আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মনটা খারাপ , কিভাবে ভালো করতে হয় জানি; কিন্তু সেটা করতে মন চাচ্ছে না

Never lose hope...., Never Stop Expedition....

মনটা অনেক খারাপ হয়ে আছে। নানা কারণে এই মন খারাপ হওয়া। আজ একটা মিডটার্ম পরীক্ষা ছিল। ম্যাডাম ইচ্ছা করে আমাদের জন্য একটা ফালতু টাইপ প্রশ্ন তৈরি করেছেন। যেখানে আমরা ১০ মার্কসে ১ ঘণ্টা সময় পাই, সেখানে ১৭.৫ মার্কসের জন্য মাত্র ৫৫ মিনিট! উনি যেন পণ করেই নেমেছেন যে আমাদের ফাইনাল গ্রেডটা খারাপ করে দিবেন।

আমাকে হয়তো এই সাবজেক্টে ৮০ পাওয়ার আশা ছেড়েই দিতে হবে। এখন ফাইনাল এক্সামে যদি অতিমানবীয় কিছু করে দেখাতে পারি তো একটু আশা আছে সলতেতে। আমার একটা বিষয় অবাক লাগে। আমাদের এই ম্যাডামের কোন সন্তান নেই। ডাক্তার বলে দিয়েছেন যে সামনেও হবার চান্স কম।

ওনার এখন যে বয়স তাতে ঠিক সময়ে ওনার কোন সন্তান থাকলে তার বয়স আমাদের সমান হতো। একদম ঠিক ঠিক আমাদের সমান হতো। উনি কি আমাদের ওনার একেকটা সন্তান ভাবতে পারেন না!!! আমরা ছাত্র হিসেবে যেমন মেধাবী (আল্লাহ্‌ তায়ালার অশেষ রহমতে) তেমনি ভদ্র স্বভাবের। কিন্তু উনি আমাদের সমস্যা কিছুতেই বুঝতে চান না। কাল রাতে (২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩) আব্বা হঠাৎ আমাকে ফোন করেন।

আজ সকালে নাকি আব্বাকে নিয়ে অ্যাপোলো হাসপাতালে যেতে হবে। রুটিন চেকআপ। আমি গেলে ভালো হয়। ভালো তো হবেই। কারণ আমি তার বড় ছেলে, তার উপর আমি বায়ো-সায়েন্সের এমন একটা সাবজেক্টে পড়ি যেখানে কিনা মেডিক্যাল লাইনের অনেক কিছুই আমার বোঝার সীমানার মধ্যে পড়ে যায়।

ম্যাডামকে কাল রাতে ফোন দিলাম। সব খুলে বললাম। কিন্তু উনি আমার সমস্যার দিকে নির্দয় গুরুত্ব দিয়ে সবকিছু ম্যানেজ করতে বললেন!!! আমি ওনাকে জাস্ট একদিন পরীক্ষা পেছাতে বলেছিলাম। কিন্তু উনি...... আজ পরীক্ষা দিলাম। খারাপই হয়েছে বলা যায়।

সকালে নাস্তা করিনি। কাল গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থেকে পড়লাম, আবার ৭টার সময় ঘুম থেকে উঠে পড়তে হল। দাঁতগুলো পর্যন্ত ব্রাশ করতে পারিনি। পরীক্ষা শুরুর কথা সকাল ৯টা থেকে। কিন্তু ম্যাডাম আসলেন ৯টা ১০ এর পরে।

জঘন্য প্রশ্ন করেছেন। হয়তো পরীক্ষা ভালো হয়নি বলেই এমনটা মনে হচ্ছে। আগামীকাল আরেকটা পরীক্ষা। স্যারকে অনুরোধ করতে হবে কালকের পরীক্ষাটা বৃহস্পতিবারে নেওয়ার জন্য। একদিন বিরতি নিতেই হবে।

শরীরে তো আর কুলায় না। আজকের পরীক্ষার জন্য চারদিন টানা পড়েছি। কিন্তু কাল রাতে আব্বার ফোন পেয়ে সব গেছে উলটপালট হয়ে। মাঝে মাঝে মনে হয় সব ছেড়েছুড়ে 'বনবাসে' চলে যাই। আরেকটা কারণে মনটা অফ হয়ে আছে।

