আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নজরুল একডেমি থেকে ফোন ও নজরুলকে নিয়ে আমার ব্যাক্তিগত কিছু ভাবনা।

সসকল পরিবর্তনের সাথে আমি ছিলাম। আবারও এসেছি সেই পরম সত্য নিয়ে। তোমাদের মনের মাঝেই লুকিয়ে আছে সেই মহাকালের শক্তি। আজ তাকে জাগাবার দিন এসেছে।

দুপরের দিকে নজরুল একাডেমি থেকে ফোন দিয়েছিলো।

তারা আমাকে জানিয়েছে শুধু নজরুলকে নিয়ে একক কোন কিছু লিখলে তারা তা প্রকাশ করে আমাকে ধন্য করবে। তারই প্রতি উত্তরে আমার ভক্তদের উদ্দেশ্য আমার এই নিবেদন। দেখুন সবার আগে বুঝতে হবে। নজরুল একাডেমির থেকে নজরুল অনেক বড় এক সত্ত্বার নাম। যিনি সমস্ত মানবজাতির কল্যানের জন্য এসেছিলেন।

আমাদের পরিবারিক আত্নিয় স্বজনদের মধ্য নজরুল ইসলামকে আমার নানি সামনা সামনি দেখেছিলেন। আমি ছোটবেলায় বেড়ে উঠেছি ঝালকাঠী সদরে অবস্থিত পশ্চিম চাঁদকাঠী সরদার বাড়িতে। ওখানে এমন একটি পারিবারিক বলয় ছিলো যা পুরোপুরি মুক্ত চেতনাকে জন্মের আগেই মেরে ফেলার একটি পরিবেশ। আমার নানী আমাকে অনেক গল্প বলতেন। আমার পরম শ্রদ্ধাভাজন নানী এখন থাকেন সৌদি আরবের রিয়াদে।

মামা নিয়ে গেছেন। আমি আমার মামা সরদার বিপুলের সাথে বহুবছর ধরে কথা বলি না। তিনি অনেক টাকা পয়শার মালিক হয়ে সত্যকে ভুলে গেছেন। আর সেই সত্য হলো আমার নানা আব্দুর রশিদ সরদারকে ১৯৭১ইং সালের ২০শে মে তৎকালীন পাকিস্তান আর্মি ঝালকাঠী (বর্তমান তেলের ডিপো) সুগন্ধা নদীর তীরে দাঁড় করিয়ে গুলি করে মেরে ফেলে। কিন্তু আমার নানার ছোট ভাই এস.এম শাহজাহান তখন শান্তি কমিটিদের দোসর ছিলেন।

আর বাংলাদেশের সাবেক রাস্ট্রপতি রহমান বিশ্বাস ছিলেন বরিশাল শান্তি কমিটি নামের পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীদের দোসর। আজও সেই দোসররা সমাজে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে। আমার নানার মৃত্যুর জন্য তার পরিবার সবসময় ভাগ্যকে দোহাই দিয়ে এসেছে। কিন্তু আমি আমার মায়ের ৬-৭ বছর বয়সে এতিয় হয়ে যাওয়াকে আজও মেনে নিতে পারি নি। আমি আজও চোখ বন্ধ করলে সেই মৃত্যু দৃশ্য দেখতে পাই।

মনে হয় আমার নানার আত্মা আজও আত্মচিৎকার করে বলে উঠছে ঐ মানুষ নামের শয়তানদের বাঙ্গালীর হাতে তুলে দে। আমার নানা খুব ভালো ছবি আঁকতেন। আমি আমার জীবণে আমার নানার কথা যতবার স্মরণ করেছি ততোবার কোনো আত্মিয় স্বজনকে স্মরণ করিনি। আমি দেখেছি প্রাণের চেয়ে প্রিয় মানুষের অস্বাভাবিক (লোকাল ভাষায় গন্ডগোলের সময় মারা গেছে) ও মেনে না নেবার মতো মৃত্যু একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের একটি মানুষের মৃত্য একটি পরিবার পরিজনকে কতো আমার নানার এই মৃত্যু পুরো একটি পরিবারকে ছন্ন বিছন্ন করে দেয়ার জন্য যতেষ্ঠ। আমার মা রেশনের বোঝা কাধে করে নিয়ে তার ভাই বোন কে নিয়ে খেয়েছেন।

