আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আসুন না ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের জন্যে গড়ি গৌরবের সব রেকর্ড।



রেকর্ড করেই যাচ্ছি আমরা। কিছু গৌরবের। কিছু কলঙ্কের। কলঙ্কের রেকর্ড গুলার কাছে ম্লান হয়ে যাচ্ছে গৌরবের রেকর্ড। এই মাসেই দেখুন না, ১৬ ই ডিসেম্বর আমরা তৈরী করেছি পৃথিবীর বৃহত্তম মানব পতাকা।

আবার এই মাসেই তৈরী হয়েছে ভোটার বিহীন সম্ভবত ইতিহাসের সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রার্থীর বিজয় লাভের ঘটনা! অথছ আমরা নিজেদের গনতান্ত্রিক দাবি করি! বহির্বিশ্ব যখন দুইটা রেকর্ডের কথা জানবে তখন বলবে হুহ, নিজেদের এত দেশপ্রেমিক দেখায় অথচ গণতান্ত্রিক দেশ দাবী করে গণতন্ত্রের সংজ্ঞাই পাল্টাইয়া দিছে। নিজেরা বসে বসে প্রার্থী ঠিক কইরা নেয়। ভোট ছাড়া প্রতিনিধি সিলেক্ট করে। অথচ গণতন্ত্রের মুল দাবীই হল জনসাধারনই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তারাই প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে।

১৬ ই ডিসেম্বর গিনেজ রেকর্ড তো করেই ফেললাম। এইটা থেকে আমরা অনুপ্রেরনা পাব। এইটাতেই শেষ। অথচ দেশের অর্ধেকেরও বেশী অংশের নির্বাচন না হয়ে যে কলঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছে তার খেসারত এই দেশের প্রত্যেকটি মানুষ দিচ্ছে এবং দিবে। প্রত্যেকদিন পাখির মত মানুষ মারা যাচ্ছে।

মানুষ পোড়া যাচ্ছে। এই ধরনের কর্মকান্ড যেই করুক না কেন স্ট্রেইট দেশের আমজনতারই ক্ষতি হচ্ছে। বিরোধী দলের লোকজন মারা পড়ছে, প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে বিরোধী দল পয়েন্ট অফ নো রিটার্নে। তাতে মারা পড়ছে সরকার দলীয় লোকও। মোট কথা হল দেশ দুই ভাবে বিভক্ত হয়ে গেছে।

এখনই যদি একটা সমাধান না হয় তাহলে কালের পরিক্রমায় আমরা বিভক্তই থাকব। যদি একপক্ষ মনে করে অন্য পক্ষকে জোর জুলুম করবে বা অন্যায় আবদার করে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করবে সেইটা ভুল। দুই পক্ষ মিলেই সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। নানা মত, ধর্ম, বর্ন থাকবেই। এইটাই একটি দেশের সৌন্দর্য।

কয়েক বছর আগেও কি মৌলবাদী, নাস্তিক, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি, বিপক্ষের শক্তি ছিল? ছিল না। অথচ আমরা তৈরী করছি। একটা কথা শুনেছিলাম যে কোন কিছু সৃষ্টি হলে সেইটার এন্টি তৈরী হবেই। । সেইটাই হয়েছে।

অথচ আমরা সেটা মেনে না নিয়ে একে অন্যকে নির্মুলের ঘোষনা দিয়েছি! দলীয় হীন স্বার্থে ব্যাবহৃত হয়েছে, হচ্ছে ইতিহাস। যতদিন এই বিভক্তি ততদিন মাতৃভূমি রয়ে যাবে উত্তপ্ত। প্রকৃত বিজয় হয়েছে কিভাবে? জাতির তো মুক্তি হয়নি? জাতিকে মুক্ত করতে হলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আসলেই, ঐক্যবদ্ধ হলেই কেবল মুক্তি সম্ভব। আসুন না ১৬ ই ডিসেম্বর এর মত রেকর্ড করা এই রকম ২৭১১৭ জন লোক একদিন জাতীয় সংসদের সামনে জড়ো হয়ে দেশের এই অস্থিরতার জন্যে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে প্রতিবাদ জানাতে থাকি।

দায়ীদের কানে পৌছে দেই আমাদের প্রতিবাদ। একদিনে না হলে যতদিন পর্যন্ত সমাধান না হয় ততদিন পর্যন্ত পালটা পালটি করে অবস্থান নিই। যদি প্রতিবাদ করতে না দিয়ে বুলেট ছোঁড়া হয় তাহলে আসেন না এই ২৭১১৭ জন বুকে বুলেট পেতে নিই। দেশকে মুক্ত করার জন্যে ১৯৭১ এ ত্রিশ লক্ষ লোক বুকে পিঠে বুলেটে পেতে নিয়েছিল। আজ দেশটা আসলেই ভাল নেই।

আসুন না এই ২৭১১৭ জন লোক দেশের জন্যে একই সাথে বুলেট পেতে নিয়ে আরেকটা রেকর্ড সৃষ্টি করি। আমি নিশ্চিত এইটাও একটা বিশ্ব রেকর্ড হবে। সেই রেকর্ডও আমাদের জন্যে গৌরবের হবে। দলগুলোকে বলছি... তাই দরকার ঐক্যবদ্ধতা। দলীয় স্বার্থ, ব্যাক্তি স্বার্থ, ক্ষমতার স্বার্থ ত্যাগ আসুন না দেশের স্বার্থের জন্যে ঐক্যবদ্ধ হই।

আগে আমরা সবাই বাংলাদেশী হই। আসুন না বিশ্বকে আমরা দেখিয়ে দেই যে আমরা দল, মত,ধর্ম, বর্ন নির্বিশেষে দেশের জন্যে কতটা ঐক্যবদ্ধ হতে পারি। ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ পরিবর্তন করে দিই। আগামী ৪২ বছর পর ঐ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর দেশ সাজাই। ১৯৭১ এর শহীদেরা তো আজকের মত বাংলাদেশ চায় নি।

তারা চেয়েছিল একটা সুখী, সমৃদ্ধ, ঐক্যবদ্ধ জাতি। শহীদের রক্তের কসম খেয়ে নিয়ে আসুন না তৈরী করি একটি সুখী, সমৃদ্ধ, ঐক্যবদ্ধ জাতি। প্রতিযোগিতা করি বিশ্বের উন্নত দেশের সাথে। প্রতিযোগীতা করি মহাকাশে নভোযান পাঠানোর। প্রতিযোগীতা করি প্রযুক্তির সর্বোচ্চ শিখরে নিজেদের রাখার জন্যে।

প্রতিযোগিতা করি নতুন নতুন উদ্ভাবনী ক্ষমতার ব্যাবহারে। কসম! এই জাতির এই মেধা আছে। শুধুমাত্র বিভক্তিই আমাদের শেষ করে দিচ্ছে। আগে বলা হতো সংঘাতের ভেতরে থাকা দেশ, সংঘাত উত্তর দেশ। এখন বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ।

ঐক্যবদ্ধ হয়ে আসুন না যারা এইসব বলছে তাদের মুখে কুলুপ মেরে দিই। আসুন না ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের জন্যে গড়ি গৌরবের সব রেকর্ড।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।