আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১৫০ দালালের কাছে জিম্মি রমেক হাসপাতাল

১৫০ দালালের হাতে জিম্মি রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা। খোদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও একই অবস্থায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দালাল ছাড়া হাসপাতালে ভর্তির সুযোগ নেই। কোনোভাবে ভর্তি হলেও শয্যা জোটে না। চলে লাশ নিয়ে টানাহেঁচড়া। জানা যায়, এক হাজার শয্যার এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকে দুই থেকে আড়াই হাজার রোগী। এ ছাড়া জরুরি ও বহির্বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসেন ৫০০-৭০০ জন। এদের বেশির ভাগ গ্রাম ও বাইরের জেলা থেকে আসা। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে হাসপাতালে গড়ে উঠেছে একটি দালাল চক্র। চক্রের সদস্য সংখ্যা ১৫০ জন। তারা পালা করে ডিউটি করেন। এদের কাজ হলো গ্রামের ও বাইরের জেলা থেকে আসা রোগীদের উন্নত চিকিৎসা, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, শয্যাসহ স্বল্প খরচে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রলোভনে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া। কিন্তু অর্থ নেওয়ার পর তাদের আর দেখা মেলে না। গতকাল হাসপাতালের ৩ নং ওয়ার্ডের রোগী মোজাম্মেল হক (৫৫) অভিযোগ করেন, পেটের ব্যথা নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালের কর্মচারী পরিচয়ে এক লোক তাকে শয্যা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাসে ৫০০ টাকা নেন। আমাকে ওয়ার্ডের বাইরে অপেক্ষা করতে বলে সেই যে চলে গেছেন আজ পর্যন্ত তার দেখা পাননি। পরে মেঝেতে ঠাঁই হয়েছে তার। ২ নং ওয়ার্ডের রোগী শাহানা বেগম (৪০) অভিযোগ করেন, বুধবার তার রক্ত পরীক্ষার জন্য এক লোক এসে ৫০০ টাকা আর রক্ত নিয়ে গেছে। অদ্যাবধি তার দেখা মিলছে না। এদিকে হাসপাতালে মারা যাওয়া রোগীর লাশ দালালদের নিজস্ব মাইক্রোবাস বা পিকআপ ছাড়া নেওয়া সম্ভব হয় না। এ নিয়ে রোগীর অভিভাবক ও দালালদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে কয়েকবার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে। অপরদিকে হাসপাতালের আশপাশে গড়ে উঠেছে ৬৩টি প্রাইভেট ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ৫১টি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি। এসব প্রতিষ্ঠান রোগী বাগিয়ে আনাতে নিয়োগ করেছেন বেশ কিছু দালাল। একজন রোগী বাগিয়ে এনে ক্লিনিক ও হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারলে কমিশন দেওয়া হয় ৩০০-৪০০ টাকা। আর ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার ধরনভেদে ২০০-৩০০ টাকা কমিশন দেওয়া হয়। দালাল পলাশ জানান, কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদককে ২০০ এবং সভাপতিকে ২০০ টাকা দিতে হয়। অবশ্য চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্রাহাম লিংকন এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। হাসপাতালের পরিচালক ডা. রিয়াজুল করিম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, রোগী ও তাদের অভিভাবক এবং আমরা দালালদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছি। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা হলেও অদ্যাবধি একজন দালালও গ্রেফতার হয়নি।

পুলিশ সুপার আবদুর রাজ্জাক বলেন, কয়েক দফায় বেশ কয়েকজন দালালকে গ্রেফতার করা হয়। জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও তারা দালালিতে জড়িয়ে পড়েন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.