আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সোজাসাপ্টা কথাঃ ব্লগিং, সামহোই. ব্লগ-ব্লগার এবং বর্তমানকাল

জাস্ট প্লেয়িং এ রোল হেয়ার, অন বিহ্যাফ অফ বোকামন। রঙিন স্বপ্ন বুকে সাদা-কালো আর অগণিত ছায়ার গল্পকথন । নাথিংস রিয়্যাল, অল আর ভার্চুয়াল এক্সোসক্যালিট্যন ...।
অনলাইন ডায়েরী ছিলো বাল্যকাল । উন্মুক্ত দিনপঞ্জি তার যৌবন এবং পরিণত বয়সে এসে যার পরিপক্ব রূপ দাঁড়ালো ব্লগ ।

ব্লগ থেকেই প্রচলন ঘটলো ব্লগিং এবং ব্লগার । অনলাইনে লেখালেখি করার সংস্কৃতি জনপ্রিয় হওয়ার পিছনে এই ব্লগ নামক মাধ্যমটির ভূমিকা অনস্বীকার্য । আধুনিক ব্লগ মিডিয়া তার নিজস্ব ক্ষেত্র ছাড়িয়ে আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে । ডায়েরিস্টস হয়ে উঠছেন, একজন পরিপূর্ণ ব্লগার । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের নোট অপশনটি তারই উল্লেখযোগ্য উদাহরণ বলা যেতে পারে ।

ব্লগের এহেন জনপ্রিয়তার পিছনের কারণ অনুসন্ধান করলে সুনির্দিষ্টভাবে যে আচরণটি বের হয়ে আসবে তা হলো- ব্লগারদের মধ্যে ভার্চুয়াল সম্পর্ক/যোগাযোগ, মতামত বিনিময় এবং পাঠ প্রতিক্রিয়ার সরাসরি আদান-প্রদান । একজন ব্লগার তার চিন্তা-ভাবনা-দর্শন-ব্যক্তি মতামত ব্লগে পোস্ট আকারে তুলে ধরেন এবং পাঠকদের সাথে মিথষ্ক্রিয়ায় তার ভাবনা বহূমাত্রিকতা পেয়ে থাকে । ব্লগার একইসাথে পাঠক এবং লেখক । তিনি শুধু লিখেই ব্লগার চরিত্রটির কার্য-ক্রিয়াশীলতার ইতি টানেন না বরং একজন পাঠক চরিত্রেও উপনীত হোন । অনলাইনে নিজের পরিচয় বোল্ড ক’রাটিও তার কর্ম-প্রক্রিয়ারই অংশ ।

হ্যাঁ ! প্রত্যেক ব্লগারই একজন লেখক যেহেতু তিনি ব্লগ লিখছেন । তবে একজন প্রকৃত লেখক যেভাবে তার লেখনীর গায়ে শব্দজামা পড়িয়ে বাক্যের হাত ধরে দাঁড়ি-কমার সিগন্যাল মেপে পাঠকের পাঠ্যবাড়ি অবধি পৌঁছানোর চেষ্টা করে থাকেন; ব্লগার কিন্তু ঠিক সেভাবে তার লেখালেখিকে এপ্রোচ করে থাকেন না । আর এ কারণেই কখনো কখনো ব্লগকে খেরোখাতা/রাফখাতাও বলা হয়ে থাকে এবং ব্লগারদেরকে লেখিয়ে । যদিও বর্তমান জমানায় ব্লগে মূল ধারার লেখালেখি/সাহিত্যচর্চা করার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে । জ্বী ! ব্লগে শতভাগ প্রফেশনাল লেখকগনও অংশগ্রহণ করে থাকেন ।

তাদের কাছে ব্লগের ব্যবহার অনেকটাই মঞ্চনাটকের স্টেজের মতই । অর্থাৎ পাঠকের সাথে সরাসরি দেখা-সাক্ষাত করার উপকারী যন্ত্র । এবং একই সাথে এক্সপেরিমেন্ট করা/সৃজনশীলতা বাড়ানোর কার্যকরী অস্ত্রও বলা যেতে পারে । ব্লগে লিখতে লিখতে ব্লগার অনেক সময় নিজেও পরিপক্ব লেখকে রূপান্তরিত হয়ে যান। আর এটা সম্ভব হয় পাঠকদের আন্তরিকতা এবং ভরপুর উৎসাহ প্রদানের কল্যাণেই ।

