আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ল্যাপটপ ভালো রাখার অন্যতম কিছু টিপস

ল্যাপটপ প্রেমিকরাই বেশি ল্যাপটপ ব্যবহার করেন। হতে পারে সেটা শখের কিংবা কাজের বা অন্য কোন প্রকারের। অনেকেই বলেন এমন যে, নতুন ল্যাপটপ কিনলাম কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই আমার শখের ল্যাপটপ বা কাজের জিনিসটা সার্ভিসিং ঘরে চলে গেল। আসলে এটা আপনারই ভুল। ল্যাপটপ কখনোই রাফভাবে ব্যবহার করবেন না।

কারন এটি কখনোই রাফ ইউজের জন্য নয়। আর আপনার কিছু ছোট খাট ভুলের জন্যই আপনার জিনিসটার অবস্থার অবনতি হয়। তাই কিছু টিপস দিলাম যা আপনি লক্ষ্য করে সেভাবে কাজ করলে আশা করি, আপনার ল্যাপটপকে দীর্ঘদিন যাবত অনায়াশে ভাল থাকতে সক্ষম।
অনেক সময় এমন ও হতে পারে যে উপরোক্ত কাজগুলো অনুসরন করেও আপনার কোন কাজে আসলো না। সে ক্ষেত্রে সেটা আপনার ল্যাপটপ এর যন্ত্রাংশ বড় কোন সমস্যা থাকতে পারে।

আমি শুধু প্রাথমিক ধারনার টিপস্ গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম, যা আপনার প্রিয় জিনিসটার কিছু হলেও কাজে আসবে। তো আসুন দেখে নেওয়া যাক ট্রিক্সগুলি কি?
যতনে রাখি যন্ত্র:
ঝামেলা ছাড়াই দীর্ঘদিন একটি ল্যাপটপ ব্যবহার করার জন্য নিয়মিত যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। ল্যাপটপে কোনো ত্রুটি ধরা পড়ার পর সেটি মেরামত করতে হবে। তবে আগে থেকে সতর্ক থাকলে অনেক ক্ষেত্রেই এসব সমস্যা এড়িয়ে চলা সম্ভব।
অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করা:
কম্পিউটারে অবশ্যই একটি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করা উচিত।

হয়তো কম্পিউটার ব্যবহার করার সময় আপনার জানা আছে, আপনি কী ফাইল নামিয়েছেন, কোন ওয়েবসাইটে গেছেন বা পেনড্রাইভের মাধ্যমে কী ধরনের ফাইল স্থানান্তর করছেন। কিন্তু বর্তমান সময়ের ভাইরাসগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়, যেন সেগুলো ব্যবহারকারীর চোখ এড়িয়ে কম্পিউটারের ক্ষতি করতে পারে। এই ভাইরাসগুলো কম্পিউটারের সফটওয়্যারগুলো অকার্যকর করে দেওয়া, তথ্য মুছে ফেলাসহ ল্যাপটপটিই ব্যবহারের অনুপযোগী করে তুলতে পারে।
বাতাসের চলাচল:
ল্যাপটপ সব সময়ই এমন জায়গায় ব্যবহার করা উচিত, যেখানে বাতাস চলাচলের সুব্যবস্থা রয়েছে। এর ফলে ল্যাপটপ অতিরিক্ত গরম হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না।

তবে এর মানে এই নয় যে, সব সময় শীতাতপনিয়ন্ত্রিত স্থান থেকে এটি ব্যবহার করতে হবে।
তরল পদার্থ থাক দূরে:
চা, কফি, পানিসহ সব ধরনের পানীয় ল্যাপটপ থেকে দূরে সরিয়ে রাখুন। ল্যাপটপে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ইলেকট্রনিকস যন্ত্রাংশ থাকে। তরল পদার্থের সংস্পর্শে এগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আবার শর্টসার্কিটের ফলে পুরো ল্যাপটপটিই অচল হয়ে যেতে পারে।

