আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অহিংস আন্দোলনের আইডিয়া (রিপোস্ট)

..............................

দেশ ও জাতি আজকে এক কঠিন সময়ের মুখামুখি! দেশের জনগনের একটি বড় অংশ নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবীতে আন্দোলন রত। এই আন্দোলন অনেক ক্ষেত্রেই সহিংস হয়ে উঠছে এবং জনজীবন ও অর্থনীতি স্থবির হয়ে যাচ্ছে! এমত অবস্থায় দেশের সুশীল ও প্রগতিশীল সমাজ এই প্রথম বাংলাদেশে এই ধরনের নজিরবিহীন হরতালের পর হরতাল, সামনে অবধারিত ভাবে এগিয়ে আসা অবরোধ ও অসহযোগের কথা ভেবে প্রচণ্ড রকম আতংকিত হয়ে পরছেন! কিন্তু কেউ বলছেন না, আমাদের এই “কনফ্রনটেশনাল” রাজনীতির দেশে কিভাবে অহিংস আন্দোলন ও কর্মসূচীর আয়োজন ও পালন করা যায়। তাই একজন সুশীল না হয়েও চুপ থাকতে পারলাম না। তাই এগিয়ে এলাম কিছু অহিংস আন্দোলনের আইডিয়া নিয়ে! আমার সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে চেষ্টা করেছি কিছু অহিংস আন্দোলনের আইডিয়া এবং আইডিয়া গুলোর মেরিটস আর ডিমেরিটস নিয়ে আলোচনা করতে। চলুন তাহলে শুরু করা যাকঃ ১/ নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমর্থকরা তাদের পুরুষাঙ্গ কেটে প্রতিবাদ জানাতে পারেন, এক্ষেত্রে একটাই সমস্যা, তা হল পরবর্তী প্রজন্মে নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার খুজে পাওয়া একটু কষ্টকর হয়ে যেতে পারে! ২/ নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমর্থকরা তাদের সারা দেহ স্কচটেপ বা ব্যান্ডেজ দিয়ে পেঁচিয়ে (মমির মতো) প্রতীকী প্রতিবাদ করতে পারেন।

এক্ষেত্রে সমস্যা হল পুলিশ এসে পরলে, পালানোর জন্য দৌড় দাওয়ার কোন সুযোগ নেই। মানববন্ধনে পুলিশের আক্রমন আমরা দেখেছি তাই এই সম্ভাবনা উরিয়ে দেয়া যায় না। ৩/ নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমর্থকরা সুপারহিরোদের কস্টিউম পরে প্রতিবাদ সমাবেশ করতে পারেন! সব্বাই একটি নির্দিষ্ট দিনে স্পাইডারম্যান, সুপারম্যান, আইরনম্যান, থর, হাল্ক, ব্যাটম্যান, গ্রিন হরনেট, ফ্ল্যাশ, ক্রিশ (বালের সুপার হিরো), সিক্স মিলিয়ন ডলার ম্যানদের কস্টিউম পরে রাস্তায় বের হয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ করতে পারেন। এক্ষেত্রে একটাই সমস্যা, চেতবাজ শিল্পীরা বলে বসতে পারেন, “পোশাকের উপর অন্তর্বাস পরে আর যাই হন বাঙালী হতে পারবেন না”। ৪/ নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমর্থকরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় “ফ্ল্যাশ মব”এর আয়োজন করতে পারেন প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে! যখন ১০০র উপরে জনগন কোন খোলা জায়গায় একটি নির্দিষ্ট গানের তালে সিংক্রনাইজড ড্যান্স করে তখন তাকে “ফ্ল্যাশ মব” বলে! এক্ষেত্রে একটাই সমস্যা, যেই গানই আপনি ব্যাবহার করেন না কেন, সুশীল শিল্পীরা সেই গানের ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস নিয়ে মামলা করে বসতে পারেন! সেক্ষেত্রে আসিফ আকবরের “দেশ দেশ দেশ, শাবাশ বাংলাদেশ” অথবা “ও প্রিয়া ও প্রিয়া তুমি কোথায়” গানগুল নির্বাচন করলে এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