ঠিক এই মুহূর্তে আপনি যে ব্লগ প্লাটফর্মটিতে আছেন এবং আমি যেখানে কথাগুলো লিখছি; সামহোয়্যারইনব্লগ । এই ব্লগটি তার যাত্রার শুরু থেকেই লেখক-কবিদের জন্মস্থান , অস্বীকার করা যাবে কী ! ব্লগারগণ এখানে দু-চার লাইন লিখতে লিখতে আবিষ্কার করেছেন তার নিজের মধ্যে থাকা লেখক সত্তাটির । একইভাবে ব্লগটি অনেক মেধাবী, জ্ঞানী-গুণী মানুষদের পদচারণায় মুখরিত হয়েছে, সমৃদ্ধ হয়েছে ব্লগটির ব্লগিং কালচার । কখনো কখনো জ্ঞানপাপীদের ফেরী করে বেড়ানো দূষিত জ্ঞানসুধায় রক্তাক্ত হয়েছে সামহোয়ারের নীল আকাশ । আর এটাও খুবই স্বাভাবিক হয়তো ! ভালো-খারাপ মিলিয়ে সমাজ, আর ব্লগে যারা আসেন তারা তো সমাজেরই অংশ ! ভিনগ্রহবাসী কেউ এ-সেতো ব্লগ লিখেন না ! পৃথিবীটাকে দু-ভাগে ভাগ করা যায়- ভালো এবং মন্দ; আর বাংলাদেশ আজ দু-ভাগে বিভক্ত আ দল-ব দল ।

সমাজের প্রতিটি স্তরকে অন্যায়-অযৌক্তিকভাবে অসৎ রাজনীতিকরণে বন্দি করার মারাত্মক ভয়াবহ ফলাফল আজ শুধু ব্লগে নয় আমজনতার চায়েরকাপেও বিরুপ প্রভাব ফেলেছে । তাই আমি ব্লগ কর্তৃপক্ষ বা ব্লগ প্লাটফর্মটিকে দায়ী করতেও সংকোচ বোধ করি । বাংলা ব্লগের সবচাইতে জনপ্রিয় গণমাধ্যম মুখটি হলো সামহোয়্যারইনব্লগ । কিছুটা সূক্ষ্ম দৃষ্টিপাত করলে দেখা যাবে সাধারণ/প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পাঠক-লেখক-ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের অবাধ চলাচল এবং অংশগ্রহণের কল্যাণেই ব্লগটি এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলো । ব্লগারগণ তার মত প্রকাশে স্বাধীনতা পেয়েছিলো, পাঠক ব্লগারদের বিশেষ উপস্থিতি পেয়েছিলো, এবং ব্লগারদের মধ্যে একটি সুসম্পর্কের দারুণ পরিবেশ ছিলো ।

প্রবাসী পাঠক তার স্বদেশভাবনা দুর দেশে থেকেও জানিয়ে দিতে পারতেন । রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক এবং বিভিন্ন সামাজিক-ব্যক্তি সামাজিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হতো, জনমত গঠনেও সহায়ক ছিলো ব্লগটি । পত্রিকায় ছাপার অযোগ্য ঘোষিত লেখাটি ঠিকই ব্লগ পাঠকগণ আপনমমতায় ভালোলাগা জানিয়ে যেতেন । অতি সাধারণ মাপের পাঠক-লেখক/ব্লগারদের প্রাণোচ্ছল অংশগ্রহণ ব্লগটিকে যেমন জনপ্রিয় করে তুলেছে ঠিক একইভাবে ব্লগে লেখালেখির মান অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে বলে তথাকথিত সম্ভ্রান্তজাতের লেখকসমাজ মনে করে থাকেন । আসলে এই ধারনা পোষণ করা তাদের ব্লগ সম্পর্কে অজ্ঞতা/জ্ঞানেরই সীমাবদ্ধতা ছাড়া আর কিছুই নয় ।

