আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমাদে শত্রু আমরা নিজেরাই-আপনারা হাসলে আমরাও হাসি-কাঁদলে আমরাও কাঁদি-আপনাদের সদ্বইচ্ছার অপেক্ষায় রইলাম।

আমরা জানি একদিন আমরা মরে যাব এই জন্যেই পৃথিবীটাকে এত সুন্দর লাগে। যদি জানতাম আমাদের মৃত্যু নেই তাহলে পৃথিবীটা কখনোই এত সুন্দর লাগতো না

এই বঙ্গীয় ''ব'' দ্বীপের দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা দেখে বেশ কিছু দিন যাবত কিছু লিখবো বলে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। কিন্তু কি বিষয় নিয়ে লিখবো তা নির্ধারণ করতে পারছিলাম না। অবশেষে ২৫ আক্টোবর-১৩ তারিখে বিরোধী রাজনৈতিক দলের অধিকার আদায় সম্পর্কিত রাজনৈতিক কর্মসূচী দেখে মহে হচ্ছে আমার লেখাটি লেখার এখনই মোক্ষম সময়। বিগত সময় আমরা দেখে আসছি যে,অধিকার আদায়ের নামে যে কর্মসূচী দেয়া হয়েছে তাতে ক্ষতি আমাদেরই হয়েছে।

দেশ পিছিয়ে গিয়েছে। অর্থনৈদিক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। জ্বালাও-পোড়াও, হানা-হানি হচ্ছে। মানুষ মরছে পাখির মতো। কিন্তু আমরা কেউ এ সব বিষয় চিন্তা না করে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ক্রোধ ও হিংসার বশবর্তী হয়ে এইসব জনকল্যানহীন কর্মসূচী গ্রহণ করে আসছি।

এতসব কোন কর্মসূচীই আমাদের দেশে কোন প্রয়োজন নেই। শুধামাত্র প্রয়োজন জনকল্যান বান্ধব ও দেশপ্রেমিক কিছু মানুষের। আমাদের দেশে মানুষ আছে । কিন্তু মানুষের চোখ নেই। আমাদের মনে রাখতে হবে এ দেশ আমাদের, আমাদেরকেই দেশকে ভালবাসতে হবে এবং এর পূর্ণঃ গঠনও আমাদেরকেই করতে হবে।

অন্য কেউ এসে আমাদের দেশ পূর্ণঃ গঠন করে দিবে না। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখাযায় যে,স্বয়ং বিশ্ব বিজয়ী বীল আলেকডান্ডারও এই বঙ্গীয় ''ব'' দ্বীপ আক্রমন করার সাহস দেখায় নি। মধ্যখানে দেশীয় কিছু কুলাংগার বেঈমানদের কারনে শুধামাত্র ব্যক্তিগত স্বার্থ সিদ্ধির জন্য বেনীয় ইংরেজেরা ২০০ শত বছর এই উপমাদেশে আধিপত্ত বিস্তার করে গেছে। কিন্তু এ অঞ্চলের মানুষ অত্যাধিক রাজনৈতিক সচেতন ও স্বাধীনচেতার কারণেই তারা এক সময় এ উপমাদেশ হতে তাদের কোন চিন্থ না রেখে পালাতে বাধ্য হয়ছে। তার একমাত্র কারণ আমাদের দেশপ্রেম, দেশের প্রতি মমাত ও শ্রদ্ধার থাকায়।

কি নেই আমাদের ? আমাদের আছে একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতি। এই দেশেইতো এক সময় জন্ম নিয়েছিল; ক্ষুদিরাম, তিতুমীর, মাষ্টার দা সুর্যসেন ও প্রীতিলতার মতো অকুতোভয় দেশপ্রেমিকেরা। পরবর্তীতে তাদের পথ অনুস্মরণ করছে আসাদ, রফিক, জব্বার, সালাম ও বরকতেরা। অবশেষে তাদেরই পথ অনুস্মরন করে জন্ম হযেছে ৩০ লক্ষ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং সর্বশেষে অর্জিত হযেছে আমাদের সেই কাঙ্খিত স্বাধীনতা। যে স্বাধীনতা না আসলে আজকে আমি মন ভরে শ্বাস নিতে পারতাম না, মা-কে মা বলে ডাকতে পারতাম না এবং লিখতে পারতাম না।