৫/ নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমর্থকরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় “গনস্নান”এর আয়োজন করতে পারেন প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে! সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদী জনগন জড়ো হয়ে প্রতীকী গণগোসল করতে পারেন। এক্ষেত্রে নারী এবং মেয়েলী পুরুষরা মরিমলের মতো শিক্ষক অথবা ছাত্রলীগ বা যুবলীগের “হরনী” নেতা কর্মীদের আক্রমনের শিকার হতে পারেন। ৬/ সমস্ত নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমর্থকরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় “গন কার ওয়াস”এর আয়োজন করতে পারেন প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে! সারা দেশের প্রতিবাদী জনগন সড়কে মহাসড়কে নেমে এসে সাধারণ জনগনের গাড়ি বিনামূল্যে ধুয়ে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে সমস্যা হল, বাংলাদেশের পরিবহন শ্রমিকদের নয়নের মনি “চোখ তুইলা নিমু” বা “বঙ্গবন্ধু মদ জুয়া হারাম করেছেন” খ্যাত “তাজমহল” খান যদি ঘোষণা দিয়ে বসেন, শ্রমিক ভাইরা আপনারা যেখানেই “গন কার ওয়াস” পার্টি কে দেখবেন সেখানেই তাদের গাড়ি চাপা দিবেন, তাহলে দেশজুরে ৫ই মে এর থেকেও ভয়াবহ একটা মেসাকারের সম্ভাবিটিলি আছে! ৭/ নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমর্থকরা পুরো দেশ জুরে “প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিথি লেখা”এর আয়োজন করতে পারেন প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে! সারা দেশের প্রতিবাদী জনগন নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখতে পারেন। লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি চিঠি! এক্ষেত্রে সমস্যা একটাই বাংলাদেশ ডাক বিভাগ তার সীমিত লোকবল নিয়ে এতো চিঠি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জীবনদশায় তার কাছে পউছে দিতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েই যায়।

এছাড়া ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী সাহারা খাতুন থ্রিজি নিয়ে এমনেই অনেক প্রেসারে আছেন, এই মুহূর্তে উনাকে এরকম একটি ঝামেলায় ফেলার আগে ৪৮ ঘণ্টা চিন্তা করে নেয়া উচিৎ! ৮/ নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমর্থকরা পুরো দেশ জুরে “গন প্রেঙ্ক কল”এর আয়োজন করতে পারেন প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে! নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমর্থকরা তাদের মোবাইল ফোন থেকে পরিচিত মানুষদের কল করে বলতে পারেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবী মেয়ে নিয়েছেন”/ স্বাভাবিকভাবেই আশা করা যায়, কিছুক্ষণের মধ্যেই সারা দেশের মানুষ খুশিতে রাস্তায় নেমে আনন্দ উল্লাস শুরু করে দিতে পারে। এক্ষেত্রে সমস্যা একটাই বিশেষ আইনের ৫৭ ধারা! আপনি যেহেতু এই লেখাটি অনলাইনে পরছেন তাই আর এক্সপ্লেইন করলাম না। ৯/ নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমর্থকরা পুরো দেশ জুরে “গন নগ্ন প্রতিবাদ”এর আয়োজন করতে পারেন প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে! নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমর্থকরা তাদের পরিধেয় বস্র পরিত্যাগ করে রাস্তায় ছোট ছোট দল বেঁধে দাড়িয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ করতে পারেন। এক্ষেত্রে দুটি সমস্যা হবে প্রথমত নারী এবং মেয়েলী পুরুষরা মরিমলের মতো শিক্ষক অথবা ছাত্রলীগ বা যুবলীগের “হরনী” নেতা কর্মীদের আক্রমনের শিকার হতে পারেন, দ্বিতীয়ত হেফাজতে ইসলাম নাস্তিক না বলে ডাইরেক্ট “কাফের” ঘোষণা করে জিহাদে নেমে পরতে পারেন! মনে রাখবেন কয়দিন আগেই ঈদ উল আযহা উজ্জাপিত হল, তাদের পশু কোরবানি দেওয়ার বড় বড় ছুরি গুল এখনো “টিপটপ” কন্ডিশনে আছে! তবে এই প্রতীকী প্রতিবাদে অনেক নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিরোধীদের যোগ দাওয়ার সম্ভাবনা আছে, যেমন সমস্ত যৌন উত্তেজক গল্পের পাঠক ও লেখক, নাটক ও গান পাড়ার আধবোজা ঢুলুঢুলু চোখের শিল্পীরা, শিল্প বড়ুয়া, প্রভা, রোকেয়া প্রাচী এন্ড প্রগতিশীল গ্যাং,, বাংলা সিনেমার রেপিসট গ্যাং (কাবিলা ও মিশা সওদাগর) ইত্যাদি ইত্যাদি। ১০/ নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমর্থকরা ঢাকায় “দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই শীর্ষক মহাসমাবেশ”এর আয়োজন করতে পারেন।

এক্ষেত্রে মহাসমাবেশের শুরুতেই “চোখ পালটি” মেরে মহাসমাবেশকে নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবীর মহাসমাবেশে রুপান্তর করতে পারেন! এক্ষেত্রে “চোখ পালটি” মারার “আন্তর্জাতিক কপিরাইট আইন” অথবা “আন্তর্জাতিক প্যাটেন্ট আইন” লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে! দয়া করে এই লেখাটি কেউ সিরিয়াসলি নিবেন না! এক মাত্র মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষই এই লেখাটিকে সিরিয়াসলি নেয়ার চেষ্টা করতে পারেন। এটি একটি ফিকশন (কাল্পনিক গল্প) মাত্র, এই লেখার সাথে কোন জীবিত, মৃত বা আসন্ন মৃত বেক্তি, দেশ, প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল ইত্যাদির কোন সামান্যতম যোগাযোগ নেই! ধন্যবাদ

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.