আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আলুর বস্তায় কখনো বিড়াল থাকে? (সাথে আলু কাহিনী ফ্রি!)

সফল ব্লগার নয়, সত্যবাদী ব্লগার হওয়াই হোক আমাদের লক্ষ্য। আলু এমন একটা সব্জি যা আমিশ-নিরামিশ সব কিছুতেই ব্যবহার করা যায় আর ব্যাচেলরদের জীবনে আলুতো বিশেষ অর্থ বহন করে। হঠাৎ যখন বুয়া আসেনা আবার বাইরে খেতে যেতে ইচ্ছাও করে না তখন চট করে চুলায় চাল আর আলু চাপিয়ে গরম গরম ভাত আর আলু ভর্তা খেয়ে নেওয়া যায়। তাই আলু আর কারো জীবনে করুক আর না করুক আমার জীবনে একটা বিশেষ অর্থ বহন করে। আজ তাই ভাবলাম আলু নিয়ে কিছু লিখি।

কারণ যে আলু আমাদের এত উপকারে আসে তা নিয়ে না লিখলে তো আলুর অসম্মান!!! কিন্তু আলু বিষয়ে আমার জ্ঞান ঐ আলু ভর্তা পর্যন্তই! তাই ব্লগ আর উইকি ঘেটেঁ কিছু তথ্য নিয়ে বিক্ষিপ্ত ভাবে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করলাম :পি ক. প্রথমেই জেনে নিই আলু কি এবং আলুর ইতিহাস: আলু বহুল প্রচলিত উদ্ভিজ্জ খাদ্য। এটি কন্দজাতীয় (tuber) এক প্রকারের সবজি, যা মাটির নিচে জন্মে। এর আদি উৎস দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ, সেখান থেকে ১৬শ শতকে এটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। উচ্চ পুষ্টিমান এবং সহজে ফলানো ও সংরক্ষণ করা যায় বলে এটি বিশ্বের সর্বাপেক্ষা প্রচলিত সবজিগুলো মধ্যে অন্যতম। আলু একটি সুষম ও পুষ্টিকর খাবার।

আলু'র বৈজ্ঞানিক নাম Solanum tuberosum। এতে একদিকে যেমনি ভাতের মতো শর্করা আছে তেমনি সবজির মতো খাবার আঁশ, খনিজ লবণ, ভিটামিন ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিন আছে। প্রতি ১০০ গ্রাম আলুতে শর্করা আছে ১৯ গ্রাম, খাবার আঁশ ২.২ গ্রাম, উদ্ভিদ প্রোটিন ২ গ্রাম, খনিজ লবণ ০.৫২ গ্রাম যার মধ্যে পটাশিয়াম লবণই ০.৪২ গ্রাম, এবং ভিটামিন ০.০২ গ্রাম। অপরদিকে ১০০ গ্রাম চালে ৮০ গ্রাম শর্করা, খাবার আঁশ ১.৩ গ্রাম, উদ্ভিজ্জ প্রোটিন ৭.১৩ গ্রাম, খনিজ লবণ ০.২৮ গ্রাম এবং ভিটামিন আছে মাত্র ০.০০২ গ্রাম। তাই আলুর মধ্যে ভাতের তুলনায় শর্করা কম থাকলেও অন্যান্য উপাদান বেশি আছে।

প্রয়োজনীয় খাদ্যপ্রাণ বেশি থাকায় এটি একটি সুষম খাবার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। খ. এবার আসুন জেনে নিই আলু দিয়ে তৈরি কিছু মজার খাদ্যের রেসিপি: ১. আলু ভর্তা: ৩টা বড় সাইজের আলু, শুকনা মরিচ ২ টা মাঝারি, পেঁয়াজ ১ টা কুঁচানো, সরিষার তেল ও লবন আন্দাজমতো। প্রস্তুত প্রণালী : আলু ভালকরে ধুয়ে ৪ ভাগ করে নিয়ে পানি সহকারে সসপ্যানে করে চুলায় দিন। সিদ্ধ হলে নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিন। পেঁয়াজ কুচি ও শুকনা মরিচ অল্প তেলে ভাজুন।