আমি জীবনে কতগুলো কাজ এক মুহূর্তের জন্যও করিনি; অথচ তারই একটা দোষে আমি আজ দুষ্ট। আমি জীবনে কখনো কোন পরীক্ষায় নকল করিনি। কিন্তু তারাই আমাকে এই অপবাদ দিয়েছে যারা কিনা প্রায় প্রত্যেক পরীক্ষায় স্মার্টফোন দিয়ে দেদারসে নকল করছে। শুধু তাই না, এই কথাটা বলে তারা এমন একজনের মন ভেঙে দিয়েছে যে কিনা আমাকে অনেক ভালো মানুষ হিসেবে জানতো। অন্তত আমি পরীক্ষায় নকল করবো না এই বিশ্বাস তার ছিল।

কিন্তু কিছু মানুষ যদি ক্রমাগত একটা কথা কারো কানের কাছে বলতে থাকে তো সে কি করবে। তার উপর সে যদি হয় মেয়ে মানুষ। বেচারী এখন আমার সাথে কথা তো বলেই না, ফেসবুকে একটা ম্যাসেজ দিয়েছিলাম তারও রিপ্লাই দেয়নি। পরশুদিন অবশ্য ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভেট করে দিয়েছি। কবে আবার অ্যাক্টিভেট করবো জানি না।

তবে আমার বিশ্বাস ও একদিন আসল জিনিসটা ঠিকই বুঝবে। কারণ আমি তো কখনোই কোনদিনও এক মুহূর্তের জন্যও নকল করিনি এবং করবোও না, ইন শা আল্লাহ্‌। তবে পাশের বন্ধুর খাতা দেখে লিখেছি, যা সবাই করে। সেটাও অনেক কম সময়ের জন্য। আর পাশেরজনেরটা একটু আধটু দেখা আবহমান বাংলার পরীক্ষা সংস্কৃতিরই একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ।

কি বলেন? সামনে আরো খারাপ সময় অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য। সামনে রবিবার একদিনে দুইটা পরীক্ষা পড়ে গেছে। ২০ + ২০ = ৪০ মার্কসের! আমাদের এক স্যার হজ্জে যাচ্ছেন। ওনার ফ্লাইট সামনের মাসের প্রথম দিন। তাই উনি বুধবারের পরীক্ষা রবিবারে নিতে চাচ্ছেন।

ওনার মতে প্রশ্ন অনেক সহজ হবে, সিলেবাস কম। কিন্তু আমি অন্তত জানি প্রশ্ন মোটেও সহজ হবে না, আর সিলেবাস...... তাহলে বলেই ফেলি। রবিবার আমাদের স্ট্যাটিস্টিক্সের উপর পরীক্ষা। আমাদের প্রথম মিডটার্মে যে সিলেবাস ছিল তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা প্রাসঙ্গিক ইন্সটিটিউটের প্রথম বর্ষের চার ক্রেডিটের ফুল সিলেবাস! এখন কি অবস্থা আমাদের একটু চিন্তা করে দেখুন। আব্বা শেষতক ডাক্তারের কাছে গিয়েছেন।

এলাকার কিছু মানুষ আর ছোট মামা সাথে গিয়েছিলেন। কাজ হয়েছে। কিন্তু ছেলে গেলে যে আস্থা বাবা পেতো আর কাজ হতো তা কি আর হয়েছে???? মনে হয় হয়নি। জীবনটা অনেক সময় খুব কঠিন মনে হয়। আমি আমার মন ভালো করতে একটা টেকনিক প্রয়োগ করি।

আজ সেটাও করতে মন চাচ্ছে না। খালি মাঠে কিছুক্ষণ একা একা রোদ্দুরে ঘুরে বেড়ালে খারাপ মন মুহূর্তেই ভালো হয়ে যায় আমার। কিন্তু আজ মনটা ভালো করতে মন চাচ্ছে না। থাকুক না হয় খারাপ হয়ে কিছুক্ষণ। লিখায় ইস্তফা দিতে হচ্ছে।

ডাইনিঙে খেতে যেতে হবে। পেট চোঁ-চোঁ করছে। পরীক্ষার পর চিনি বেশী দেওয়া আদা মেশানো রঙ চায়ে বিস্কুট ডুবিয়ে ডুবিয়ে কোনরকমে সকালের নাস্তা সেরেছিলাম।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।