আজ সেই শহিদ ফ্যামিলির বাড়ী গাড়ী হয়তো হয়েছে কিন্তু সেই ভাই বোনরা একসাথে জীবন নামের চরম নাটকিয় যুদ্ধের মধ্যে যে মায়া, মমতা ও ভালোবাসা ছিলো আজ তা নেই। আমার মা ১৯৭৫ইং সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন ঝালকাঠীতে আসেন তখন তাকে ফুলের তোরা দেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমার আম্মুকে কোলে তুলে নিয়ে খুব সম্ভবত ২০০০টাকা দিয়েছিলেন। যা ঐ সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে অনে বিশাল দান। যাই হোক, একটু আগে দেখে এলাম মা কেমন যেনো একটু অসুস্থ।

আমার মা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ট মা। তার মতো এতো ত্যাগী মা আমি জীবনেও দেখিনি। আমার মা আমার কাছে সমস্ত পৃথিবীর পরশক্তি, টাকা-পয়সা, ধন দৌলত, মনিমুক্তা সবকিছুর থেকে দামি। আমি আমার মায়ের জন্য প্রতি জনমে শহিদ হতে রাজি। আমার মা আমার জন্য জীবনে অনে জ্বাল সয়েছে।

আজো তিনি দুঃখ বোঝা মাথায় নিয়ে প্রতিদিন বরিশাল থেকে ঝালকাঠী প্রাইমারী স্কুলে যাচ্ছেন। আর আমার মামা যিনি আজ সমাজের কর্তাব্যাক্তি, এলিট পারসোন বলে খ্যাতো তিনি তার বড় বোনের সাথে কথা বলেন না। আচ্ছা বন্ধু বাবা হারা একটি মেয়ের তার ছোট ভাই বোনদের জন্য জন্য মাথায় করে খাবার নিয়ে এসে খাওয়ানো কি অপরাধ? আমার মায়ের কষ্ট হলে আমার কাছে পুরো পৃথিবীকে খেলনা মনে হয়। আমার মা আমার একমাত্র বাচাঁর আশা। আমার মা না থাকলে আমি কবে যে তোমাদের ছেড়ে ঐ আকাশের তারাদের মাঝে চলে যেতাম তা তোমরা বুঝতেও পারতে না।

আজ অনেক রাজনৈতিক, বুদ্ধিজিবি, আমলা কিংবা শিল্পপতিদের নামে সমাজের উচুস্তরের নাগরিকের অভিনয়ের মধ্য থেকেও মায়ের জন্য যে টান তা আমি দেখতে পাই। আমি এমন একজনকে দেখেছি যিনি দামী গাড়ি করে কোথায় যেনো জাচ্ছিলেন এমন সময় এ বুড়ো ভিখারীকে দেখে গাড়ি থামিয়ে কিছুক্ষণ কাঁদলেন। আরে বন্ধু ও ই বোকা শিল্পপতির আজ অনেক টাকা, পয়সা, ধন সম্পত্তি ব্যাংক ব্যালেন্স আছে কিন্তু মা নেই। মা যে কেনা যায় না বন্ধু? মা যে স্রষ্টার অকৃপন দান। মায়ের চেয়ে বেশী শ্রদ্ধা পাওয়ার যোগ্য কে বলুন? আজ যারা আমার মাকে এতিম বানিয়ে রেখেছিলো তাদের বিরুদ্ধে কি কথা বলার অধিকার আমার বিবেকের নেই? আমি শত চেষ্টা করলেও মাকে তার শৈসব ফিরিয়ে দিতে পারবো না।

আমার মা সব সময় স্বপ্ন দেখেন আমার আসিফ একজন মানুষের মতো মানুষ হবে। তাই আমি একজন প্রকৃত মানুষ হবার জন্য জীবনভর সাধনা করে যাচ্ছি। যদি তুমি কখনও এমন পরিস্থিতিতে পড়ো যে তোমার প্রেমিকা আর তোমার মাকে একসাথে বেঁধে রাখা হয়। আর যদি বলা হয় যে কোনো একজনকে বেছে নিতে অন্য জন হারিয়ে যাবে। তখন তুমি যদি তোমার মাকে বেছে না নিয়ে প্রেমিকাকে বেছে নাও তাহলে তুমি মা এবং প্রেমিকা দু’জনকেই হারাবে।

