আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একতরফা নির্বাচন?

সংবিধান অনুযায়ী তারিখ ঘনিয়ে এলেও নির্বাচনের ব্যাপারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপির মধ্যে সমঝোতার কোনো লক্ষণ নেই। ফলে দেশবাসী নির্বাচন নিয়ে মহা অনিশ্চয়তায় আছে। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনের প্রস্তুতি দেশকে গভীর সংকটে ফেলে দেবে সন্দেহ নেই।
কয়েক মাস ধরে সংলাপ নিয়ে দুই পক্ষের বাগাড়ম্বরের পর এখন ক্ষমতাসীন দল বিএনপিকে বাদ দিয়েই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবরে জানা যায়। খবর অনুযায়ী আওয়ামী লীগের নেতারা বিরোধী দলকে নির্বাচনে আনার বদলে ভোটকেন্দ্রে ৫১ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করার কথা ভাবছেন।

অন্যদিকে বিএনপি ও তার সমর্থিত ১৮-দলীয় জোট ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, তারা দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না এবং নির্বাচন করতেও দেবে না। সে ক্ষেত্রে সংঘাত অনিবার্য।
প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন নিয়ে দেশে কোনো সংকট না দেখলেও দেশের গরিষ্ঠসংখ্যক মানুষ মহাবিপর্যয়েরই আশঙ্কা করছেন। আওয়ামী লীগের নেতারা কথায় কথায় বিরোধী দলকে স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের দোসর বলে আখ্যায়িত করে থাকেন; গণভিত্তি নেই বলে তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন বানচাল করারও অভিযোগ আনেন। তাহলে কেন তাঁরা বিরোধী দলকে ভয় পাচ্ছেন? কেনই বা একতরফা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে চাইছেন? বিগত নির্বাচনের হিসাব মাথায় রাখলেও বিএনপি ও তার শরিকেরা ৩৭ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে।

এই বিপুলসংখ্যক ভোটারকে বাইরে রেখে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আদৌ সম্ভব হবে কি না, তা-ও ভেবে দেখার বিষয়।
নির্বাচন হলো সবার মধ্য থেকে প্রতিনিধি বাছাইয়ের একটি অবাধ প্রক্রিয়া। কিন্তু সেখানে সেই বাছাই প্রক্রিয়া থেকেই যদি দেশের একটি বড় দল ও তাদের সমর্থকদের বাদ দেওয়া হয়, তাহলে সেই নির্বাচন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্যতা পেতে পারে না। তাই, একতরফা নির্বাচনের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে সবার অংশগ্রহণে এবং সবার জন্য গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির কথাই ক্ষমতাসীনদের ভাবতে হবে। সরকারি দল বলছে, সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগ নেই।

কিন্তু তারা সংবিধানের মধ্যেই একটি সমাধানের সূত্র খোঁজার চেষ্টা করছে না কেন?
প্রধান বিরোধী দলকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করা হলে তা দেশের ভেতরে-বাইরে কারও কাছেই গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। ১৯৯৬ সালে এবং ২০০৬-০৭ সালে বিএনপি যে ভুল করেছিল, ২০১৩-১৪ সালে এসে আওয়ামী লীগ সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি করবে না বলেই আমাদের বিশ্বাস।
দেশ পরিচালনা থেকে রাজনৈতিক নেতৃত্ব অনেক আগেই বিরোধী দলকে বাদ দিয়েছেন, এখন নির্বাচন-প্রক্রিয়া থেকেও তাদের বাদ দেওয়া হলে গণতন্ত্রের অবশিষ্ট বলে কিছু থাকবে না।
আশা করি, ক্ষমতাসীনদের বোধোদয় হবে এবং তারা অবিলম্বে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনায় বসে সবার জন্য গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে উদ্যোগী ভূমিকা নেবে।



সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।