আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সানাইয়ের ধ্রুপদী পুরুষ ওস্তাদ বিসমিল্ল্লাহ খাঁ

আমার চিন্তা, আমার চেতনা, আমার অভিজ্ঞতা

[রং=ৎবফ]শিল্পী সূদর্শন বালি নির্মিত বিসমিল্লাহ খাঁর অবয়বরূপের শেষ ফিনিশিং দেয়ার জন্য হাত বুলাচ্ছেন। ছবিটি ভারতের গোলেডন বিচ নামে খ্যাত পূরীতে ধারণ করা হয়েছে গত 21 শে আগস্ট। ছবিঃ সঞ্জীব মূখাজর্ী, রয়টার্স [/রং] স্বাধীন ভারতে প্রথম ভোর হয়েছিল তার সানাইয়ের সুরে। 1947 সালের 15 আগস্ট দিলি্লর রেড ফোর্টে বসে সেই সুর তুলেছিলেন তিনি। শেষ ইচ্ছাটি ছিল, ঐতিহাসিক ইন্ডিয়া গেটের নিচে বসে সেই সুর আবার তুলবেন।

কিন্তু ইচ্ছা পূরণ হলো না সানাইয়ের ধ্রুপদী পুরুষ বিসমিল্লাহ খাঁর। বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে সানাইকে ভারতের ধ্রুপদী সুর শিল্পের স্তরে নিয়ে গিয়েছিলেন যিনি, সেই তিনি 91 বছর বয়সে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন। রেখে গেলেন তার সানাইয়ের সুর। [গাঢ়]মঙ্গলবার প্রিয় শহর বারানসির কাতমান কারবালা কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে চির বিদায় জানায় তার ভক্তরা। [/গাঢ়] পিতা পয়গম্বর বক্স ও নানা আল্লান খাঁর হাত ধরেই সানাইয়ে প্রথম আঙ্গুল ছুঁয়েছিলেন বিসমিল্লাহ খাঁ।

কিন্তু সুর ছিল তার প্রাণে। তাই রাজা-বাদশাহর দরবারের বাদ্যযন্ত্রসানাইকে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের আসর সেতার-সরোদের সমগোত্রীয় পর্যায়ে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন তিনি। যখন তিনি সানাই সম্রাট হননি, তখনই ঠুমরি, কাজরি ও শাওয়ানিসহ সঙ্গীতের বেশ কিছু ধারা আয়ত্ত করেন। পরে আগ্রার খেয়াল ঘরানার বিখ্যাত গায়ক ওস্তাদ নাতযান খানের পুত্র মুহাম্মদ হুসেনের কাছে রাগ সঙ্গীতের তালিম নিয়েছিলেন। ফলে বিসমিল্লাহ খাঁর বাজনা শ্রেষ্ঠ পর্যায়ে বিলম্বিত একতালের খেয়ালের ঢঙে শুরু হতো।

এই ঘরানার গায়কী অবলম্বন করে রাগের বিস্তার, লয়কারী তান প্রভৃতি বাজাতেন। শুধু উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতই নয়, লোকসঙ্গীত আশ্রিত কাজরি, চৈতী, পূরবী ধুন প্রভৃতিও তার সানাইয়ে নতুন এক মাত্রা পেয়েছিল। ভারতরত্ন এই শিল্পীকে যুক্তরাষ্ট্র তাদের দেশে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। শিল্পীর সাধনাস্থল বারানসির আদলে গড়ে দিতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু রাজি হননি সানাইয়ের শাহানশাহ বিসমিল্লাহ খাঁ।

বলেছিলেন, আমার প্রিয় শহর বারানসি হয়তো তৈরি করতে পারবে, কিন্তু মা গঙ্গাকে তোমরা কিভাবে সেখানে নিয়ে যাবে? সাম্প্রদায়িকতার কোনো ছোঁয়ায় তিনি বিশ্বাসী ছিলেন না। বারবার বলতেন, সুরের কোনো ধর্ম নেই, শিল্পীরও কোনো ধর্ম নেই। এজন্যই মুসলমান হয়েও দেবী সরস্বতীর ভক্ত ছিলেন তিনি। মৃতু্যর শেষ ক'টি দিন কিছুটা অর্থ কষ্টের সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাকে। কেননা, 60 সদস্যের বিশাল যৌথ পরিবারটি তারই অর্থের ওপর নির্ভর করে ছিল।

যৌবনে ভালো ফুটবল খেলতেন সানাইয়ের শাহানশাহ। বেনারস স্পোর্টিং ক্লাবের ফুটবল খেলোয়াড় ছাড়াও কুস্তিতে নাম ছিল খাঁ সাহেবের।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।