আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পিএসসির উত্তরপত্রের গোপন কোড ফাঁস

বরগুনার আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিএসসি) পরীক্ষার উত্তরপত্রের গোপন কোড নম্বর ফাঁস করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন প্রধান শিক্ষক ও অভিভাবকেরা প্রথম আলোর কাছে এ অভিযোগ করেছেন।
একই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত বছরের পিএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্রের কোড নম্বর ফাঁস করে দেওয়ার অভিযোগে প্রথম আলোতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। কিন্তু জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। এবারের ফাঁসের বিষয়টি পুরো আমতলী ও জেলা সদরে আলোচিত বিষয় হলেও বিষয়টি তাঁর জানা নেই বলে দাবি করেছেন।


আমতলী সদরের কয়েকজন প্রধান শিক্ষক অভিযোগ করেন, আমতলী বন্দর মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভালো ফল করাতে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীপ্রতি তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত টাকা আদায় করেন। ওই টাকার কিছু অংশ প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জেসমিন আকতারকে ঘুষ দিয়ে উত্তরপত্রের গোপন কোড নম্বর (২৩৭৮১৩০৪-৭৯) সংগ্রহ করেন। জানতে পারেন ওই কোড নম্বরের খাতা সদর উপজেলার শিক্ষকদের কাছে রয়েছে। এরপর ওই শিক্ষকদের টাকা দিয়ে পরীক্ষার খাতায় বেশি বেশি নম্বর দেওয়ার প্রস্তাব দেয় মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে বিদ্যালয়ের বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থীর বৃত্তি পাওয়া নিশ্চিত হবে এবং বিদ্যালয়ের সুনামও বাড়বে।

মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জিল্লুর রহমান এ অনিয়মের নেতৃত্বে রয়েছেন বলে শিক্ষক ও বেশ কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন্দর মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন অভিভাবক জানান, সমাপনী পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে তিন হাজার টাকা করে নেন শিক্ষকেরা। কেন্দ্র খরচ, পরিদর্শক আপ্যায়ন ও কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুনিশ্চিত করার অজুহাতে এসব টাকা নেওয়া হয়। এ ছাড়া বৃত্তি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া হলেও সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে তাঁরা ওই টাকা দিতে বাধ্য হন।


অভিযোগ অস্বীকার করে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমার বিদ্যালয় বরাবর ভালো ফলাফল করে বলে অন্যরা এই অভিযোগ করছেন। ’ তাহলে কোড নম্বর ফাঁস হলো কীভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোড নম্বর জানেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। এটা তাঁরা বলতে পারবেন। ’
শিক্ষা কর্মকর্তা জেসমিন আকতার বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। ’
আমতলীর ইউএনও মো. আবদুল্লাহ বলেন, ‘কোড নম্বর ফাঁসের ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জানতে চেয়েছি।

যেসব স্থানে উত্তরপত্র নিরীক্ষা চলছে সেখানে কঠোরতা আরোপের নির্দেশ দিয়েছি। ’
আমতলী ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক নজরুল ইসলাম তালুকদার আক্ষেপ করে জানান, তাঁর ছেলে এবারের সমাপনী পরীক্ষায় উপজেলায় প্রথম হবে বলে প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু গোপন কোড ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর তাঁর ছেলের মন ভেঙে গেছে। অনৈতিকতার আশ্রয় নিয়ে ভালো ফলাফল করানোর এই অপচেষ্টার সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের কঠোর বিচারের দাবি জানান তিনি।



সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.