আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছবিওয়ালা: পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান 2

পুষ্প, বৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ

জনি ডেপ একটা নায়কই বটে! সিনেমার মূল চরিত্র হয়েও প্রতি মূহুর্তে দর্শকদের ভীষনরকম বিরক্ত করে। পুরো ছবিতে অনর্গল মিথ্যে বলে যায়, নিজের স্বার্থে। বেশ কয়েকবার বিশ্বাসঘাতকতার অ্যাটেম্পট নেয়, তার বেশির ভাগ সফলভাবে সম্পাদন করে ছবির অন্য মূল চরিত্ররা দর্শকদের সাথে একাত্ম হয়ে তার উপর বিরক্ত হয়, বিশ্বাসভঙ্গের শিকার হয়ে হতাশ হয়, এবং এত কিছুর পরেও তার প্রতি অনুভব করে একটা অদ্ভূত টান, যেটাকে ভালোবাসা নাম দেয়া যায়। (এই জায়গাটায় আমিও ছিলাম, তবে আপনারা সেরকম অনুভব করবেন কিনা সেটা আপনাদের ব্যাপার। ) হুমমমম! ক্যাপ্টেন স্প্যারো এবার বের হয়েছে ডেড ম্যান'স চেস্ট খুঁজতে।

সেই চেস্টের ভেতর রাখা আছে সাগরের ত্রাস ডেভিড জোন্সের হৃদয়। ঐ হৃদয় যার হাতে এসে পড়বে, সাগরের আধিপত্য চলে যাবে তার হাতে। জনি ডেপ ছাড়াও সেই হৃদয়ের উপর চোখ পড়েছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর। ( এই জায়গায় এসে আমার সিক্স সেভেনে পড়া ইতিহাস বইগুলোর কথা মনে পড়ে গেলো। দারুন মিলে গেছে এখানে।

আমাদের ইতিহাস বইয়েও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীকে দেখিয়েছে ভিলেন হিসেবে, এখানেও তাই। ) সেই কোম্পানী নায়িকাকে বন্দি করে নায়ককে জোর করে পাঠায় ক্যাপ্টেন স্প্যারো কে ধরে নিয়ে আসতে, এবং সেই সাথে ডেভিড জোন্সের হৃদয়। ছবির কাহিনি মূলত এটাই। আরে নাহ, পুরাটা বলি নাই। মজা নষ্ট করে দিব নাকি আপনাদের? মাথা খারাপ! অর্থাৎ , এটাকে মুল ধরে কাহিনি এগিয়ে গেছে সিনেমার।

পুরো ছবিতে দেখার আছে অনেক কিছু। ডেভিড জোন্সের গা শিউরানো চেহারার মৃত জাহাজের আজব সব ক্রু। অক্টোপাসের রক্ত ঠান্ডা করে দেয়া হামলা। বেশ কয়েকটি কমেডিসুলভ মারামারি। এবং অবশ্যই জনি ডেপের অদ্ভূত স্টাইলে হাঁটা, আর তার চেয়েও অদ্ভূত ভাবে কথা বলা।

একটা অন্যতম মজার দৃশ্য হতে পারে, হুট করে জংলীদের রাজা বনে যাওয়া, এবং খানিক পরে সেই জংলীদের হাত থেকে বাঁচার জন্যেই জনি ডেপের প্রাণপণ দৌড়! যেহেতু এটা সেকেন্ড পার্ট, তাই প্রথমটার সাথে তুলনা এসেই পড়ে। সেদিক দিয়েও এ ছবিটা ভীষন ভালো হয়েছে। প্রথম ছবি দেখার পর এটা নিয়ে যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, সেটা নি:সন্দেহে মিটিয়েছে ডেড ম্যান'স চেস্ট। আড়াই ঘন্টা সময়, ইংরেজি ছবির জন্যে দীর্ঘই বলা চলে। কিন্তু তার প্রতিটি সেকেন্ড উপভোগ্য হয়েছে অনবরত হিউমার, মজার সব অ্যাকশন, কয়েক চিমটি সিরিয়াস ভাংচুর এবং একটা টানটান কাহিনির জন্যে।

যারা এখনো দেখেন নি, দেরি করবেন না। খুব তাড়াতাড়ি টিকেট কেটে উঠে পড়ুন ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারোর জাহাজে। মনে রাখবার মতন একটা অভিযান হবে এটা, সন্দেহ নেই। ----------------------

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।