আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিষ্যদের নিয়ে গর্বিত বাংলাদেশ কোচ

বাংলাদেশ দল রাগী হেডমাস্টারের মতো কোচ বেশ কজনকেই পেয়েছে। গর্ডন গ্রিনিজ ছিলেন। ছিলেন ডেভ হোয়াটমোরও। তবে শেন জার্গেনসেন যেন অন্য রকম। তিনি যতটা না দলের কোচ, শিক্ষাগুরু, তার চেয়েও বেশি বন্ধু।

শিষ্যদের তিনি পিঠ চাপড়ে দিতে বেশি উত্সাহী, কান মলে দিতে নয়।

আজ সংবাদ সম্মেলনে যখন কথা বলছিলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম, বরাবরের মতো চুপটি করে বসে শুনছিলেন। দেখে মনে হবে মুগ্ধশ্রোতা। কিন্তু বাংলা তো আর বোঝার কথা নয় অস্ট্রেলীয় নাগরিক জার্গেনসেনের। তবে কোচ-অধিনায়কের পারস্পরিক বোঝাপড়া, চোরা চাহনিতে ভাবনার আদান-প্রদানের ছাপ ঠিকই টের পাওয়া যায়।



শেষটা ভালো হলো না। এ নিয়ে আক্ষেপ আছে। তবে পুরো সিরিজে বাংলাদেশ যা খেলেছে, তাতে শিষ্যদের নিয়ে গর্বিত বলেই জানালেন জার্গেনসেন, ‘এই সিরিজটা বাংলাদেশের জন্য দারুণ একটা সিরিজ ছিল। আমরা চার-পাঁচজন খেলোয়াড় শেষ পর্যন্ত হারিয়ে ফেলেছিলাম অসুস্থতার কারণে। তামিম, সাকিব, শফিউল।

আজ রুবেলও সকালে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তার পরও আমরা ভালো খেলেছি। এমনকি আজকের ম্যাচটাও। সব মিলিয়ে ভালোই কেটেছে। আমি খুবই তৃপ্ত।

ছেলেদের নিয়ে গর্বিত। আমি খুব খুশি। ’

তৃপ্ত, তাই বলে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে গা এলিয়ে বিশ্রামের সুযোগ নেই। এখনো অনেক কাজ করার বাকি। এখনো যে উন্নতির আরও সুযোগ আছে, সেটাও মনে করিয়ে দিলেন কোচ।

বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্বাগতিক বাংলাদেশ যে কঠিন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে আছে মূল পর্বে খেলার জন্য। তার চেয়েও বড় কথা, টি-টোয়েন্টি যেন এখনো ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না বাংলাদেশ।

অধিনায়ক নিজ মুখে আবারও তা স্বীকার করেছেন। তবে কোচের কণ্ঠে আশাবাদ, ‘এই ফরম্যাটটা  আমরা ধীরে ধীরে বুঝতে শুরু করেছি। এখনো পুরোপুরি বুঝিনি।

এখনো অনেক জায়গা আছে, যেগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে। মূল জায়গা তো অবশ্যই বোলিং। শুরুতে আমাদের আক্রমণাত্মক ইতিবাচক বোলিং করতে হবে। উইকেট নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। গত ১২ মাসে আমরা খুব বেশি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলিনি।

সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। আমাদের সামনে কয়েকটা ম্যাচও আছে। এই সুযোগটা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। ’

টেস্ট সিরিজ ড্র। ওয়ানডে সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে ধবলধোলাই।

টি-টোয়েন্টির শেষটা ভালো না হলেও এই সিরিজে প্রাপ্তির খাতায় যে অনেক কিছুই যোগ হয়েছে, সেটা মানছেন কোচ। সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি, বাংলাদেশ এখন আর সুনির্দিষ্ট এক দুই তারকার দিতে তাকিয়ে থাকে না। দলে সবাই অবদান রাখতে চান।

জার্গেনসেন সেটাই বললেন, ‘মমিনুল টেস্টে ভালো করেছে। ওয়ানডেতেও অনেক ইতিবাচক খেলেছে।

মুশি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। আজও ফিফটি করেছে। শুধু ফিফটি নয়, ম্যাচের পরিস্থিতিই পাল্টে দিচ্ছিল। আরেকজন আছে গাজী। ব্যাটে-বলে এই সিরিজে সে দলে অনেক অবদান রেখেছে।

ভিন্ন ভিন্ন খেলোয়াড়েরা দলে অবদান রাখছে, এটা আমার জন্য অনেক তৃপ্তির। সাকিব টেস্টে ভালো করেছে। তামিম ওয়ানডেতে। পুরো দলই দাঁড়িয়ে গেছে। একে অন্যের কাঁধ মিলিয়ে লড়েছে।

ড্রেসিংরুমের আবহ অন্য রকম, আগেও অবশ্য তা-ই ছিল। আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি ফিটনেস নিয়ে। এটা কাজে দিয়েছে। এটা ভবিষ্যতে ধরে রাখা এখন চ্যালেঞ্জ। ’

ব্যাটিং নিয়ে খুব বেশি প্রশ্ন উঠবে না।

তবে বোলিং আর ফিল্ডিংটা যে এখনো কোচের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে আছে, সেটাও বোঝা গেল। জার্গেনসেন বললেন, ‘এখনো অনেক জায়গায় উন্নতির সুযোগ আছে। আমাদের ফিল্ডিং দুর্দান্ত। তবে আজ এক-দুই জায়গায় আমরা ভুল করেছি। এক-দুটো রান আউট, ক্যাচের সুযোগগুলো নিতে পারলে হয়তো অন্য রকম হতো।

ফাস্ট বোলারদেরও আরও ভালো করতে হবে। আমি কাউকে দোষ দিচ্ছি না। তবে আজকের ম্যাচ থেকে আমরা শিখতে পারি, পুরো বোলিং আক্রমণ যদি একসঙ্গে জ্বলে না ওঠে, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আপনি দাঁড়াতে পারবেন না। ’

প্রাপ্তির ক্যানভাসে এই দুই পোঁচ আফসোসের আঁচড় থাকতেই পারে। সব মিলিয়ে পেছন ফিরে তাকালে বাংলাদেশের ক্রিকেটে উজ্জ্বল এক অধ্যায় হয়ে থাকবে এই সিরিজ।

কোচের কাছে শিষ্যদের একটা নৈশভোজও পাওনা হয়ে থাকল! 

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।