আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এইটা মনে হয় একেবারেই দু নম্বরী হয়ে গেল।



শেখ হাসিনার শাষনকালের একেবারে শেষ মুহুর্তে এসে কেন বিরোধি দল এতটা আন্দোলনমুখী হলেন? বিশ্বজিত খুন হলেন ওদেরই আন্দোলনের সময়, সাগড় রুনি হত্যা হলো, শেয়ার বাজার দ্বিতীয়বারের মত গিলে খেয়ে ফেললো, ডেসটিনি, হলমার্ক দিয়ে দেশটারে খোসা বানাইয়া ফেললো, এমনকি খালেদা জিয়াকে তার স্বামী, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের স্মৃতি বিজড়িত ক্যান্টনমেন্টের বাড়ী থেকেও যখন উচ্ছেদ করা হলো তখনো ওরা কোন আন্দোলন করলো না। যুদ্ধাপরাধ মামলায় ওদেরই জোটের কিছু নেতার যখন একের পর ফাসীর আদেশ হলো তখনও না। তাহলে এখন কেন? বাঁচতে হলে জানতে হবে ওদের সিক্রেট। ওরা মানে, বিএনপি, আওয়ামী লীগ। ওদের ধারনা আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে কুপোকাৎ করতে পারলে, অর্থাৎ পদত্যাগ করাতে পারলে, কিংবা নিদেনপক্ষে তাদের দাবীর কাছে সরকারের মাথা নত করাতে পারলে সেই মুহুর্তের নির্বাচনে সহজেই বিজয়ী হওয়া যায়।

এই ফালতু ধারনাটা পোষন করে উভয় দলই। যে কারনে কেউই কোন ছাড় দিতে নারাজ। আর বলা বাহুল্য এ জন্য দেশের একটা বিশাল জনগোষ্ঠিও দায়ী। তারা ভোটটাও দেয় সেভাবেই। কার গায়ের জোর বেশি, কার টাকা আছে, প্রভাব প্রতিপত্তি আছে এসবগুলো সমাজে এখনো বেশ বড় ফ্যাক্টর।

সুতরাং খেসারত তাদেরকেই দিতে হবে যেহেতু ভোটের মালিক তারা। আর তার প্রমান দেখুন, পুরো পাঁচটি বছর গা বাচিয়ে চলে একেবারে শেষ মুহুর্তে এসে তারা আন্দোলনের নামে তান্ডব করছে। তান্ডব কেন বললাম, একেবারে সুনির্দিষ্ট কারনে। আমি নিজে তত্বাবধায়ক সরকারের শুধু পক্ষেই নই, একেবারে সংবিধানে এ ব্যবস্হাকে ঝালাই মোছাই করে পাকাপোক্তভাবে সন্নিবেশিত করার পক্ষে। কিন্তূ এ দাবীর নামে যা করা হচ্ছে সেটা কোনভাবেই আন্দোলন হতে পারে না।

সমর্থনযোগ্য নয়। এরশাদের সময়েও অনেকবার অবরোধ হয়েছে। নেতারা হাজার হাজার কর্মী সমর্থক নিয়ে একেবারে ট্রেনের সামনে দাড়িয়ে যেতেন। খুব কম সময়ই রেল লাইনের ফিস প্লেট খুলে ফেলা হয়েছে, তবে কখনোই ট্রেনের বগিকে ফেলে দিয়ে হাজার হাজার যাত্রীকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয় নাই, যাত্রী বোঝাই বাসের মধ্যে পেট্রল বোমা ছুড়ে দিয়ে একের পর এক নাশকতার ঘটনা কখনোই দেখা যায় নাই। অসহায় মানুষকে পুড়িয়ে মারা হয় নাই।

এছাড়া যেহেতু দেশের সিংহভাগ মানুষ তত্বাবধায়ক সরকারে পক্ষে, সুতরাং তারা ইচ্ছে করলেই কিন্তূ একটা ঢাকা অবরোধ কিংবা সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত গণভবন কিংবা সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচী দিয়ে দিনরাত সেখানে লক্ষ লক্ষ লোকের সমাবেশ চালিয়ে যেতে পারতেন। না হলে কমপক্ষে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করে রাখতে পারতেন। এতেও সরকার বাধা দিত, গুলি চলতো কিন্তূ সেক্ষে্ত্রে আহত বা নিহত হতেন শুধুমাত্র দল বা জোটের নেতা, কর্মী, সমর্থকেরা। কোনভাবেই দেশের সাধারন মানুষ যিনি তার অসুস্হ মায়ের জন্য ঔষধ কিনতে বের হয়েছেন, বা ছেলে/মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে বা দিতে গিয়েছেন, বাজার করতে বের হয়েছনে, এবং যিনি হয়তো জীবনে কখনোই কোন রাজনৈতিক দলের মিছিল মিটিং এ যান নাই তাদেরকে ক্ষতির সম্মুখিন হতে হতো না। অপরাধ না করেও তাদেরকে জীবন দিতে হতো না।

হ্যা, এটাও ঠিক, নেতারা হয়তো বলবেন, আমি নিজেই যদি মারা যাই তাইলে ঐ কপাল পোড়া, নাদান পাবলিকদেরকে নেতৃত্ব দিবে কে, মন্ত্রী হবে কে, লুটপাট করে আখের গোছাবে কে? এত টাকা পয়সা ভেট দিয়ে কোন রকমে একটা পদ পদবী যোগাড় করেছি কি ঐ পাবলিকের জন্য জীবনটা অকালে বিসর্জন দেবার জন্য? এইটাই যদি হয় মনোবাসনা, আর সাথে থাকে ভারত কিংবা পাকিস্তান থেকে আসা রসদ, তাইলে তো এ সংকট কাটবে না। রাজপথেই সমাধান হবে, সেক্ষেত্রে আল্লাহর দোহাই, পাবলিকরে একটু সতর্ক সংকেত দিয়েন, প্লিজ। এই কানাডাতে কোন দোকানেও যদি পানি দিয়ে ঘরটা একটু মোছা হয়, সেখানেও একটা সতর্ক সাইনবোর্ড লাগানো হয় যাতে কেউ পা পিছলে পড়ে গিয়ে আহত না হন। আর আপনারা পাবলিকের ভালো করার কথা বলে ক্ষমতায় আসতে চান তাদেরই জীবনকে কুরবানী দিয়ে, অথচ একটু সতর্ক সংকেতও দিবেন না, এইটা মনে হয় একেবারেই দু নম্বরী হয়ে গেল। যাকে বলে যেড ক্লাশ কাজ।

একটু ভেবে দেখবেন প্লীজ!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।