যেহেতু সামহোয়ারইনব্লগ প্লাটফর্মটি নির্দিষ্ট কোন সাহিত্যপাতা কিংবা বিষয়ভিত্তিক ব্লগ মাধ্যম নয় । সকল বিষয়ের জন্যই উন্মুক্ত ! ব্লগারগণ তার নিজের মত/ইচ্ছাতেই সাবজেক্ট বেছে নিবেন এবং ব্লগিং করে যাবেন । সকল মত-অমতের মিলনমেলা হবে, সাহিত্যপাতা হবে, ব্যক্তি-ভাবনার-অভিজ্ঞতার সরল প্রকাশ হবে, ইনফরমেশন হাইওয়ে হবে, সামাজিক বৈষম্য বা অনাচার-অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামমুখর হবে, বিতর্ক-ঝগড়াও হবে ! আর এভাবেই সমাজবদ্ধ মানুষগণ অনলাইনেও তার নিজস্ব সংস্কৃতি-সভ্যতার ছাপ রেখে যাবেন । ব্লগার অবশ্যই সমাজের অগ্রবর্তী জনগোষ্ঠীরই অংশ । যে প্লাটফর্মটি নিরপেক্ষতার সাথে সর্বোচ্চ সাপোর্ট দিতে পারবে সেটাই সবথেকে অধিক পাঠকপ্রিয় হয়ে উঠবে ।

এটাই বাস্তবতা । সমাজে বসবাস করতে চাইলে মানুষকে সামাজিক হতে হয় । ঠিক একইভাবে ব্লগ একটি অনলাইন ব্যবস্থা হলেও সে সামাজিকতা-সামাজিক ব্যবস্থার বাইরে নয় । কারণ প্রত্যেক ব্লগারইতো একজন রক্ত-মাংসের মানুষ ! ব্লগে আমাদেরই বাবা-মা, ভাই-বোন, সন্তান, ছাত্র, শ্রদ্ধেয় শিক্ষক, বন্ধু, প্রতিবেশী অথাৎ আমাদের সমাজেরই কেউ না কেউ ব্লগিং করে থাকেন । তার ব্যক্তিমর্যাদা রয়েছে, ধর্ম বিশ্বাস রয়েছে, নিজস্বতা রয়েছে, এমনকি রাজনৈতিক মতাদর্শেরও অনুসারী তিনি হতে পারেন ।

প্রত্যেকরই কোরডেফিনেশন থাকতেই পারে । কিন্তু মত প্রকাশের স্বচ্ছন্দতার নামে স্বাধীনতার দায়িত্ব ভুলে অন্যের মত-বিশ্বাসকে হেয় করার অধিকার কোন ব্লগারের-ই নেই । আর যদি এমনটা করাও হয়; সামহোয়ারইন ব্লগ এবং অন্যান্য ব্লগের বর্তমান করুণ অবস্থা তারই দৃশ্যমান মুখাবয়ব । এখানে ব্লগ কর্তৃপক্ষ কে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করতে হবে, বিকল্প নাই । খুব সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অভিযোগ গুরুতর থেকে অধিক গুরুতর হচ্ছে যা ব্লগের সামগ্রিক সম্প্রীতি এবং ব্লগ প্লাটফর্মটির কোয়ালিটি ব্লগিংয়ের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ।

