যারা উত্তম কে উচ্চকন্ঠে উত্তম বলতে পারে না তারা প্রয়োজনীয় মুহূর্তে শুকরকেও শুকর বলতে পারে না। এবং প্রায়শই আর একটি শুকরে রুপান্তরিত হয়।
মেয়াদ শেষের গান
আমি যেখানেই যাই, সেখানে, সেই ঝুলন্ত অনিবার্যতার বিলবোর্ডে লেখা থাকে
মেয়াদ উত্তীর্ণের নিশ্চিত চিত্রগাঁথা
আমি যেখানে যাই, যেখানে শুই, যেখানে গড়াগড়ি দেই, সেই বিপণ্ন বিছানাতেও দেখি
মেয়াদ উত্তীর্ণের মূর্ত ছবি আঁকা
আমি যেখানে বসি, বসে বসে অলস বিকেল গুনি, কখনো প্রেমিকার সমুদ্র কন্ঠ থেকে
নতুন সিনেমার হালকা গুনগুন শুনি, সেখানে ভেসে বেড়ায়
মেয়াদ শেষের তী্ন বলিরেখা
তোমরা যারা আমাকে চেন, কখনো অবসরে আমার কবিতা শোনো, তোমাদের অবচেতন
উৎকন্ঠায় দেখতে পাই মেয়াদ ফুরোবার কান্ত দীর্ঘশ্বাসের রেখা
তোমরা যারা আমাকে বহিরস্থিত বলে জান, যারা ভেতরে ভেতরে নিজেদেরও আগুন্তক
হিসেবে মানো, তোমাদের নি:শঙ্ক দৃষ্টিতেও মেয়াদ উত্তীর্ণের সরল পথটুকু বাঁকা
তোমরা যাদের আমি ভালোবাসি, সুযোগ পেলেই যাদের কাছাকাছি চলে আসি
তোমাদের ঘনিষ্ট পাশ্বর্েও দেখি মেয়াদ শেষের কান্ত বসে থাকা
তুমি যাকে আমি পছন্দ করি, যাকে নিয়ে রাতভর শুয়ে প্রজন্মের শূণ্যতা পূরণ করি,
সেই তোমার দেহেও মেয়াদ উত্তীর্ণের উল্কার ছাপ মারা
তুমি যাকে আমি অর্জন করেছি যৌবনের সবটুকু বিষ ঢেলে, যে একদা কথা দিয়েছিলে
কখনো যাবেনা ছেড়ে চলে, তোমারও সংলগ্নতায় মেয়াদ শেষের অপারঙ্গম দলিল লেখা
তুমি যাকে দেখে মনে হয়েছিল পাওয়া হয়ে গেছে সব, অপ্রাপ্তির শীৎকারেরা আর কখনোই
তুলবেনা রব, সেই তুমিও দেখি মেয়াদ শেষের এলুমিনিয়াম ফয়েলে ঢাকা
আমি কালে কালে যেখানে জন্মাই, যেখানে নিমগ্ন বসে মেয়াদ ফুরোবার গান গাই সেই
পঙ্কিল পদ্মে দেখি মেয়াদ শেষের শঙ্খ শোনানো সবুজ ব্যঙের বসে থাকা
আমি যে গৃহে মৃতু্য গ্রহণ করি, যে শয্যায় নিভু নিভু হয়ে অবশেষে পরাজিত
হতে হতে মরি, সেই স্বপি্নল চাদরেও দেখি মেয়াদ শেষের বিনম্র কবিতা লেখা
আমি যার মরে যাওয়াকে বারবার অর্থপূর্ণ করে বেঁচে ওঠার নতুন আশা, যে প্রতিবার
জন্মেই খুজে ফেরে মৃতু্যর নতুন বাসা, সেই আমার দেহের
কৃষ্ণ দেয়ালেও দেখি মেয়াদ শেষের
ফাংগাসের গজে ওঠা
তোমাকে যাকে আমি নিরন্তর খুঁজে ফিরি, যার প্রত্যাশায় আমি সৌন্দর্য ফেরি করি, সেই তুমি
চলে গেছ শতাব্দীর শেষতম কবিতা লিখে
তোমাকে যাকে আমি জেনে এসেছি প্রথমতম বৃষ্টির সাথে, রবীন্দ্র পেরিয়ে বুদ্ধদেব সুধীনের পথে
সেই তুমি চলে গেছ রসদ শেষ করে নি:শেষের রেশ রেখে
তোমাকে যাকে আমি যাপন করি অস্তিত্বের প্রতিটি কণায়, যাকে আমি বোধ করি অনন্য অসাধারণের
অভাবিত সৌন্দর্যের ঘষায়, সেই তুমি আজ ফিরে ফিরে আসো পঙ্গু প্রত্যাবর্তণের
অনাকাঙ্খিত কালিমা মেখে
সত্য যাকে কখনই মনে হয়নি আমার সুনিশ্চিত প্রতিবেশী, যার মুখে কখনই দেখিনা আমি
প্রিয় পরিচিতের হাসি, সে এখন উদিত হয় প্রতিটি ব্যার্থ ভোরের পরে
সত্য যার নির্বোধ স্নেহে কখনো তৃপ্ত নয় আমার কৈশোর, যার নির্বিকার দন্ডে আশ্রিত নয়
আমার কবিতার ভোর, সে এখন চৌরাস্তায় পরে থাকে নি:শেষের সাথে মরে
সত্য যে এখনো আমার কাছে নিতান্তই হাহাকার, যে গতিহীনতায় আটকে যাওয়া
ব্যার্থ চিৎকার;
সে এখন গন্ধ ছড়ায় আমার সড়কের প'রে
আমি যার আর মেয়াদ বলে কিছু নেই, যে অনিবার্যতার বিলবোর্ড দেখতে দেখতে একদিন ফুরোবেই,
এখন যাপণ করি এক অকর্মণ্য অবসর
আমি যে কেন জন্মেছিল আর জানেনা এখন, যে অবসরে বয়ে বেড়ায় মেয়াদ উত্তীর্ণের মন,
এখন বুক-বোধীর অন্তস্থলে অনুভব করি এক শূণ্য খরখর
আমি যে বুকে বয়ে বেড়ায় এক বিপণ্ন ভয়, যার রক্তে লেখায় এখন কেবলই ত্রস্ত
য়,
এখন শুকনো পাতায় শুনতে পাই ধেয়ে আসা মেয়াদের মড়মড়
অর্থাৎ আমি এখন জংধরা মেয়াদ উত্তীর্ণ কেউ, বসে বসে চিবুচ্ছি ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া জাউ
অর্থাৎ সামনের পথটুকু কেবলই শূণ্য মহাকাল, পথে বিছিয়েছে সৃষ্টিহীনতার জাল
অর্থাৎ মেয়াদ নিয়ে মাথা ঘামাবার কোনই প্রয়োজন নেই,
অর্থাৎ সময় অনেক হল জীবন আর কবিতা একদিন ফুরোবেই
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।