আমাদেরকে মনে রাখতে হবে আমাদের দেশে কোন আরব বসন্তের ফুল ফুটবে না। কারণ সেই ফুল ফুটানোর পথ চিরদিনের মতো সেই দূর অতীতে আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। সেই পথ বন্ধ করেই আমরা অর্জন করেছি স্বাধীনতা। এখন এ স্বাধীনতা কিভাবে ধরে রাখবো তা নিয়ে কর্মপরিকল্পনা করাই হবে আমাদের সর্বোত্তম কাজ। আমাদের দেশ অন্য কোন বহিঃ শক্রদ্বারা আক্রান্ত হওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই।

যদিও বা আক্রান্ত হয় তবে তা হবে আমাদের নিজেদের কারণেই। কারণ আমাদের শক্র আমরা নিজেরাই। বিগত দেড় দশক ধরে আমরা নিজরাই নিজেদের মধ্যে হানা-হানি, জ্বালাও-পোড়াও করে আসছি, তা পৃথিবীর ইতিহাসে অত্যন্ত বিরল। সাম্প্রতিক সময় ও দূল অতীতে নিজস্ব আভ্যন্তরিন কারনে এই রকম হানা-হানি ও জ্বালাও-পোড়াও কোন দেশে ঘটেছে কিনা তা প্রশ্ল সাপেক্ষ (যদিও বা আরব বসন্ত নামক যে ফুল মিশর ও লিবিয়ায় ফুটিয়াছে তার ফল তারা এখন হাতে হাতে পাচ্ছে)। বিগত দেড় দশকে আমাদের অর্জন অনেক।

তবে তা হয়েছে ব্যক্তিগত উদ্যোগে। সম্মিলিত অর্জন খুবই কম। এর একমাত্র কারণই হলো নোংরা রাজনীতি। এ রাজনীতি বা এর সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টরা আজওবধি আমাদেরকে কোন ভাল স্বপ্ন দেখাতে পারেনি এবং আশা-জাগানিয় ভালো কোন প্রজেক্ট জাতীর সামনে উপস্থাপন করতে পারেনি। অথচ জাতি ও দেশের নাগরিক হিসেবে এ স্বপ্ন দেখা অন্যায় নয়।

তাই বলে আমাদের রাজনীতিবিদদেরকে আমি নীতিবর্হিভূত বলছি না। খারাপ হলো তাদের রাজনীতির ভিতরকার রাজনীতি এবং দলীয় নীতি। ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখাযায় যে, আমাদের রয়েছে একটি সমৃদ্ধ রাজনৈতিক প্লাটফর্ম। শেরে-বাংলা একে ফজলূল হক, হোসন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, মাওলানা তর্কবাগী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমানসহ অসংখ্য নিঃস্বার্থ ও দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ। তাদের নিঃস্বার্থ দেশপ্রেমের নজীর বিশ্ব রাজনীতিতে অথ্যন্ত বিরল।

অথচ তাদের আদর্শ, দর্শন ও নীতির উপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে স্বাধীন দেশে গঠিন রাজনৈতিক দলে তাদের আদর্শকে বিসর্জন দিয়ে যে দল গঠিত হয়েছে, সেই সমস্ত দলে নাই দেশপ্রেমের আদর্শ কোন নীতি বা দর্শন। এ দেশ আমার, দেশের ভালমন্দ দেখার ও বুঝার অধিকার আমারও যেমন রয়েছে, তেমনি আজকে যে শিশু এ ভুখন্ডে ভুমিষ্ট হয়েছে তারও রয়েছে। কাজেই আমরা আপমর জনগনই দেশের মূল মালিক। দু'টি রাজিনিতক দলের বা পরিবারের কাছে আমরা আমাদের এ সোনার দেশ লিজ দেই নি যে, মেয়াদ শেষে লিজ নেয়ার জন্য তারা যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে। দেশকে ও দেশের মানুষকে লিজ নেয়া হতে বিরত রাখার জন্য আমি একটি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করছি br /> এ প্রস্তাবনা সম্পর্কে জানতে হলে আমাদেরকে একবার তাকাতে হবে বিশ্ব মোড়ল মার্কিনীদের অতীত ইতিহাসের দিকে।

মার্কিনীদের দেশে এক সময় রাজনীতিতে একে-অপরের শক্র বিবেচিত হলে বা প্রতিপক্ষের তীর্যক সমালোচক হলে ঐ ব্যক্তিরা একে-অপরকে সম্মুখ যুদ্ধে (যাকে সম্ভবত ডুয়েট বলে থাকে) অবতীর্ণ হওয়ার চ্যালেঞ্জ জানাতেন। চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার পর নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে নিদ্দিষ্ট স্থানে একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতো। এত মৃতু্র ঝুটিকও থাকতো এবং কখনও কখনও মৃতুর বরণ করতে হতো। এ ভাবে তারা একে অপরের সমালোচনার জবাব দিতো। এই কথিত সম্মুখ যুদ্ধের মাধ্যমেই তাদের কারো কারো রাজনৈতিক অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি হতো।

