আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পত্রমিতালির আড়ালে রঙিন তিলোত্তমা!

দু'চার লাইনের একটি বিজ্ঞাপনে রঙিন রাতের হাতছানি! পত্রমিতালির আড়ালে কলকাতা মহানগরে 'কলগার্ল'-এর ব্যবসার বেশ রমরমা। সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে রাতের কলকাতায় দিব্যি চলছে সঙ্গিনী সরবরাহ। তিলোত্তমার উত্তর থেকে দক্ষিণ, গড়িয়া থেকে গড়িয়াহাট, বালি থেকে বেলগাছিয়া, সংবাদপত্রের বিভিন্ন পৃষ্ঠায় মিলবে উষ্ণতা। শ্রেণিবদ্ধ বিজ্ঞাপনে কলামে মিলবে মধ্যবৃত্তদের জন্য লোভনীয় সন্ধান। তবে, হাত-পা বাঁধা পুলিশ-প্রশাসনের।

'অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব' বলে জানালেন লালবাজারের কর্তাদের একাংশ।

কলকাতা থেকে প্রকাশিত যে কোনও সংবাদপত্রে লক্ষ করলেই নজর পড়বে পত্রমিতালির বিজ্ঞাপন। নিঃসঙ্গতা দূর করতে বন্ধু কিংবা বান্ধবী খুঁজে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিজ্ঞাপনদাতারা। এই সমস্ত বিজ্ঞাপনের অন্দরমহলে হানা দিয়ে খোঁজ মিলল তিলোত্তমার সাবালক হয়ে ওঠার নানান তথ্য। বিভিন্ন পত্রমিতালি সংস্থার কাজের ধরন রকমফের রয়েছে।

কিন্তু, প্রত্যেকেরই প্রতিশ্রুতি, তাদের সদস্যপদ গ্রহণ করলেই দূর হবে নিঃসঙ্গতা। হাতছানি জীবনকে রঙিন করে তোলার।

প্রকৃতপক্ষে হাইটেক যুগে কেউ আর পত্রের মাধ্যমে মিতালি করতে চান না। প্রত্যেকেরই উদ্দেশ্য, একাকিত্ব দূর করতে একটু কাছাকাছি আসা, অনেকটা উষ্ণতার আদান-প্রদান। পুরুষ কিংবা মহিলা, উচ্চপদস্থ বেসরকারি চাকরিজীবী যুবক অথবা শহরের পড়তে আসা কলেজ গার্ল, পত্রমিতালির হাত ধরেই একদিকে রোজগার করছে, অন্যদিকে পত্রমিতালির সদস্যপদ গ্রহণ করেই হাতের নাগালের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে সময় ও রাত কাটানোর সঙ্গিনী।

কলকাতা শহরের হাজরা এলাকার একটি পত্রমিতালি সংস্থা এভাবেই সঙ্গী ও সঙ্গিনী সরবরাহ করছে। তাদের মতোত প্রায় প্রত্যেকটি সংস্থার তিন ধরনের সদস্যপদ গ্রহণ করা যায়। তারা জানাচ্ছে, মোবাইলে কথা  বলার সঙ্গী-সঙ্গিনী, সরাসরি সাক্ষাতের  সুযোগ এবং 'ডিপ রিলেশন' পদ্ধতিতে তারা মিতালি সরবরাহ করে। শুধু মোবাইলে কথা বলার সঙ্গী পেতে সদস্যদের গুনতে হবে ৫০০ টাকা। সরাসরি সাক্ষাতের বন্ধু-বান্ধবী পেতে হলে এক হাজার টাকার সদস্যপদ গ্রহণ করতে হবে৷ আর ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে তোলার সঙ্গিনীর সন্ধান পাওয়া যাবে দেড় থেকে দু’হাজার টাকার সদস্যপদে।

সংবাদপত্রের শ্রেণিবদ্ধ বিজ্ঞাপনে দেওয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করলেই সুরেলা কণ্ঠে বিপাশা, মৌমিতা কিংবা সুস্মিতারা বুঝিয়ে দেবে কীভাবে সদস্যপদ গ্রহণের পদ্ধতি। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী নাকি গৃহবধূ? কার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চান, জেনে নেওয়া হবে তার বিস্তারিত।

সদস্যপদ গ্রহণ করতে ইচ্ছুক, এটা জানার পরই গ্রাহককে এসএমএস করে জানানো হবে সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর। যে ধরনের বন্ধু-সঙ্গিনী পেতে চান, সেই মতো নির্ধারিত সদস্য-ফি জমা করতে হবে ব্যাংকে। টাকা প্রাপ্তির পরেই  মিলবে সঙ্গী-সঙ্গিনীর মোবাইল নম্বর।

ছয় মাস কিংবা এক বছরের সদস্যপদ গ্রহণ করলে নিয়মিত নতুন নতুন বন্ধু-সঙ্গিনীর মোবাইল নম্বর সরবরাহ করবে মধ্যবৃত্তশ্রেণীর পত্রমিতালি সংস্থাগুলি। তবে, বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে চাইলে অবশ্য চার্জ আলাদা। সেই চার্জ বন্ধু-বান্ধবীদের ক্ষেত্রে রকমফের রয়েছে।

আর এই শ্রেণিবন্ধ বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তিলোত্তমা মহানগরের রাত হচ্ছে রঙিন!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.