এ ক্ষেত্রে সহজ সমাধান হলো, সব ধরনের তরল পদার্থই দূরে সরিয়ে রাখা।
খাওয়া নয়:
ল্যাপটপ সঙ্গে নিয়ে খাওয়া উচিত নয়। অসাবধানতাবশত খাবারের কোনো অংশ ল্যাপটপে পড়ে ময়লা হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া খাবারের ক্ষুদ্র কণা ল্যাপটপের কি-বোর্ডে আটকে থাকলে সেখান থেকে ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হতে পারে। এগুলো কোনোভাবে মূল সার্কিটের সংস্পর্শে এসে শর্টসার্কিট হলে ল্যাপটপের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।


পরিষ্কার হাতে ল্যাপটপ:

ময়লা হাতে ল্যাপটপ ব্যবহার করলে অনেক সময় টাচপ্যাড ঠিকভাবে কাজ না-ও করতে পারে। পরিষ্কার হাতে ব্যবহার করলে ধুলো-ময়লা জমা হওয়ার আশংকা কম। দ্রুত ময়লা হয়ে গেলে কিছুদিন পর পরই রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বেশ সময় ব্যয় করতে হবে।
শুধু ডিসপ্লে ধরে সরাবেন না:
স্থানান্তরের সময় ল্যাপটপের মূল অংশ ধরে সরানো উচিত, কখনোই শুধু ডিসপ্লে ধরে সরানো উচিত নয়। সাধারণত ডিসপ্লের ওজনের থেকে মূল অংশ বেশি ভারী হয়ে থাকে।

তাই পর্দা ধরে সরানোর চেষ্টা করা হলে এই দুই অংশের সংযোগস্থানটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বা ভেঙে যেতে পারে।
বছরে একবার সার্ভিসিং:
নির্ভরযোগ্য কম্পিউটার সার্ভিসিং সেন্টার থেকে বছরে অন্তত একবার ল্যাপটপ সার্ভিসিং করানো উচিত। দীর্ঘ সময় ব্যবহারের ফলে জমে থাকা ধুলো-ময়লা পরিষ্কারের জন্যই প্রয়োজন এই সার্ভিসিংয়ের। তবে কখনোই নিজে নিজে এই কাজ করা উচিত হবে না।
সিডি-ডিভিডি:
সিডি বা ডিভিডি-রম ডিস্কগুলো ব্যবহারের পর নির্ধারিত স্থানে রেখে দিতে হবে।

অসাবধানতাবশত কোথাও ঘষা লেগে বা পড়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
স্টিকারগুলো পরীক্ষা করা:
ল্যাপটপ ডিস্ক ড্রাইভার ব্যবহারের আগে ডিস্কে লাগানো স্টিকারগুলো পরীক্ষা করে নেওয়া প্রয়োজন।
ল্যাপটপের কভার:
ল্যাপটপ বহন করার জন্য সব সময় অতিরিক্ত একটি কভার ব্যবহার করা উচিত। এটি অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ স্ক্র্যাচ, ধুলো-ময়লা থেকে নিরাপদ রাখবে। আর এটির আকার অবশ্যই ল্যাপটপের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।


ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার:
ল্যাপটপের পর্দা, কি-বোর্ড এবং এক্সজস্ট ফ্যানের জায়গাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা প্রয়োজন। ধুলো-ময়লা পরিষ্কার করার জন্য ব্রাশ ব্যবহার করা যেতে পারে। এমনকি ব্যবহূত পুরোনো টুথব্রাশগুলো দিয়েও ল্যাপটপের বাইরের অংশগুলো পরিষ্কার করা যেতে পারে।
ল্যাপটপের ওপর ভারী কিছু না:
ভাঁজ করে রাখা ল্যাপটপের ওপর, কি-বোর্ডের ওপর ভারী কিছু রাখা উচিত নয়। ল্যাপটপ ভারী কিছু রাখার উপযোগী করে তৈরি করা হয় না।

