আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলা ব্লগ ডে উপলক্ষ্যে অনলাইন নিয়ে কিছু কথা, কিছু টিপস্

গুরু সিরাজ সাঁই

ধরুন আপনি বারোমিশালি লেখা পড়তে চান তাহলে সোজা চলে যান সামহোয়্যার ইন ব্লগে [সামু], এখানে ক্যাটাগরি হিসেবে ভাগ করা না থাকায় শিরোনাম দেখে একটু কষ্ট করে খুঁজে নিতে হয় কাঙ্খিত পোষ্ট কারন এটা সবচেয়ে জনপ্রিয় হওয়ায় পোষ্টের সংখ্যা খুব বেশি [রাত ৮ টার দিকে প্রথম পাতায় ১০ মিনিটের বেশি কোন লেখা থাকে না],নিশী রাতে ১৮+ পোস্ট পঠিত হয় বেশি, বড় কোন গল্প টল্প হলে অখ্যাত ব্লগারদের সেটা ভোর ৪:৩০ টার পর পোস্ট করা উত্তম ; আমার ব্লগে [আমু] ঢুকলেই দেখবেন রাজনীতি ও ধর্ম নিয়ে ক্যাচাল বিষয়ক পোষ্ট থাকবেই; আর যদি আন্নের দেশ-বিদেশ ঘুরাঘুরি নিয়া আগ্রহ থাকে তাহলে সচলায়তনে [সচল] ঢুকা মাত্রই পেয়ে যাবেন; এবার আসেন আন্নের মধ্যে যদি কবি কবি ভাব থাকে তাইলে কিতা করব্যান :-) সোজা চতুর্মাত্রিকে [চতুর] চলে যান; আর যদি মুভি পাগলা হন তাহলে ইষ্টিশন ব্লগে যাইতারেন, ওখানে বেশ কিছু মুভিখোর আছে; অনলাইন ডিভাইস, সফ্ট নিয়ে হলে বিনা দ্বিধায় টেকটিউন, ওখানে টেকি ভাইদের আড্ডা. ফেসবুকের মাধ্যমে প্রচার কাজ খুব সহজেই করা যায় বলে এখন ইহাও অন্যতম ব্লগ মাধ্যম হয়ে গেছে, এতে জাষ্ট শুধু দুইটা সমস্যা- ১. লেখার সাথে মিলিয়ে মিলিয়ে একটু পর পর ছবি যোগ করা যায় না. ২. MS word এ Font size 12 দিয়ে ১৬ পৃষ্ঠার বেশি কোন লেখা স্ট্যাটাসে দেওয়া যায় না, সাড়ে ১৬ হলেই শেষের টুকু কেটে যায়. একই লেখা ফেবু ও ব্লগে দেওয়ার পর দেখবেন... লোকজন ফেবুতে কমেন্ট করে পুতাইয়া ফালাইছে অথচ ব্লগে কেউ কমেন্ট তো দূরের কথা, লাইকও দেয় নাই. সত্যিকার অর্থে লেখার মান ভাল না হলে ব্লগে কেউ প্রশংসা করে না. তবে হ্যাঁ একটা সিস্টেম আছে, আপনি যদি অন্যের লেখায় গিয়ে পিঠ চাপরান তাহলে সেও আপনার লেখায় এসে পিঠ চাপড়াবে. এই চাপড়া চাপড়ির সবচেয়ে খারাপ দিক হচ্ছে..... লেখক অনেক সময়ই বুঝতে পারে না, তার লেখার মান আসলেই ভাল হচ্ছে কিনা! আগে পত্রিকাতে যখন কেউ লেখা পাঠাত তখন সম্পাদকমন্ডলী লেখার মান যাছাই বাছাই করেই এরপর ছাপাত. অবশ্য অনলাইনেও এটা বোঝার উপার আছে, উপায়ডা হইলো আফনে ঐ আইডি থেকে অন্যের লেখায় লাইক/কমেন্ট করবেন না তাহলেই বুঝতে পারবেন. যদি সত্য সত্যই লেখার মান ভাল হয় তাহলে কিছু না কিছু প্রশংসা অবশ্যই পাবেন, দ্রুত পরিচিতি পাওয়া আর সত্যিকারের ভাল লেখক হওয়া এক জিনিস নয়. এবার নূতনদের উদ্দ্যেশ্যে কিছু ফাও টিপস্ দেই :p [কাজে না লাগলে কিন্তু আমি দায়ী নহি, এই বলে রাখলুম] - ১.