আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এবার কি তবে সেক্সুয়ালা বা যৌন জিহাদ?

চলতাছে আরকি

গত ২/১ এক দিন ধরে আন্তর্জালিক জগতে এবং মিডিয়ায় ঝড় বয়ে যাচ্ছে সেক্সুয়াল জিহাদ বা যৌন জিহাদ নিয়ে। বিষয়টা আরো বেশ কিছুদিন আগে আমি দেখেছিলাম মিশর-প্রসংগে। তখন ভেবেছিলাম বিষয়টা নেহাতই একটা কৌতুক। এখন দেখছি ব্যপারটা অনেকদূর গড়িয়ে গেছে। এবং বুঝলাম, আল্লা মুসলমানদের যে পরিমান নেয়ামত দিয়েছেন, তাতে সবই সম্ভব।

এ নিয়ে নেট-এ কিছুক্ষণ ঘাটাঘাটি করার ইচ্ছা হল-- আর যাই হোক ভাইয়েরা, যতই অস্বীকার করেননা কেন, ব্যপারটাতো রসালোই , কি বলেন। ্দুদিন আগে প্রথম আলোর অনলাইনে বিষয়টা ছাপা হয়েছে। শিরোনাম- "সিরিয়ায় যৌন জিহাদ করছে তিউনিশিয়ার নারীরা"। ডেইলিস্টার, বিডিনিউজ- এরাও দেখি আছে। পরে দেখি আল আরাবিয়া, হাফিংটন পোস্ট এবং আরো প্রচুর সাইটে খবর আছে- এমনকি পাকিস্তান ডিফেন্স ব্লগেও দেখলাম।

লিংক দিলাম না। আপ্নারা খুজে নেন। বুঝলাম, শহীদ হয়ে বেহেস্তে গিয়ে যে ৭২ টা হুর পাওয়া যাবে, সে পর্যন্ত আর মুজাহীদিনরা ওয়েট করতে পারছেনা। কিছু কিছু এডভান্স হিসাবে এই দুনিয়াতেই দরকার। তা নইলে তাদেরকে উদ্ধুদ্ধ করা যাচ্ছে না।

শেখ মোহাম্মমদ আল আরিফি সাহেব ফতোয়া দিয়েছেন যে, মুজাহিদদের মনোবল অটুট রাখতে মুসলিম নারীরা যাতে তাদেরকে যৌন সেবা দিয়ে তাদের মনোবল অটুট রাখেন। সুভানাল্লা। উইকি জানাচ্ছে যে, এই শেখ আরিফি যে সে লোক নয়। উনি সৌদি নেভির কিং ফাহাদ ইন্সটিটিউটের মসজিদের ইমাম এবং তার বই মধ্যপ্রাচ্যে বেশ জনপ্রিয়। আরেকটি সংস্থা জানাচ্ছে জেহাদি (প্রকৃত) মুসলিমগ্রুপগুলোর উপর তার ভালোই প্রভাব আছে।

তিনি একবার লন্ডনে গিয়ে বলেছেন শিয়ারা হল "ইভিল"। নাছারা দেশ সুইজারল্যান্ডে তাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। (হবেই তো, নাছারা রা তো ইসলামি পন্ডিতদের দেখতে পারে না) আরিফি সাহেব গত বছর আরেকটি ফতোয়া দিয়েছিলেন। উনি বলেছিলেন, সিরিয়ার বিদ্রোহীরা ইচ্ছা করলে সিরিয়ান নারীদের ভোগ করতে পারবে- কারন তারা হল আল্লার সৈনিক এবং এই নারীরা হল মাল-এ গনিমত। আলহামদুলিল্লাহ।

