আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হারিয়ে যাওয়া কনডমটি!



গল্পটির নাম পড়ে অনেক পাঠকের খারাপ লাগতে পারে । কিন্তু একবার এই গল্পটি পড়ে দেখুন গল্পটা মোটেও খারাপ না । যদি কারো খারাপ লাগে তবে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। গল্পটি একটি অনলাইন পেপার থেকে সংগৃহীত ---- সোজা-সরল হিসেবে চমৎকার মানুষ তানভির। তবে সহজ-সরল ভাবলে যেমন আলা-ভোলা বোকা টাইপ মানুষের মুখচ্ছবি ভেসে ওঠে, তানভির মোটেই সে রকম নয়।

কারো সাতে নেই, পাঁচেও নেই সে। স্ত্রী শিপ্রার প্রতি ভয় এবং ভালোবাসা দুইটাই প্রবল। মুদ্রার হেড শিপ্রা হলে তানভির টেইল। তবে শান্ত তানভির আর চটপটে শিপ্রার ভাব-ভালোবাসা অনেক দম্পতির জন্যই ইর্ষণীয়। বিয়ের পর তানভির শিপ্রা দুই রাতের বেশি আলাদা থাকেনি।

একবার মা অসুস্থ হলে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিল শিপ্রা। অফিসের কারণে যেতে পারেনি তানভির। তবে শিপ্রার ঢাকায় ফিরতে দেরি হবে শুনে ছুটি নিয়ে দ্বিতীয় দিনে শ্বশুর বাড়ি হাজির হয়েছিল তানভির। দীর্ঘদিন পর এই প্রথম একাই সপ্তাহ খানেক গ্রামের বাড়ি কাটিয়ে এল শিপ্রা। অফিসের জুন ক্লোজিংয়ের কারণে বাড়ি যাওয়া হয়নি তানভিরের।

দিনে কয়েকবার করে ফোনে একে-অপরের খোঁজ-খবর নিয়েছে। খোঁজ-খবর করাটা তানভিরের জন্য যতটা ভালোবাসা এবং দায়িত্বের, শিপ্রার ততটাই সন্দেহের। সাদাসিধা মানুষটাকে শিপ্রা এতটা সন্দেহ কেন করে সে নিজেও জানে না। এই যেমন দুপুরে ফোন করে শিপ্রা জিজ্ঞেস করে, এই এখন তুমি কই? -অফিসে -এত চাপাস্বরে কথা কও কেন, আশপাশে মাইয়া মানুষ আছে নাকি? তানভির নিশ্চিত তার পাশে কোনো মেয়ে নেই। এরপরো সে ডান-বাম পাশে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে নেয় - না, নেই।

অফিসের কাজ করি তো এইজন্য। শিপ্রা ঠোট টিপে হাসে। এই হাসি তানভিরকে বুঝতে দেয় না। কণ্ঠে ঝাঝ মিশিয়ে বলে - অফিসের কাজ করলে বুঝি জোরে কথা বলা যায় না। আচ্ছা দুপুরে খাইছো - না ,এখনও খাওয়া হয় নাই।

-খেয়ে নাও, রাখছি। প্রত্যুত্তর না শুনেই ফোন কেটে দেয় শিপ্রা। স্বামীকে লাইনে রাখতে সব সময় ফোন এভাবেই কাটে সে। তানভির মোবাইলের পর্দার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে। মোবাইল পকেটে ঢুকাতে ঢুকাতে উত্তর খোঁজার চেষ্টা করে, কেন শিপ্রা তাকে সন্দেহ করে।

প্রশ্ন প্রতিধ্বনিত হতে থাকে, উত্তর মেলে না। আট দিন পর ঢাকায় ফিরেছে শিপ্রা। এই কয় দিনেই বাসা নাকি বন-জঙ্গল হয়ে গেছে। অথচ তানভিরের কাছে তেমন পার্থক্য মনে হয় না। নিয়মিত ছুটা বুয়া এসে প্রতিটা দিনই শিপ্রার নির্দেশনা মতো কাজ শেষ করে চলে গেছে।

এরপরও স্বস্তি নেই শিপ্রার। রুমে ঢুকেই বন-জঙ্গল পরিষ্কারে লেগে গেছে সে। শোকেচ, আলমারি, সোফা, ওয়ার্ডরোব কিছুই বাদ যায়নি তার পরিচ্ছন্ন অভিযানের তালিকা থেকে। এ পর্যন্ত সবই ঠিক ছিল। বিছনার চাদর ঝাড়ি দিয়ে চমকে ওঠে সে।

চাদরের নিচে ৫টি কনডম রাখা ছিল। এখন আছে ৪টি। ঠিক যেখানে রাখা ছিল সেখানেও নেই। মাথা ঝিমঝিম করে ওঠে শিপ্রার! তানভিরকে সে সত্যিকার অর্থে কখনোই সন্দেহ করে না। কেবল খবরদারি বজায় রাখতেই সন্দেহ নাটক চালিয়ে যায় সে।

কিন্তু আজ সে এ কী দেখছে। যাকে এতকাল সহজ-সরল ভেবে এসেছে, বিশ্বাস করেছে সে এত জঘন্য! ঘৃণায়-ক্ষোভে কাপতে থাকে শিপ্রা। নিজেকে সামলে নেয়। শীতল চোখে তাকায় তানভিরের দিকে। অন্য কাজে ব্যস্ত থাকা তানভির শিপ্রার রুদ্রমূর্তি দেখে আৎকে ওঠে।

ভয়ংকর শীতল কণ্ঠের শিপ্রাকে সে বুঝে উঠতে পারে না। শিপ্রা বজ্র প্রশ্ন,, আরেকটা কই, কী করেছো তুমি? -কী আর একটা কই? শিপ্রার হাতে ধরা কনডমের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করে সে। কিন্তু কোনো অর্থই উদ্ধার করতে পারে না। তার চোখ শিপ্রার হাতেই আটকে থাকে। শিপ্রা আবার খেকিয়ে ওঠে।

-এখানে ৫টা রেখেছিলাম। আর একটা কোথায় গেল। নিশ্চয়ই তোমার কোনো গার্লফ্রেন্ড ফ্লাটে এসেছিল। না, হয় ওই বুয়াটা। ছিঃ, তুমি এতটা নীচ।

আমি এখন কি নিয়ে থাকবো, কাকে কাকে বিশ্বাস..। শেষ করতে পারে না শিপ্রা। হুহ করে কান্না এসে গলা আটকে যায়। তানভির ঠিক কি বলবে বুঝি উঠতে পারে না। ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকে।

বেলকনি থেক তাদের তিন বছর বয়সে একমাত্র ছেলেটি দৌড়ে রুমে ঢোকে বলে, আম্মু আম্মু দেখ আমার বেলুনটা কত্ত বড় হয়েছে। বাবা বাবা বেলুনটার মুখটা বেঁধে দাও না..

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।