পেঁয়াজ বাদামী রং হলে নামিয়ে নিন। এবার আলুর খোসা ছাড়িয়ে পিষনিতে পরিমানমতো লবন ও সরিষার তেল, পেঁয়াজ, মরিচ দিয়ে মিহি করে পিষুন। ভর্তা হয়ে গেলে হাতে নিয়ে ছোট ছোট ৬ টা গোল বল করে বাটিতে করে পরিবেশন করুন। ২. আলু ডিম ভর্তা: ডিম ২ টা, ১ টা মাঝারি সাইজের আলু, ১ টা কাঁচামরিচ কুচি, পেঁয়াজ কুচি ১ টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি ১ চা চামচ, লবন পরিমানমতো। প্রস্তুত প্রণালী : আলু ও ডিম সিদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে আলাদাভাবে চটকে নিন।

এবার পেঁয়াজকুচি, কাচামরিচ কুচি, আধা চা চামচ সরিষার তেল ও লবন দিয়ে ভালোভাবে মেখে ভর্তা তৈরী করুন। ৩.শিম-আলু-বেগুন ভর্তা: শিম ৮/১০টি, ১টা মাঝারি সাইজের বেগুন, ৪টা মাঝারি সাইজের আলু, পেঁয়াজ কুচি ১ টেবিল চামচ, ৩/৪ টা শুকনা মরিচ, সরিষার তেল ১ চা চামচ, ধনেপাতা কুচি ১ চা চামচ ও পরিমানমতো লবন। প্রস্তুত প্রণালী : শিম ও বেগুন একসাথে ও আলু আলাদা সিদ্ধ করুন। আলু ও বেগুনের খোসা ছাড়িয়ে শিমসহ চটকে নিন। পেঁয়াজ কুচি ও শুকনা মরিচ অল্প তেলে ভাজুন।

এবার সব উপকরণ একসাথে করে পিষনিতে ভালভাবে মিশিয়ে নিন। গ. এবার আসুন জেনে নিই আলু বিষয়ক মজার কিছু তথ্য: ১. একজন ব্যক্তি প্রতিবছর প্রায় ৩৩ কেজি আলু খায়। ২. ষোড়শ শতাব্দীতে স্প্যানিশেরা ইউরোপে আলু পাচার করে, পরবর্তীতে ইউরোপীয় নাবিক দ্বারা সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। ৩. এককভাবে চীন এবং ভারত সর্বাধিক আলু উৎপাদন করে থাকে। ৪. বিশ্বের সমগ্র অঞ্চলে কম বেশি আলু জন্মে।

ঘ. সবশেষে আলু জোকস: গেরস্তের তাড়া খেয়ে তিন চোর গিয়ে ঢুকল এক আলুর গুদামে। ঢুকেই তিনজন চটপট তিনটা আলুর বস্তার ভেতর ঢুকে পড়ল। ছুটতে ছুটতে গেরস্তও এসে ঢুকলেন আলুর গুদামে। কী মনে করে যেন হাতের লাঠি দিয়ে একটা বস্তায় খোঁচা দিলেন। ভেতর থেকে শব্দ এলো, ‘ম্যাঁও’।

‘ওরে, আলুর বস্তায় কখনো বিড়াল থাকে?’ বলেই গেরস্ত বস্তার ভেতর থেকে প্রথম চোরকে পাকড়াও করলেন। আরেকটা বস্তায় খোঁচা দিতেই ভেতর থেকে শব্দ এল, ‘ঘেউ ঘেউ’! ‘ওরে, আলুর বস্তায় কখনো কুকুর থাকে?’ বলেই গেরস্ত বস্তার ভেতর থেকে দ্বিতীয় চোরকে পাকড়াও করলেন। আরেকটা বস্তায় খোঁচা দিতেই এবার ভেতর থেকে শব্দ এল, ‘আলু, আলু’! কি? কেমন লাগলো? এখন বুঝতে পারছেন তো আলুর বস্তায় বিড়াল/কুকুর থাকে না, আলু থাকে :পি সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ্য থাকবেন, আর না পারলে অন্তত চেষ্টা চালিয়ে যান ভালো এবং সুস্থ্য থাকার [এই লেখায় ব্যাকরণগত/ভাষাগত ভুল যত গুলো করেছি তা আমার হাইস্কুলের বাংলা স্যার দেখলে এতক্ষণ নির্ঘাৎ ব্লগের উপর কান ধরে দাড় করিয়ে রাখতো। তবে তথ্যগত কোন ভুল থাকলে জানাবেন অবশ্যই। ]  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।