আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গোলমেলে রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে: ড. ইউনূস

নিউইয়র্কে নাগরিক সংবর্ধনায় নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়া সম্পর্কে সকলেই জ্ঞাত আছেন। তবুও গোলমেলে রাজনীতি থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারছি না। এটি হচ্ছে বাংলাদেশের জন্যে এ সময়ের বড় সমস্যা।

ড. ইউনূস আরো বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক দখল নিয়ে যে সব চলছে তা নিতান্তই সাময়িক বলে মনে করছি। সেই সঙ্গে আমরা সুস্থ সবল গ্রামীণ ব্যাংক ফিরে পেতে চাই।

 

১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার রাতে নিউইয়র্কে 'ইউএস প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিক সমাজ'র উদ্যোগে লাগোয়ার্ডিয়া কমু্নিটি কলেজের মেইনস্টেজ থিয়েটারে অনুষ্ঠিত এ সংবর্ধনা সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণসংবর্ধনা কমিটির আহ্বায়ক ড. শওকত আলী এবং স্বাগত বক্তব্য দেন সদস্য সচিব আবু তাহের। নির্ধারিত সময়ের ২ ঘণ্টা ২২ মিনিট পর এ অনুষ্ঠান শুরু হয় বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ থেকে তিলাওয়াতের মাধ্যমে। পবিত্র কোরআন থেকে ক্বারী মোহাম্মদ সুলতান মাহমুদ, বাইবেল থেকে টমাস দুলু রায় এবং গীতা থেকে পাঠ করেন ইঞ্জিনিয়ার সুভাষ মজুমদার। এরপর বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিপার শিল্পীরা। মিলনায়তনে উপস্থিত বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক-পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, ২০০০ সালের আগে থেকেই আমি বলে আসছি যে, ২০১৩ সালের পর দারিদ্রকে জাদুঘরে পাঠাবো। আমার কথায় অনেকেই হেসেছেন। এ অস্থায় ২০০০ সালে জাতিসংঘ এমডিজি পরিকল্পনা তৈরি করেছে। ২০১৫ সালের মধ্যে বিশ্ব থেকে গরীব মানুষের সংখ্যা অর্ধেক করার লক্ষ্য ধার্য করা হয়েছে। চলতি বছরের মাঝামাঝি বাংলাদেশ সে লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে।

এখন বিশ্বব্যাংক চিৎকার করছে যে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বকে দারিদ্রমুক্ত করা হবে।

ড. ইউনূস বলেন, বাঙালিরা আজ যা ভাবে, উন্নত বিশ্ব তা ভাবে কয়েক বছর পর। তিনি বলেন, সামাজিক ব্যবসার প্রসার ঘটছে ক্রমান্বয়ে। বিশ্বের ১২ দেশে এর কার্যক্রম সম্প্রসারিত হয়েছে। আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্যে নিরাপদ বিশ্ব গড়তে সামাজিক ব্যবসা একটি অন্যতম কাঠামোয় পরিণত হবে-এটি বলতে পারি হলফ করে।

ড. ইউনূস বলেন, ২০৩০ সালের পর বিশ্বে বেকারত্ব থাকবে না। দুর্নীতিও নির্মুল হবে। কারণ সামাজিক ব্যবসা হচ্ছে ব্যক্তিগত মুনাফা বিবর্জিত ব্যবসা। চলমান পুঁজিবাদী অর্থনীতি কাঠামোতে শুধু টাকার পেছনে ছুটছে সকলে। কলের পুতুলের মত সকলেই কাড়ি কাড়ি টাকার পেছনে ছুটছে।

যদিও বর্তমানের ব্যবস্থায় সামাজিক সমস্যার স্থায়ী সমাধান ঘটছে না। দান-খয়রাত করা হচ্ছে এবং তা বছর শেষে ফুরিয়ে যাচ্ছে। পুনরায় ওইসব প্রকল্পকে অন্যের দানের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। কিন্তু সামাজিক ব্যবসায় সেটি থাকবে না। প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে যে সব প্রকল্প/পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে সে সবে বিত্তবানরা যে অর্থ দেবেন তা একটি নির্দিষ্ট সময় পর ফেরত পাবেন।

এটি এক ধরনের বিনিয়োগ। তবে কোন লাভ পাবেন না।

তিনি বলেন, প্রযুক্তিগতভাবেও বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে। চীন এবং ভারতের অনেক আগেই বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। এখন ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১ কোটি মোবাইল ফোন।

এভাবেই বাংলাদেশ সমৃদ্ধির পথে ধাবিত হচ্ছে। ড. ইউনূস বলেন, ২০৩০ সালের পর বাংলাদেশে একজন গরীব মানুষ যদি পাওয়া যায় তাহলে মিলিয়ন ডলার পুরস্কার দেয়া হবে। আমার এ ঘোষণায় অনেকে হাসতে পারেন, যেমনটি হেসেছিলেন ১৩ বছর আগেও। কিন্তু আসছে ২০১৫ সালের মধ্যেই সারাবিশ্ব থেকে গরিবের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসবে এবং পরবর্তী ১৫ বছরের জন্যে জাতিসংঘ হয়তো আমার বক্তব্য সমর্থন করেই পরিকল্পনা ঘোষণা করবে।



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।