দিগন্তের উপর মাথা তুলে দাড়াতে চাই
ছবিটিতে সাংবাদিকের কমন সেন্স দেখেন! একজন মানুষ দগ্ধ হয়ে কেমন মৃত্যু যন্ত্রনায় ছটফট করছে। আরেকজন তার মুখের সামনে বুম ধরে বলছে আপনার অনুভূতি কী? এই হলো সাংবাদিকতা। একজনের কাছে শুনলাম, তিনি নাকি ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির সিনিয়র সাংবাদিক। এক্সক্লুসিভ নিউজ দিয়ে হিরো হওয়ার চেষ্টা করেছে।
এমন একটি প্রতিষ্ঠানে এইসব `মাথামোটা' মানুষ কীভাবে চাকরি পাই জানিনা।
আমি দুঃখিত যে তাকে মাথা মোটা বলতে বাধ্য হলাম। কেননা, সিনিয়ির রিপোর্টার হিসেবে তার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার কথা না হয় বাদ’ই দিলাম। স্বাভাবিকভাবে সাংবাদিকতা বিষয়ে যে বেইসিক দুই-একটা ট্রেনিং দেওয়া হয় তাতে বারবার এ কথাই বলা হয় যে পরিস্থিতি বুঝে ভিকটিম বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সাথে কথা বলতে হবে। কী বিষয়ে কথা বলা উচিৎ বা কী বিষয়ে উচিৎ হবে না সেটাওে রিপোর্টার কে বুঝতে হবে। আর এমন টাইপের ট্রেনিং এর আয়োজন সব সময় হয়েই থাকে।
এতটুকু শিক্ষা পেতে তেমন কোন ডিগ্রি বা অভিজ্ঞতা লাগেনা। অপরাধী বা অভিযুক্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন কেইস। কিন্তু যে মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে, যার বাবা মা অথবা সন্তান মারা গেছে তাকে নিশ্চয় প্রশ্ন করা যায় না আপনার অনুভূতি কী? এটা যেমন অমানবিক তেমনি সাংবাদিকতার নিয়ম বহির্ভূত।
এক্সক্লুসিভ কিছু দিয়ে হিরো হওয়ার বদলে যখন হাউজের ঝাড়ি খাবেন (জানিনা তার হাউজ পলিসি কেমন) তখন আশা করি তার এ বিষয়ে জ্ঞান ফিরবে।
এর আগে রানা প্লাজায় যখন শত শত মানুষ মারা গেল, সময় টেলিভিশনের এক রিপোর্টার এমন এক কান্ড ঘটিয়েছিলেন।
সেখানে নিহতদের জন্য যে সারি সারি কবর খোড়া হয়েছিল সেই কবরে মধ্যে জুতা পায়ে দাড়িয়ে লাইভ দিয়েছিলেন। এই হলো আজকের এই গ্লামার পেশার অবস্থা।
নিজে একজন সাংবাদিক হয়ে লজ্জা লাগে। এ পেশায় নতুন হিসেবে অনেক কিছুই অজানা। কিন্তু বড় বড় মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের বড় বড় সাংবাদিকরা (তথাকথিত) যখন এমন মৌলিক বিষয়ে অথর্বের মত কাজ করে তখন নিজের পরিচয় দিতে আসলেই লজ্জা করে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।