যদি দ্রুত অনেক ফলোয়ার চান সেক্ষেত্রে যেটা করবেন: ক. দেশের মানুষ দুইটা মূল ধারায় বিভক্ত হয়ে গেছে এবং ধারাগুলো আবার প্রত্যেকেই দুটি উপধারায় বিভক্ত. (ধারা ক) 1. প্রগতিশীল মাইন্ডেড আস্তিক 2. নাস্তিক প্রগতিশীল (ধারা খ) 1. ধার্মিক মাইন্ডেড হলেও মনেপ্রাণে রাজাকারদের বিচার চান 2. ধার্মিক মাইন্ডেড কিন্তু শীর্ষস্হানীয় রাজাকারদের বিচার হোক, এটা চায় না এই চার উপধারার যে কোন একটা ফলো করে লিখেন... দেখবেন খুব দ্রুতই বহু ফ্যান পেয়ে গেছেন [ নূতন একটি টেলিভিশন চ্যানেল এটা করেই অনেক পরিচিতি পেয়েছে] ও হ্যাঁ এক্ষেত্রে একটা বড় সমস্যা হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট উপধারার কেউ দোষ করলে ভুলেও মুখ ফসকে কইয়েন না উপরন্তু খোঁড়া যুক্তি দিয়ে তার ফেভারে কথা কইলে আরো ভাল. যদি তা না করে অপরাধের সমালোচনা করেন তাহলে দেখবেন এতদিন যারা পিঠ চাপড়াইছে তারাই আপনাকে বিরোধী দলের দালাল বলে একদম নাঙ্গা করে ছাড়বে. খ. ভিন্ন আইডি থেকে নিজের লেখায় নিজেই গালাগালি করে কমেন্ট করবেন, এতে আপনারা ফ্যানরা আপনার ফেবারে কমেন্ট করবে. আর জানেন ই তো যত কমেন্ট তত প্রচার. গ. ফেবু ফ্যান ও ব্লগ ফ্যানের মধ্যে বিস্তর তফাৎ, এটা বুঝে সেভাবে লিখতে হবে [কিছু ফেবু সেলিব্রেটি আছেন উনারা যদি ঐ একই লেখাই ব্লগে লিখতেন তাহলে জীবনেও ফেমাস হতে পারতেন না] ২. যদি বলেন যে, না ভাই... আমার এসব করে সেলিব্রেটি হওয়ার খায়েস নাই, সত্যিকার লেখক হতে চাই তাহলে মনেপ্রাণে যেটা বিশ্বাস করেন সেটাই লেখেন.আর হ্যাঁ লেখকরা যে সকল সমস্যার মধ্য দিয়ে যায়: 1. মাথার মধ্যে কোন টপিক চলে আসলে সেটা না নামানো অবধি অস্বস্তিতে কাটে; আর এই নামাতে গিয়ে কেউ কেউ বিছানায় শুয়া অবস্হায় লাথ্থি দিয়ে কাঁথা সরিয়ে লিখতে বসে, কেউ কেউ মনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে শুয়ে থাকলেও ভোর হয়ে যায় কিন্তু নয়নের পাতা দুটি এক করতে পারে না. কেউ কেউ পরীক্ষা/ ক্লাসের পড়া বাদ দিয়ে কম্পুতে বসে, কেউ কেউ অফিসের কাজে ফাঁকি দিয়ে লেখার ভাবনায় মগ্ন থাকে. 2. লেখকের লেখায় জাদুটোনা হয়ে কোন কোন পাঠক যেমন এগিয়ে আসে লেখকের সান্নিধ্য পেতে [মনের দিক থেকে দুব্বল হয়ে পড়ায় ভালবাসায় হাবুডুবু খায়] তেমনি আবার দূরেও সরে যায় যখন দেখে তার মনের মানুষের কাছে লেখালেখিই বেশি দামি. লেখালেখির সময় তো বটেই এমনকি অনেক লেখকের মাথায় লেখার ভাবনা ঘুরপাক খাওয়া মাত্রই তার কাছে অন্যসব কিছু গৌণ হয়ে যায় তখন তার কাছে ডেটিং/ অনলাইনে চ্যাটের কোন বেল নাই. লেখাতেই রাজ্যের শান্তি! 