তাই ভারী বই বা অন্য কিছু রাখা হলে ডিসপ্লে, কি-বোর্ড বা অন্যান্য যন্ত্রাংশের ক্ষতি হতে পারে।
পর্দার প্রতি যত্নশীল:
কাজ শেষে ল্যাপটপ বন্ধ করার পর মনিটরটির বা ডিসপ্লে পর্দাটি ভাঁজ করে রাখা উচিত। আবার অনেক সময় সরাসরি পর্দা ভাঁজ করে স্ট্যান্ডবাই মোডে রাখা হয় ল্যাপটপ। এ সময় যেন কি-বোর্ডের ওপর কোনো পেন্সিল, হেডফোন বা অন্য কিছু না থাকে। এসব রেখে বন্ধ করে দেওয়া হলে ডিসপ্লের ক্ষতি হতে পারে।


দ্রুত তাপমাত্রা পরিবর্তন নয়:
হঠাৎ করে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ঘর থেকে বাইরের উষ্ণ তাপমাত্রায় স্থানান্তর বা উষ্ণ স্থান থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত তাপমাত্রার স্থানে স্থানান্তর করা উচিত নয়। দ্রুত তাপমাত্রা পরিবর্তনের সঙ্গে চলমান ল্যাপটপের হার্ডডিস্ক ও প্রসেসর মানিয়ে নিতে পারে না। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে ল্যাপটপ এবং এর অন্যান্য যন্ত্রাংশের।
বৈদ্যুতিক সংযোগ খুলে ফেলা:
ল্যাপটপ চালু রেখে বৈদ্যুতিক সংযোগ (পাওয়ার কানেকশন) খুলে ফেলা উচিত নয়। বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তারপর সংযোগ খোলা উচিত।

আর বৈদ্যুতিক সংযোগটি যদি আপনার পায়ের কাছাকাছি কোথাও থাকে, তাহলে কম্পিউটার ব্যবহার করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন।
ডিস্ক ড্রাইভার:
ডেস্কটপ ডিস্ক ড্রাইভারগুলো থেকে ল্যাপটপের ডিস্ক ড্রাইভারগুলো আলাদা ধরনের হয়ে থাকে। তাই সিডি/ডিভিডি ডিস্কগুলো ব্যবহার করার সময় বেশিসতর্ক থাকা প্রয়োজন। সঠিকভাবে ব্যবহার না করা বা উল্টোভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করলে ডিস্ক ড্রাইভারটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
তার যেন পেঁচিয়ে না যায়:
ল্যাপটপের বৈদ্যুতিক সংযোগ তারগুলো মেঝেতে ছড়িয়ে রাখা উচিত নয়।

তারগুলো চেয়ারে চাপা লেগে ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তো রয়েছেই, এর পাশাপাশি ছড়িয়ে থাকা তারগুলোতে আটকে ব্যবহারকারী নিজে অথবা অপর কেউ দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন।
গাড়িতে ফেলে আসবেন না:
বদ্ধ গাড়ি একটি উচ্চ তাপমাত্রার জায়গা। স্বাভাবিকভাবেই দীর্ঘ সময় ধরে ল্যাপটপটি সেখানে ফেলে রাখা উচিত নয়। এ ছাড়া ল্যাপটপ বা ল্যাপটপের ব্যাগ ছিনতাইকারীদের আকৃষ্ট করতে পারে।
উপরের টিপসগুলো অনুসরন করলে আমি মনে করি আপনার ল্যাপটপটি ভালো মতই চলবে কোন সমস্যা ছাড়া।

আপনাদের কাজে আসলে জানাতে ভুলবেন না কিন্তু। ভালো থাকবেন সবাই আর আপনাদের ল্যাপটপের বেশি বেশি যত্ন নিবেন!! নইলে ওটা নিয়ে অল টাইম দৌড়ের উপর থাকতে হবে।
পুর্বে প্রকাশিত: উইটেক বিডি।

সোর্স: http://www.techtunes.com.bd/     দেখা হয়েছে ৩১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.