প্রশ্ন করার অধিকার আল্লাহ দিয়েছেন। প্রশ্ন করার উত্তর যদি থাকে তাহলে খুজবার পথটিও বৈধ।

তাকে মানার অন্ধ অনুকরন বাদ দিলে তাকে মানা এবং না মানা দুটোই সমান কারন দুটোই অনুসন্ধানের পথমাত্র। তবে এর জন্য "শাস্তি - পুরস্কার" , "ঠিক - বেঠিক" নিয়ে এত প্রশ্ন কেন? কারন অনুসন্ধানের জন্য কোন পদ্ধতি এবং পথটি বেছে নেয়া হবে তা ব্যক্তিগত এবং এখানে জোর-জবরদস্তি চলে না। সে হিসেবে ধমর্ীয় অনুশাষন এর ব্যাপারটিও সমাজে অসিদ্ধ হয়ে পড়ে। এটি একটি ব্যক্তিগত সাংস্কৃতিক অধিকার হিসেবে সমাজ কাঠামোতে বিবেচিত হতে পারে এর বেশি কিছু নয়। আর মানুষ মাত্রই অপূর্ণ - সে প্রতিদিন জানে এবং জানার মাধ্যমে নিজেকে পূর্ণ করার চেষ্টা করে।

একটা চিন্তাকে ধ্রুব ধরে নিজেকে পূর্ণ চিন্তার অধিকারী মনে করলে যে আমাদের চারপাশের অনেক কিছুই স্তব্ধ হয়ে যেত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।