3. যাদের মধ্যে লেখালেখির পাগলামো একটু বেশি থাকে তাদের মধ্যে হাতেগোনা খুবই অল্প সংখ্যক সফল হয়, অধিকাংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়. পরীক্ষার রেজাল্ট ভাল না হওয়ায় "আইলাও হয় না, জাইলাও হয় না" 4. কোন একটা টপিক একদিক থেকে চিন্তা করে হঠাৎই লিখে ফেলেন কেউ কেউ, এমনকি কি লিখছে সেটা দ্বিতীয়বার না পরেই ব্লগে/ ফেবুতে পাব্লিশ করায় অন্যরা অন্য সেন্স থেকে যখন চিন্তা করে তখন তাকে খারাপ ভাবে, নিচু মানসিকতার মনে করে, আর রাজনৈতিক বিষয় হলে তো কথাই নেই! ধরে নেয় পয়সা খাওয়া দালাল. 5. লেখকদের সবচেয়ে খারাপ সময় হল "writers block" মাথায় লেখা জমে আছে কিন্তু হাত চলছে না, লিখতে চেয়েও লিখতে না পারার যে কষ্ট এটা ভুক্তভোগী বিহীন অন্যদের কল্পনার বাইরে. যেখানে অনেক চিন্তা-ভাবনার পর একটা লেখা আসে সেখানে রেডিমেট লেখা অথচ আঙুল চলছে না. 6. যারা ব্লগে/ ফেবুতে লেখালেখি করেন তাদের ব্যাপারে তার বন্ধুরা অনেক সময় ভাবে "এর মাথা গেছে" ৫ মিনিট পর পর একটা করে স্ট্যাটাস / দিনে ৩ টি ব্লগ. আসল ঘটনা হইল লেখকদের মাথায় সব সময় লেখা আসে না কিন্তু যখন আসে গাঙ্গের পানির মত. 7. লেখকরা অন্যের লেখা যত বেশি পড়বে তার মধ্যে তত বেশি টপিক ঘুরপাক খাবে- হয় সেটা ঐ লেখার সমথ্থনে/ বিরুদ্ধে/ ৫ মিশালী জগাখিচুরী. 8. অলরেডি সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখছে একটা টপিক নিয়ে লেখার কিন্তু এমন সময়ে অন্যের লেখা পড়তে গিয়ে ঐ রিলেটেড লেখা লিখে ফেলে. 9. যে লেখক যত বেশি অন্যের সমালোচনা সহ্য করতে পারে সে তত বড় লেখক হয়, আর যারা অল্পতেই টেম্পার হয়ে যায় তারা খেই হারিয়ে ফেলে. 10. বাঙ্গালি পাঠকের প্রেক্ষাপটে যে লেখক তার লেখায় যত বেশি রসবোধ/ বিরহ যোগ করতে পারবে তার পাঠক তত বেশি. রসবোধটা যদি সেক্সবিষয়ক/ অন্যের সমালোচনা করে হয় তাহলে তো কথাই নেই. অবশ্য লেখায় এই সূত্র এপ্লাই করতে গিয়ে কেউ কেউ চটি লেখক হিসেবে বিবেচিত হন. 11. বিজ্ঞান বিষয়ে লিখলে পাঠক খুইজ্জা পাবে না কিন্তু ধর্মের বিরুদ্ধে লিখলে সে দ্রুত আলোচনায় উঠে আসবে এবং পাঠকের অভাব হবে না. 12. একশ্রেণীর পাঠক আছে যারা গঠনমূলক সমালোচনা না করে তৈল মেরে ফুলাইতে ফুলাইতে গাছে তুলে দেয়, যে লেখকরা এটা বুঝতে পারে না তারা মই এগিয়ে দেওয়ার মত পাঠকও খুঁজে পায় না. 13. যখন কারো চারিদিকে নামডাক পড়ে তখন সে অন্যের ব্লগে/ ফেবু স্ট্যাটে কমেন্ট করতে গিয়ে আলস্যে ভুগে, মনের অজান্তেই নিজের মধ্যে অহমিকা চলে আসে. 14. একজন লেখক তার আশেপাশের লোকজন কিংবা সমাজ ব্যবস্হা দ্বারা যতো বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হবে ততই দামি দামি অনেক প্র্যাকটিক্যাল লেখা বের হয়ে আসবে. সব পয়েন্টই আনুমানিক কল্পনাপ্রসূত তাই সত্যিকার লেখকদের সাথে না মিললে আমি দায়ী নই, নিছক মামুলী হাবিজাবি পোস্ট হিসেবে ধরে নিবেন. বি.দ্র. লেখকদের সব কথা সিরিয়াসলি নিতে নেই কেননা অনেক কিছুই তারা বলেন ঘোরের মধ্যে থেকে, তাই কারোরই আন্ধা সমথ্থক না হয়ে প্রত্যেক লেখাই নিজস্ব বিচার বিবেচনার পরেই গ্রহণ করা উচিত. ব্লগ ডে সফল হোক

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.