এখন আমাদের দেশের যে অবস্থা তাতে মনে হচ্ছে যে, আমাদের শ্রদ্ধেও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ দেশ ও জাতীর বৃহত্তর স্বার্থে একে-অপরের বিরুদ্ধে সেই কথিত ডুয়েটে বা সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে তাদের রাজনৈতিক পতিপক্ষের রাজনৈতিক জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটানোর প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। তা না হলে আমরা সাধারণ জনগন তাদের পারস্পারিক বিদ্ধেষ ও হিংসার কারনে শেষ হয়ে যাবো। সাম্প্রতিক সমে বিশ্ব রাজনীতিতে এ ধরণের নজির নই যে, সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রাক্কালে বিরোধী দল দা-কুড়াল, লগি-বৈঠা নিয়ে আপমার জনগনকে রাস্তায় নেমে আসার উদ্ধাত্ত আহবান জানায়। অথচ আমাদের সম্মানীত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সেই আহবানই জানিয়েছেন। এতে কি মনে হয় না যে তারা নিজেরাই একে অপরের বড় শত্র ।

কাজেই আপমর জনগণের জানমালের ক্ষতি না করে আপনার নিজেরাই দা-কুড়াল, লগি-বৈঠা নিয়ে তারিখ ও সময় নির্ধারণ করে নির্দ্দিষ্ট স্থানে সেই কথিত ডুয়েট বা সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে আপনাদের জিজ্ঞাংসার পরিসমাপ্তি ঘটান। আমরা আপমর জনগন তা একবার দেখি। তবুও আমাদেরকে এ ভাবে ক্ষতি করবেন না। আপনাদের যন্ত্রনায় আমরা আপমর জনগন অতিষ্ট। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশ ও জনগণের স্বার্থে ব্যক্তিগত ইগো, হিংসা বিদ্ধেষ ভুলে মাননীয় বিরোধীদলীয় নেতাকে ফোন করেন ।

অথচ তাঁর সেই ফোন রিসিভ করা হয়নি এবং রিসিভ পরবর্তী সময়ে দেশ ও জাতীর স্বার্থে এক টেবিলে বসে সমস্যা সমাধানের কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছেনা কেন ? এ ধরনে ঘটনা কোন সভ্য সমাজে বা দেশে দ্বিতীয়টি আছে কি না তা আমাদের জনা নেই। যে রাজনীতিতে শুধু মাত্র হিংসা, বিদ্ধেষ ব্যক্তিগত আক্রোশ সেই রাজনীতি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আমরা চাই না। আমাদের সম্মানীত দুই নেতাকেই মনে রাখতে হবে যে, আপনাদের জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বি, আপনারা হাসলে আমরাও হাসি এবং কাদলে আমরাও কাদি। তার কারণ আপনারা দুইজনই সেই বিখ্যাত দুই জন দেশপ্রেমিকের যোগ্য উত্তরসূরী। আসুন সব ভুলে গিয়ে দেশ ও জাতীয়র স্বার্থে একত্রে বসুন এবং আপনাদের পূর্ব পুরষদের মতে যোগ্য দেশপ্রেমিক হোন।

আমাদের দেশে মানুষ আছে,মানুষের চোখ নাই। অজহস্র প্রেমিক আছে কিন্তু দেশপ্রেমিক মানুষ নাই। তাই শত বাঁধা বিপত্তি সত্বেও আমরা অপমার জনগন আপনাদের অন্ধের মতো অনুস্মরণ করি। আপনাদেরতো চাওয় পাওয়ার আর কিছু নাই । দু'জনেই দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছে এবং হয়েছেন সর্বোচ্চ নির্বাহী ক্ষমতার মালিক।

কি নেই আমাদের-আমাদের আছে একটি স্বাধীন ভুখন্ড, উর্বর ভূমি, আছে স্বপ্নবাদী লক্ষকোটি মানুষ, শক্তিশালী বিচার ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও সামরিক বাহিনী আর সাথে আছি আমরা অপমর লক্ষ-কোটি জনগণ। এখন শুধু প্রয়োজন আপনাদের সদ্বইচ্ছার। আমরা অপেক্ষায় রইলাম।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.