আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঊনিশ শতাব্দীর প্রখ্যাত উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিল্পী ওস্তাদ গুল মোহাম্মদ খাঁ এর ৩৪তম মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি

আমি সত্য জানতে চাই
প্রখ্যাত উচ্চাঙ্গ কণ্ঠ শিল্পী ওস্তাদ গুল মোহাম্মদ খাঁ। জন্মসূত্রে ভারতীয় হলেও ৩৫ বছর বয়সে সপরিবারে তিনি ঢাকা চলে আসেন এবং স্খায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এর পর আমৃত্যু তিনি ঢাকা বেতারের নিয়মিত শিল্পী ছিলেন এবং সঙ্গীত শিক্ষকরূপে এই বেতারের সাথে দীর্ঘকাল যুক্ত ছিলেন। ঢাকায় উচ্চাঙ্গসঙ্গীত বিস্তারে ও বিকাশে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেন এই সঙ্গীত সাধক। তিনি উচ্চাঙ্গসঙ্গীতের একটি শিক্ষাকেন্দ্র ও আসর চালু করেন।

সঙ্গীতে অবদান রাখায় বাংলাদেশ সরকার তাঁকে একুশে পদকে ভূষিত হন। ১৯৭৯ খ্রীস্টাব্দের ২৯ সেপ্টেম্বর তিনি ঢাকায পরলোকগমন করেন। আজ এই গুণী শিল্পীর ৩৪তম মৃত্যুদিন। মৃত্যুদিনে তাঁকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধায়। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিল্পী ওস্তাদ গুল মোহাম্মদ খাঁ ১৮৭৬ সালে ভারতের বিহারের তিরহুত শহরে জন্মগ্রহণ করেন।

তবে তাঁর কৈশোর কেটেছে ভারতের পাটনা শহরে। গুল মোহাম্মদ খাঁ এর পিতার নাম ওস্তাদ আহমদ খাঁ। পিতার কাছেই সঙ্গীতে হাতেখড়ি ওস্তাদ গুল মোহাম্মদ খাঁ এর। দীর্ঘ আট বছর ধ্রুপদ ও খেয়াল অনুশীলন করেন তিনি। পিতার মৃত্যুর পর পিতৃব্য ওস্তাদ হায়দার বকসের কাছে তিনি সঙ্গীতের তালিম গ্রহণ করেছিলেন।

পিতা ও পিতৃব্যের কল্যাণে ডাগর ঘরানা বা ডাগরবাণীতে ধ্রুপদ ও খেয়ালে অসাধারণ দক্ষতা অর্জন করেন। ব্যক্তিগত জীবনে ২০ বছর বয়সে ওস্তাদ গুল মোহাম্মদ খাঁ মথুরা-বৃন্দাবনের মুরসান গ্রামের চান্দ খাঁর কন্যা সাকুরান বিবির সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এর পরে তিনি সপরিবারে ঢাকা আসেন এবং স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। উপমহাদেশের বিভিন্ন সঙ্গীত জলসায় অংশ নিয়ে প্রশংসা অর্জন করেছেন ওস্তাদ গুল মোহাম্মদ খাঁ। ওস্তাদ মুনশী রইসউদ্দীন, দিপালী নাগ, রানী সোম, লায়লা আর্জুমান্দ বানু, ফেরদৌসী রহমান, রওশন আরা, উৎপলা সেন প্রমুখ খ্যাতনামা কণ্ঠশিল্পী তার কাছে খেয়াল শেখেন।

১৯৩১ সালে ঢাকা বেতার কেন্দ্রের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে পুরিয়া রাগে খেয়াল পরিবেশন করেছেন তিনি। ঢাকা বেতারের নিয়মিত শিল্পী ছিলেন। সঙ্গীত শিক্ষকরূপে ছিলেন এই বেতারের সাথে দীর্ঘকাল যুক্ত। পুরিয়া মালকোশ, পুরিয়া বানেশ্রী, মুলতানি এগুলোই ছিল তার প্রিয়তম রাগ। সঙ্গীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ওস্তাদ গুল মোহাম্মদ খাঁ ১৯৫৫ খৃস্টাব্দে বুলবুল ললিতকলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন এবং ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের একুশে পদকে ভূষিত হন।

এছাড়াও ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী তাঁকে স্বীকৃতি সংবর্ধনা দেয়। প্রখ্যাত উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী ওস্তাদ গুল মোহাম্মদ খাঁ ১৯৭৯ খ্রীস্টাব্দের আজকের দিনে ঢাকায পরলোকগমন করেন। আজ এই গুণী শিল্পীর ৩৪তম মৃত্যুদিন। মৃত্যুদিনে তাঁকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধায়।
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।