আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কথা বলছিলাম আল্লাহর সাথে .... এবং মন্তব্য খাতার আস্তমেয়ে



5 বছরের পুরোনো ডায়েরীর কিছু কথা নিয়ে একটা লেখার মন্তব্যের খাতায় আস্তমেয়ে খুবই মজার একটি লেখা পাঠিয়েছেন ( আস্ত মেয়ে ছাড়া অন্যদের - কথা বলছিলাম আল্লাহর সাথে ... এবং এর মন্তব্য খাতায় আস্তমেয়ের মন্তব্যটি দেখে নিলে এই লেখাটির পুরোটা বুঝতে সুবিধা হবে) -মজাটা এইজন্য ছোট্ট এই মজার লেখাটিতে একটু রাগ, খানিকটা ব্যঙ্গ ও কিছুটা শাষন মেশানো ছিলো - আর সঙ্গে যেটা ছিলো সেটা -সত্য ...অন্তত আমার কাছে গ্রহনযোগ্য এই অর্থে - ( কারন আমার বন্ধু কানাই যে বলতো - সত্যের অনেক পিঠ ... সেটা আমি মানি) ... আস্তমেয়ের - হু' শব্দটা মজার - ছোট বোনকে কিছু বললে সে মেনে না নিয়ে রেগে উঠার প্রথম প্রতিক্রিয়া হিসেবে যে শব্দ করে অনেকটা তার মতো... - দ্বিতীয় বাক্যটা ঠিক ছোটবোনটি নয় - ছোটবোনটির পাকা বন্ধুটির পাকামো মেশানো খবরদারির মতো ... তৃতীয় বাক্যটা বাবার গলার শাষানোর ভঙ্গী আছে ... তিনি যেন রাগী চোখে তাকিয়ে বলছেন - বেশি বুঝিসতো... এরপরের অর্থাৎ চতুর্থ বাক্যটায় এই প্রথম আস্তমেয়ে ব্যাক্তিগত টোন ছেড়ে একটু অবজেকটিভ ওয়েতে কথা বলা শুরু করেছেন .. কথাগুলো তার অভিজ্ঞতা কিংবা বিশ্বাস দুটোই হতে পারে ... তিনি আমার লেখার শেষ পরিনতি নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন বিশ্বাস আল্লাহর উপর থাকলে ওই প্রশ্নের পরে এই কথোপকথোন শেষ হয়ে যায় না। বিশ্বাস এমন একটি প্রত্যয় যা নিয়ে যুক্তি চলে না... .... বিশ্বাস মানে এমন একটি বিমূর্ত সত্তা যা বিশ্বাসী মনের চিন্তাকে শাষন করে - এ বিষয়ে ইমাম গাজ্জালী কিমায়ে সাআদাত গ্রন্থে যে বিষয়গুলো আলোচনা করেছেন তার মুল কথার একটি ছিলো - আল্লাহ অজ্ঞেয় - তাকে জ্ঞান দ্বারা জানা যায় না - কেবল বিশ্বাস স্থাপনই তার একমাত্র উপায় - পবিত্র কোরআন শরীফ শুরু হয়েছে - ' এই গ্রন্থ বিশ্বাসীদের জন্য- ' - এখন কথাটি হলো - যে অনুন্ধানী তাকে কি বিশ্বাস আনতে হবে কিনতু- আর বিশ্বাসই যদি করবো তবে আমি অনুন্ধান করবো কেন - বা তার সাথে যুক্তি করবো কেন ?- কোরআনকে বিজ্ঞানসম্মত প্রমান করার জন্য অনেকগুলো বই লেখা হয়েছে - যেটির কোন প্রয়োজনই হয় না। - কারন আল্লাহ সর্বশক্তিমান - এই কথাটি মানলে বিজ্ঞানের ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় না.. কারন তার ইচ্ছা বৈজ্ঞানিক সত্যের চেয়েও ধ্রুব - তাই বিশ্বাসের পথ আর যুক্তি বিজ্ঞান এর পথ ভিন্ন। এটি আসলে পদ্ধতির ভিন্নতা। দুই পদ্ধতিতে দৃষ্টিটাই ভিন্ন থাকে।

এ নিয়ে আলোচনা কখনও এক বিন্দুতে মিলবে না। বিশ্বাস নিশ্চিতভাবেই অসত্তিত্বকে প্রকাশ করে। একটি ছবি আছে - দ্য আই- সেখানে এক্সিডেন্টের কারনে একজন- মাথায় আঘাত লেগে একটা সমস্যার মধ্যে পড়ে - এরপর থেকে সে বাতাসে মৃত আত্মাদের দেখতে পায় - আত্মাগুলো সবাই তার পূর্ব-পরিচিত - কেউ আত্মীয় কেউ প্রতিবেশী - সমস্যা হলো ছবিটা দেখার পর আমাদের ভূতে অবিশ্বাসীর দলের কেই একা একা রান্নাঘরে পর্যন্ত যায় না - কারন সবার কারো না কারো চেনা জনের মৃতু্যর অভিজ্ঞতা ছিলো.... আসলে বলতে চাইলাম - বিশ্বাস শুধু কথা বলায় না চোখেও দেখায়... ...অতএব বিশ্বাসীরা অবশ্যই ওই প্রশ্নের উত্তর পেতো ... কিন্তু বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে কিংবা যুক্তি আলোচনার ক্ষেত্রে তো অনুমান একটি উপাদান হলেও বিশ্বাস কতটুকু গ্রাহ্য? তাই এই আলোচনাই বাতুলতা। বিশ্বাসীরা পাবে আর অবিশ্বাসীরা অন্য কিছু দেখবে এটাই সাধারন কথা _ আস্তমেয়ের পঞ্চম বাক্যটি আমাদের ইস্কুলের রহমান স্যারের কথা মনে করিয়ে দিল। অনেক উপর থেকে - ঠিক বাবা নয় কারন বাবার সাথেও গাইগুই করা চলে কিন্তু স্যারের সাথে ..উহু ,.. কথা মানা না মানা, যুক্তি বিজ্ঞান সত্যি মিথ্যে কোনকিছুই বড় ব্যাপার না -এই টোনের এগইনস্টে সব স্টপ! .. .. আস্তমেয়ের ষ্ষ্ঠ বাক্যটি ইতিহাসের সেরা শিক্ষকটির বেশ ছোয়া আছে ... অবশ্য ঠিক স্যার সুলভ গাম্ভীর্যতা আস্তমেয়ে আর বজায় রাখেন নি.. ঈশপের গল্প ব্যবহার করে বন্ধুকে একটু ভয় দেখানোর চেষ্টা করার মজাটা অক্ষরগুলোর মধ্যে আছে।