০. .. .. .. .. .. .. .. .. .. .. (বহুবার আলোচনা হয়েছে, তর্ক-বিতর্ক হয়েছে কিন্তু গোঁড়ায় বিরাট গলদ থাকার কারণে সমাধানে পৌঁছানো সম্ভবপর হয়নি, নতুন করে আমি প্রসঙ্গটি তুলে আমার মূল্যবান সময় জলে ফেলতে চাইছি না। এটুকো বলে রাখি যতদিন পর্যন্ত না, সুস্থ রাজনৈতিক চর্চাটি আমাদের রাজনীতির মতাদর্শে বিশ্বাসী মানুষদের প্রতি দিনকার অভ্যেসে পরিণত হবে, হয়তো এভাবেই চলতে থাকবে ) ১.নির্বাচিত পাতা ২.মন্তব্যের উত্তর না দেয়া, নতুন রেজিস্ট্রেশন করা ব্লগারদের উপেক্ষা করা ৩.সিন্ডিকেট বা দল বেঁধে ব্লগিং করার অভিযোগ ৪.মতামতের আদান-প্রদান;গিভ এন্ড টেকের মত হয়ে যাওয়া ৫.গঠনমূলক মন্তব্যের আকাল, পোস্ট না পড়ে বা পোস্টের বিষয়বস্তু বুঝার চেষ্টা না- করেই বিদুৎগতিতে মন্তব্য করা, তোষামোদি/প্রশংসা বাক্যের রগড়ারগড়ি এবং সমালোচনা গ্রহণে বিমুখতা অথবা সমালোচনার নাম করে আত্মঅহংকার/লোক দেখানো পান্ডিত্য-দাদাগিরি ফলানো । ৬. ব্লগে মৌলিক পোস্টের সংখ্যা কমে যাওয়া, কপি-পেষ্ট বা অন্যের লেখা নিজ নামে চালিয়ে দেওয়া, সুত্র উল্লেখ করা ছাড়াই অনূদিত পোস্ট, একই দিনে(২৪ ঘন্টা) একাধিক পোস্ট করা । এসকল বিষয়ই সুস্থ ব্লগিং এবং সুস্থ ব্লগারদের জন্য ভীষণ রকম পীড়াদায়ক । নির্বাচিত পাতা : আমি নিজে খুব একটা, বলতে গেলে নির্বাচিত পাতা থেকে দূরেই থাকি ।

একজন স্বাধীন পাঠক, পৃষ্ঠাগুনে পোস্ট পড়তেই পছন্দ করি । যারা হাতে খুব অল্প সময় নিয়ে ব্লগে আসেন তাদের ভরসা কিন্তু ঐ নির্বাচিত পাতাই । এছাড়াও যারা পরিশ্রম-মূল্যবান সময় এবং মেধা ব্যয় করে এক একটি পোস্ট তৈরি করে থাকেন তাদের সবাই চাইবেন তার পোস্টটি নির্বাচিত পাতায় আসুক । সত্যি করে বলতে কে না চায় তার পোস্টটি নির্বাচিত হোক ! প্রত্যেকরই তার নিজ সৃষ্টি অমূল্য এবং সন্তানের মতই প্রিয় । তাই ব্লগে যারা ভালো লিখেন তাদের উৎসাহ প্রদানে এবং পোস্টের সম্মানার্থে সর্বাধিক গুরুত্ব ও নিষ্ঠার সহিত ব্লগ সম্পাদককে তার দায়িত্ব পালন করা উচিত ।

যদিও যে হারে নতুন পোস্টের আগমন ঘটে প্রতি ঘণ্টায়; কাজটি নিঃসন্দেহে বড়ই কঠিন । কাজটি সহজ করতে ব্লগ অথোরিটি, ব্লগারদের সাহায্য নিতে পারেন। আসলে নির্বাচিত পাতায় ব্লগ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে আমার কোন মাথাব্যথা নেই । আগেই বলেছি, আমার ভালোলাগাই আমার নির্বাচিত পোস্ট; তাতে শেক্সপিয়র বা রবীন্দ্রনাথের দ্বিমত থাকলেও কিছুই যায় আসে না । হাহ হা হা :-) মন্তব্যের উত্তর না দেয়া, নতুন রেজিস্ট্রেশন করা ব্লগারদের উপেক্ষা করা: সময়াভাবে উত্তর দিতে দেরী হতেই পারে ।

তবে ইচ্ছাকৃতভাবে মন্তব্যের উত্তর না দেওয়া, ব্লগার/লেখকের অভদ্রতার পরিচয় । (কথায় আছে ব্যবহারে বংশের পরিচয়) যারা এই কাজটি করছে তাদের কাছ থেকে ১০০০ হাত দূরে থাকাই ভালো । একজন ভালো লেখক/ব্লগার হওয়ার আগে আমরা একজন ভালো মানুষ চাই । ভালো অনেকেই লিখতে পারেন তবে ভালো এবং ভদ্র মানুষের অভাব রয়েই যাচ্ছে । উত্তর দেওয়ার মত ইচ্ছে বা সময় হাতে যদি না-ই থাকে মন্তব্যের অপশনটি বন্ধ রাখাই শ্রেয় ।