আর যদি মাকে বেছে নাও তাহলে দেখবে তুমি দু’জনকেই মুক্ত করতে পারছো। কালকে তোমাদের কাছে ভিক্ষা চেয়েছি বলে আমাকে খারাপ ভেবেছো। আমার মায়ের মুখে হাসি ফুটাবার জন্য আমি খারাপ হতেও রাজী আছি। সত্য ও সুন্দরের জন্য যে খারাপ তা আর যাই হোক অনাসৃষ্টি বা আবর্জনা না। তিলে তিলে ধুকে মরার চেয়ে এক সেকেন্ডে বির হয়ে বেঁচে থাকা অনেক ভালো।

এক সময় চিন্তা করতাম লেখা লেখি করে সংসার চলাবো কিন্তু আমার মতো মানুষদের লেখালেখি করে পয়সা কামানো সম্ভব না। কারণ আমরা যুগে যুগে আসি শুধুমাত্র তোমাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের জন্ম দিতে লেখক হতে না। এবার নজরুল প্রসংগে আসি। নজরুলের গান আমি প্রথম শুনি ক্লাস এইটে থাকতে। সেই গানটি ছিলো অনুপ জোলেটার কন্ঠে গাওয়া “খেলিছ এ বিশ্বলয়ে...... বিড়াট শিশু আনমোনে খেলিছো প্রলয় সৃষ্টি তব পুতুল খেলা নিরজনে প্রভু নিরজনে খেলিছো।

শুন্যে মহাআকাশে তুমি মগ্ন লিলা বিলাসে, হাসিছো খেলিছো তুমি আপন সনে নিরজনে প্রভু নিরজনে খেলিছো। এ যেনো স্রষ্টার অনুভুতি। বাংলাভাষায় নজরুলের মতো করে এতো সুন্দর ভাবে স্রষ্টার অনুভুতি কেউ প্রকাশ করতে পারে নি। আমাদের দেশে অনেক মায়ের সন্তানেরা তার ছেলে-মেয়ে কে বুঝিয়ে বলেন গল্প উপন্যাস পরিস না। ঐ সব হুমায়ূন আহমেদ দিয়ে কি হয়? আমি বলি নজরুল ইসলাম ও হুমায়ূন আহমেদ এর মানুষ আছেন বলেই নতুন নতুন যুগের সূচনা হয়।

তারা যে আমাদের সবাইকে এক পরম মমতার বাঁধনে বাঁধার জন্য নিজেকে সবার সামনে প্রকাশ করেন। আমার ভক্তদের মাধ্যমে আমি সামু কর্তৃপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞ চিত্তে জানিয়ে দিতে চাই দয়া করে আপনার মডারেটরবৃন্দ্র আমার লেখার বানানগুলো ঠিক করে দেন। কারণ আমার যে বানান ঠিক করতে ইচ্ছে করে না। বানান ঠিক করার জন্য আমি লিখি না। আমি লিখি মানবতা প্রতিষ্ঠা করার জন্য।

সেই সাথে লেখাগুলো যদি আপনারা প্যারায় ভাগ করে দেন তাহলে আমার বিড়াট উপকার হয়। বিষয়টি বিনীত চিত্তে দেখার জন্য অনুরোধ জ্ঞাপন করছি। ব্লগ হল নিজ নিজ স্বাধিনতার নাম। সত্যকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেবার জন্যই ব্লগের জন্ম হয়েছিলো। ব্লগ হল একটি সত্যিকারের জ্ঞান জগতে প্রবেশ করার মাধ্যম।

এই চেতনা সকল বাঙালীর মনে জাগাতে হবে। নইলে যে তোমরা ব্লগার নামে সাধারণ মানুষের বকা খাবে। আমার এই নজরুল বিষয়ক প্রবন্ধটি আরো অনেক দীর্ঘ করবো এই ফাকে আপনাদের এই অংশটুকু পোস্ট করে দিলাম বাকিটুকু আপনারা পড়তে থাকুন আর আমি সেই সাথে লিখতে থাকি। কি বলেন? ব্লগ যে বাসি করে পড়ার জিনিস না। ব্লগ যে তরতাজা এক চেতনার আবিস্কার।

তাই না?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।