তো সারা দুনিয়ার ব্রাদারহুডের ভাইরা এই ফতোয়ায় যার পর নাই খুশি। তারা তিউনিশিয়া থেকে ডজন ডজন নারী সেক্সুয়াল জেহাদিকে সিরিয়ায় নিয়ে আসেন। তিউনিশিয় মন্ত্রীর ভাষ্য অনুযায়ি, এই নারীরা ৩০-১০০ জন জেহাদিকে তাদের 'সেবা' দিয়ে মনোবল অটুট রাখতে সাহায্য করেছেন। ইরানের ফারস নিউজ (নামটা সত্যিই ইংরেজি ফার্স-এর মত) চেচনিয়া থেকেও ৯০ জন মুসলিমাকে এই মহান দায়িত্বে আনা হয়েছে। ঘাটতে ঘাটতে পাইলাম, কয়েকবছর আগে, তালেবানও এমন একটা ঘোষণা দিয়েছিল।

তারা বলেছিল ইসলামের জন্য যারা শহীদ হয়ছেন, সেই সব যোদ্ধাদের বিধবা স্ত্রীরা যেন নতুন নতুন যোদ্ধাদের মনোবল অটুট রাখতে 'সেবা' দিয়ে যায়। মারহাবা। তবে মিশরের কাহিনী কিন্তু ছিল অন্যরকম। এই যেহাদে আবার স্ট্র্যাটেজি ছিল অভিনব। এখানে মনোবল অটুটের জন্য নয় বরং মুরসি-বিরোধীদের মুরসি-পন্থী (ব্রাদারহুড) বানানোর জন্যি সেক্সুয়াল জিহাদের কথা বলা হয়েছিল।

অর্থাৎ, মুসসি-পন্থী হও তাহলে আমার শরীর পাবে। তবে শেষ পর্যন্ত এই জেহাদ কার্যকরী হয়নি বলে আমরা অনেক মুসলিম নারীর বিরত্ব গাথা পড়া থেকে বঞ্চিত হলাম। তাছাড়া আপনারা জানেন যে, বর্তমানে ইসলামের একমাত্র সুপার পাওয়ার ইরানে কিছুদিন আগে মুতা বিবাহ হালাল করা হয়েছে। এতে করে আপামর ইরানি তথা তৌহিদি জনতা বেশ উপকৃত হচ্ছে বলে আমার বিশ্বাস। আসলে মহানবীর মালে গণিমত এর আমল থেকে, আজকের সেক্সুয়াল জিহাদ কিংবা তেতুল তত্ব খুব আলাদা কিছু নয়।

কিংবা কিছুদিন আগে ইরানের মুতা বিবাহের যে লিগালাইজেশন করা হল- এগুলো সবই ইসলামের শান্তির অনন্ত বার্তা বয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ। উসমানের আমল থেকে আজ পর্যন্ত কোরান যেমন অবিকৃত আছে, তেমনি আবিকৃত আছে মুসলিম মানস- সুভানাল্লা। এরকম খবরে আমাদের দেশের মডারেট মুসলিমদের প্রতিক্রিয়া স্বাভাবিক ভাবেই দুরকম। ১।

এগুলো ইসলামের বিরুদ্ধে পশ্চিমা ষড়যন্ত্র (কে জানে পশ্চিমেও বোধহয় বাশেরকেল্লায় ভরপুর, খালি ষড়যন্ত্র পাকায়) ২। এটা প্রকৃত ইসলাম নয়। মোল্লারা ইসলামকে ধ্বংশ করছে। দুপক্ষের বক্তব্য দেখি আর হাসি। যদি প্রকৃত ইসলাম না হয় তাহলে পশ্চইমা ষড়যন্ত্রের ভয় কেন? যাই হোক, দুনিয়ায় অনেক কিছু ঘটে যাচ্ছে।

কষাই কাদেরের ফাসিতে মুষড়ে পড়া ছাগুদের মনোবল অটুট রাখতে ইসলামি ছাত্রী সংস্থার সদস্যারা কি করছে? কিংবা শাহাবাগী নাস্তিকদের ইসলামের সোল এজেন্ট শিবিরে ফিরিয়ে আনতে কি ছাত্রী সংস্থা যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারেনা? তিউনিশিয়ার, চেচনিয়ার, ইরানের ইমানদার মেয়েরা পারলে তুমরা কেন পারবে না? বিদ্রঃ উইকি তে দেখলাম জামাতকে বলা হয় দক্ষিণ এশিয়ার ব্রাদারহুড।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.