“ব্লগে লিখেই বেশ জনপ্রিয় হয়েছেন এখন নিজেকে সেলিব্রেটি ভাবছেন ! বিশাল কিছু একটা হস্তগত করে ফেলেছেন যে; অন্যের পোস্টে মন্তব্য করতে অথবা নিজের পোস্টে মন্তব্যের উত্তর দিলে সম্মানহানি হয় ! আপনি নিশ্চিতই একজন বাজে ব্লগার এবং অহংকারী । জানেন তো অহংকারীর পতন অবশ্যম্ভাবী । ” ব্লগে যারা নতুন আসছেন তাদেরকে ব্লগে/লেখালেখির জগতে নতুন মনে করার কোন কারণ নেই যতক্ষণ না তিনি নিজেকে নবীন বলে পরিচয় দিচ্ছেন । ব্লগার পরিসংখ্যান ব্লগারের পরিচয় হতে পারেনা । তিনি কী লিখছেন, কী ধরনের পোস্ট পড়ছেন, মন্তব্যের ধরণ/ভাষা ইত্যাদি দেখেই ব্লগার সম্পর্কে ধারনা নেয়া উচিত ।

আর ব্লগার সম্পর্কে এত তত্ততালাশ করার আবশ্যকীয়তা আমি দেখিও না ! এখানে-তো কেউ ঘোড়ার রেস খেলতে আসেন না ! অথবা প্রথম-দ্বিতীয়-তৃতীয় হতে ! এ লক্ষ্যে যারা আসেন খুবই স্বল্প সময় থাকেন অতঃপর ঝরে যান । ইহাই বাস্তবতা । ব্লগে সেফ হতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়, এ নিয়ে অনেকেই হতাশ হয়ে থাকেন । তাদের উদ্দেশ্যে বলতে হয়- ব্লগ কর্তৃপক্ষ আপনাকে যখনই সেফ করছেন ঠিক তখন থেকেই ব্লগের প্রথম পাতায় পোস্ট করার হাতিয়ারটি আপনার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে । হাতিয়ার ব্যবহার করতে দেওয়ার পূর্বে, ব্লগ কর্তৃপক্ষ আপনাকে যাচাই-বাছাই করতেই পারেন ।

যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার সময়কাল অবশ্য প্রলম্বিত করাটা ঠিক নয় । এতে করে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েন সম্মানিত অতিথিগণ । সিন্ডিকেট বা দল বেঁধে ব্লগিং: খুব কমন একটা অভিযোগ । কিন্তু দীর্ঘ ছয় বৎসরে আজ পর্যন্ত আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারিনি সিন্ডিকেট বা দল বেঁধে ব্লগিং করা কাহাকে বলে । এবং সিন্ডিকেটবাজদের দেখার সৌভাগ্যও আমার হয়নি ।

স্কুল-কলেজ-ভার্সিটিতে ক্লাসমেট-ব্যচ্ শব্দগুলোর সাথে হয়তো সবাই পরিচিত । সেভাবে ব্লগেও ব্লগমেট থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু কী ! আর নিয়মিত পাঠক, যদি লেখক/পোস্টদাতার ফ্যান হয়েই যান সেটাতো ব্লগার/লেখকের কৃতিত্ব । যদি এমনটা হয় যে আপনি নির্দিষ্ট একটি গণ্ডির/বৃত্তের বাইরে যেয়ে অন্যকারো পোস্টই পড়ছেন ই- না বা মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকছেন । আপনার পাঠক স্বাধীনতা আপনি উপভোগ করতেই পারেন । তবে মনে রাখতে হবে; বৃত্তে বন্দি হয়ে পড়লে বৃত্ত যখন হারিয়ে যাবে, আপনাকেও হারিয়ে যেতে হবে ।

ব্লগিংটাকে আর উপভোগ্য মনে হবে না । ব্যক্তিগত সম্পর্ক ব্লগে না নিয়ে আসাটাই বুদ্ধিমান ব্লগারের কাজ । পোস্ট-মন্তব্য-মতামতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে ব্লগিং আচরণ । এতে করে নিরপেক্ষতাও বজায় থাকবে । পোস্ট পড়ুন, লেখাটি নিয়ে ভাবুন (দ্যান) ব্লগারের নামটি দেখুন ।