আর এখানেও একই কথা .. এর জবাবে আর একটি ঈশপীয় গল্প হলে জমতো .. কিন্তু আমার ইচ্ছা হচ্ছে জিবরান এর কাছে যাবার। দুই পন্ডিত - একজন অবিশ্বাসী এবং একজন বিশ্বাসী - এই দুই-পন্ডিত সারাদিন ধরে নিজেদের মধ্যে তর্ক করলেন। দিন শেষে অন্ধকার নেমে আসলে দুইজনই ফিরে গেলেন তাদের নিবাসে। তারা সারারাত ভাবলেন - পরদিন অবিশ্বাসী পন্ডিত গেলেন প্রাথনাসভায় - তার দুচোখ বেয়ে তার অশ্রু ঝরছে ... তিনি স্রষ্টার কাছে ক্ষমা চাইলেন তার অজ্ঞানতার জন্য আর বিশ্বাসী পন্ডিত... তিনি সারারাত ধরে ভেবে দেখলেন অবিশ্বাসী পন্ডিতের যুক্তি গুলোই ঠিক - তিনি চললেন আগুণের কাছে... সব ধর্মগ্রন্থগুলো পুড়িয়ে দিতে --- যে কোন আলোচনায় মুক্তবিচার এর উপস্থিতি থাকলে যে কোন আলোচনা একটি নতুন মাত্রা দিতে পারে... আস্তমেয়ে .. যদি সেই মুক্ততা থাকে আপনাকে আপনার দ্বিতীয় বাক্যটির উত্তরে আমার সমজন মান্য করে বলছি ( ছোটবোনের বান্ধবীকে নয়) - হ্যা - এখনও আমি পথ চলছি - আপনি কি চলছেন না ? .. আশা করি উত্তর পাবো... আচ্ছা আমিও একটু দুষ্টুমী করি (একটা কৌতূক) রেগে গেলে ক্ষমা করে দিতে হবে .... এক গ্রাম - সেখানে কেউ কখনো বাইরে যায় নি_ এক লোক গ্রাম ছেড়ে প্রথম বের হলো.... যেতে যেতে সে হটাৎ সে শুনতে পেল এক আশ্চর্য্য শব্দ। সে মুগ্ধ হয়ে কাছে গিয়ে দেখলো একজন লোক এক অদ্ভুত যন্ত্র দিয়ে এই আশ্চযর্্য বাজনা বাজাচ্ছে - জিজ্ঞাসা করে জানলো এটা বেহালা- সে একটা বেহালা কিনে কোনভাবে কিভাবে ছড় টানতে হয সেটা শিখে গ্রামে ফিরে এলো - লোকদের সে শুনালো এই আশ্চর্য্য যন্ত্রের শব্দ।

লোকেরা তাকে ধন্য ধন্য ধন্য করলো। কিছুদিন একই সুর শুনতে শুনতে তারা ক্লান্ত হয়ে গেল কিন্তু এই আজব যন্ত্র নিয়ে কোন বিরূপ কথা বলতে সাহস পেল না। এর কিছু দিন পর গ্রাম এ এলো বাজিয়ে তার সুরের ওঠা নামা - সুরের বৈচিত্র শুনে লোকেরা মুগ্ধ... তারা গিয়ে তাদের বাজনাদারকে বললো - তুমি কেমন বাজাও - একইভাবে... ঐ বাজিয়ের সুর কেমন ওঠা নামা করে... বাজনাদার উত্তর দেয় আরে ও তো খুজছে ঠিক কোথায় ছড়টা টানতে হয়... এই কারনে সে ছড় এদিক সেদিক করে.. আর আমিতো পেয়ে গেছি সেই উত্তর ... তাই আমি ওর মতো বাজাই না... ...পেয়ে যাওয়া আর না পেয়ে যাওয়া এই দু দলের মধ্যে আমি না পাওয়ার দলে... আমি খুজছি .... খুজে চলেছি ...(এই বিষয়ে আগ্রহলে শেষপর্যন্ত আল্লাহ ... টোষ্টটা পড়ে দেখতে পারেন) ...আপনার পথ জানা থাকলে সেই পথে জানার কিছু থাকলে সেখানেও চলতে আমার বাধা নেই....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।