মার্কিং করে পোস্ট পড়া, ব্লগার/লেখিয়ে/লেখক এবং পাঠক উভয়ের জন্যই অশুভকর । ৫ এবং ৬ নং অভিযোগগুলোর ব্যপারে বলতে গেলে অনেক কথাই চলে আসবে । বিস্তারিত লেখার মত সময় পাচ্ছিনে । আশাকরছি মানসম্পন্ন এবং দায়িত্বশীল ব্লগিং ই- এ সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায় । সংক্ষেপে বলতে হয়- অপাত্রে প্রশংসা করা প্রশংসাবাক্যের অপচয় মাত্র ।

উৎসাহদানে পরিমিত প্রশংসাই যথেষ্ট । গঠনমূলক মন্তব্য পোস্টের জন্য মূল্যবান সম্পদ, তবে মন্তব্যের আকার অত্যধিক বড় না-হয়ে যায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে । সুচিন্তিত সমালোচনা পোস্টের অলংকার পক্ষান্তরে অন্য একটি মন্তব্যের দেখাদেখি, সমালোচনার কপি-পেস্ট করার প্রয়োজন নেই । তাই বলি- পোস্ট পড়ুন, মন্তব্য করুন অতঃপর অন্যের মন্তব্য দেখুন । সমালোচনা পজেটিভভাবেই নেওয়ার চেষ্টা করুন ।

সমালোচনাটি আপনার কাছে গ্রহনযোগ্য মনে না হলে অবশ্যই পাকাপোক্ত জবাব দিন । ব্লগে আমরা সমালোচকদের সমালোচনা চাই না, পাঠকদের সমালোচনা চাই । যিনি পর্যাপ্ত সময় ব্যয় করে শব্দ ধরে ধরে পোস্ট পড়ার মত মন-মানসিকতা রাখেন, তিনিই শুধু সমালোচনা করুন । ‘সাহিত্য সমালোচনা’ একটি চমৎকার সুন্দর শিল্প । যা করার মত ক্ষমতা-দক্ষতা-পর্যাপ্ত সময় আমাদের সকলের নেই ।

দু-এক ঘণ্টা সময় নিয়ে ব্লগে আসলে ছোট করেই লিখতে হয়- ভালো লাগলো । কিছুই করার থাকে না আমরা সবাই সময়ের হাতে রাজবন্দী । এছাড়াও অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, পাঠকের পাঠ অভিজ্ঞতার অতৃপ্তি থেকে করা মন্তব্যকে সমালোচনা বলে সংজ্ঞায়িত করা হয় । দুঃখের সাথেই বলতে হচ্ছে সামহোয়ারইনব্লগ ব্লগিং সাহিত্যের জন্য আদর্শ স্থান হলেও খাঁটি সাহিত্যচর্চার জন্য এখন পর্যন্ত প্লাটফর্মটি পুরোপুরি উপযোগী হতে পারেনি । প্রয়োজনও দেখি না ।

আই উড লাইক টু ডু ইটিসি ব্লগিং ইন সামহোয়্যারইনব্লগ । কি-বোর্ড দিনকে দিন কলমশক্তির বিকল্প হয়ে উঠছে, তাই এর ব্যবহারেও সতর্ক থাকবে হবে সবাইকে । যদিও এই ব্লগটি সহ অন্যান্য ব্লগের একজন পাঠক হিসেবে স্বীকার করি ব্লগগুলোতে অসাধারণ লেখনীগুনে গুণান্বিত ব্লগারদের ঋদ্ধ লেখা পড়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে । এদের অনেকই দুর্দান্ত ফিচার পোস্ট লিখতে পারদর্শী, ইনফোরমেটিভ পোস্ট/লেখা চুরি হয়ে যায়, তাই এ জাতীয় পোস্টের সংখ্যা ইদানীং বেশ কমে যাচ্ছে। ফিচার (রিভিউ, ভ্রমন পোস্ট, ইতিহাস, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং, বিশেষ সংকলন) পোস্ট ব্লগের পাঠক বৃদ্ধি করে থাকে, এবং নতুন পাঠক তৈরিতে সন্দেহাতীত ভূমিকা রাখে ।

ব্লগে বেশ কয়েকজন গল্পকার-কবি আছেন, যাদের লেখা গল্প-কবিতা দেশীয় পত্রিকা-সাময়িকীতে ছাপা হওয়া সাহিত্য থেকেও অতি উঁচু দরের এবং রুচিশীল সাহিত্যমান সমৃদ্ধ । এবং এমন অনেক ব্লগার দেখেছি যাদের জ্ঞানপাতা যথেষ্ট রিচ্ এবং মানুষ হিসেবে অতিশয় বিনয়ী । নবীন লেখকদের নতুন নতুন সব আইডিয়া/থিম/থট নিয়ে লিখে ফেলা/মেকিং করা সম্ভব ক্লাসিক কিছু একটা । এটাই ব্লগের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ দিক । লেখালেখির জন্য ভাবনা-রসদের যোগান দিতে ব্লগারদের তুলনা নেই ।

ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত সাহিত্যপাতার সম্পাদকেরা ব্লগের লেখা/পোস্টকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে চাইলে আমি একমত পোষণ করতে রাজি নই । বিশিষ্ট সম্পাদক-প্রকাশক সাহেবের(পরিচিত ভাইবন্ধু) সাথে ফোনোআড্ডায় বলছিলাম- আরেহ্ ভাই ! বানান-বাক্য চেক করার জন্য প্রুফ রিডার পাবেন, কিন্তু লেখকস্বত্তার ফিলোসফিক্যাল ণোলেজের মৌলিকতা কোথায় পাবেন ? হ্যা ! … আমেরিকা‘স গট ট্যালেন্ট ২০১৩ বিজয়ী কেনেচি ইবিনার ক্রিয়েটিভিটি দেখে আপনি নিশ্চয়ই হতবাক-অবাক হয়েছেন ! প্রতিটি মানুষের মধ্যে থাকা এই ইনডিভিজ্যুয়ালিটির কদর করাটা মানবজাতির জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে বলে মনে করি । একমত হইলে তালি, মতের অমিলে গালি হোক না সে বাবার বয়সী চিন্তাকারী দেখুন, বলুন, করুন বলে আমি কিন্তু আপনাদের উপদেশ/পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করছি না । সে যোগ্যতা আমি রাখিও না । অতি সাধারণ আমজনতা পাঠক আমি ।

ইচ্ছে হলে বই লিখি, ইচ্ছে হলে কৃষিকাজ করি । ব্যস্ততার ফাঁকে, হাতে দশমিনিট সময় পেয়ে ইচ্ছে হলো ব্লগিং করি… সম্মানিত পাঠক, আমার শ্রদ্ধেয় ব্লগবাসী, পোস্টের কোন অংশের সাথে দ্বিমত বা অগ্রহনীয় মনে হলে নির্দ্বিধায় মন্তব্যে লিখতে পারেন । বুঝতেই পারছেন ব্লগটির সামগ্রিক একাল-সেকাল এবং দুর্বল দিকসমূহ নিয়ে একটি পোস্টে বিশদ করে লেখার মত ধৈর্য্য বা সময় আমার নেই । তাই যে পয়েন্টে আমি বলতে ভুলে গ্যাছি বা বিস্তারিত বলতে পারিনি আপনি মন্তব্যে লিখতে পারেন । আমি আপনাকে চিনিনে, আপনিও আমাকে চেনেন না ! আমরা কেউই পারিশ্রমিকের বিনিময়ে এখানে লিখছি না; মূল্যবান সময় উভয়েরই ব্যয় হয়েছে সুতরাং দ্বিমত-মতামত জানাতে ভয়-সংকোচ কিসের ! দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞান অর্জন করার সুযোগ রয়েছে ।

‘বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র’ হতে পারে আপনার একটি মতামত আমার কোন এক জানালায় আলো নিয়ে আসবে … আপনি শিক্ষক হয়ে গেলেন আমি ছাত্র … আস সালামু আলাইকুম, স্যার । [বোকামনের আপ্তবাক্য: সস্তা জনপ্রিয়তার পিছনে পিছনে ছুটতে ছুটতে হয়তো সেলিব্রেটি হয়ে যাওয়া যায় । তবে সে জনপ্রিয়তা অস্থায়ী এবং ক্যারিয়ার বিনষ্টকারী । নিজের কাজটি সততা এবং মেধার সাথে করে যান, ফেইম-পাওয়ার-মানি বোনাস পাবেন এবং মূলবেতন হবে “শ্রদ্ধা-সম্মান-দোয়া” । Draft 03:17, Zurich
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।