আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামায়াতে ইসলামী'র ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাস ও বিস্তার বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হবার পথে সবচেয়ে বড় হুমকি!!!

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

১৯৮৬ সালের ৭ মে বাংলাদেশের তৃতীয় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ১৫ বছরের মধ্যে সেবার-ই প্রথম জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহন করে। সেই নির্বাচনে শেষ মুহূর্তে বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায়। ফলে জাতীয় পার্টি ২৫৩ টি আসনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করে। ৭৭ টি আসন নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

আর ১০ টি আসন নিয়ে জামায়াতে ইসলামী হয় তৃতীয়। জামায়াত তখন মোট ভোট পেয়েছিল ১৩ লাখ ১৪ হাজার ৫৭টি। যা মোট কাস্টিং ভোটের শতকরা ৪.৬০ ভাগ। ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের পঞ্চম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জামায়াতে ইসলামী দ্বিতীয় বারের মত সেই নির্বাচনে অংশগ্রহন করে।

১৪০ টি আসনে জয়লাভ করে বিএনপি সরকার গঠন করে। ৮৮টি আসন পেয়ে আওয়ামী লীগ হয় দ্বিতীয়। ৩৫ টি আসন পেয়ে জাতীয় পার্টি হয় তৃতীয়। আর ১৮ টি আসন পেয়ে জামায়াতে ইসলামী হয় চতুর্থ। জামায়াত তখন মোট ভোট পেয়েছিল ৪১ লাখ ৩৬ হাজার ৩৬১টি।

যা মোট কাস্টিং ভোটের শতকরা ১২.১০ ভাগ। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন বাংলাদেশের সপ্তম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জামায়াতে ইসলামী তৃতীয় বারের মত সেই নির্বাচনে অংশগ্রহন করে। ১৪৬ টি আসন নিয়ে আওয়ামী লীগ আসনে নিয়ে সরকার গঠন করে। ১১৬ টি আসন পেয়ে বিএনপি হয় দ্বিতীয়।

৩২ টি আসন পেয়ে জাতীয় পার্টি হয় তৃতীয়। ৩টি আসন পেয়ে জামায়তে ইসলামী হয় চতুর্থ। জামায়াত তখন মোট ভোট পেয়েছিল ৩৬ লাখ ৫৩ হাজার ১৩টি। যা মোট কাস্টিং ভোটের শতকরা ৮.৬ ভাগ। ২০০১ সালের ১ লা অক্টোবর বাংলাদেশের অষ্টম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

জামায়াতে ইসলামী চতুর্থ বারের মত সেই নির্বাচনে অংশগ্রহন করে। ১৯৫ টি আসনে জয়লাভ করে বিএনপি সরকার গঠন করে। ৫৮টি আসন পেয়ে আওয়ামী লীগ হয় দ্বিতীয়। ১৭ টি আসন পেয়ে জামায়াতে ইসলামী হয় তৃতীয়। আর ১৪ টি আসন পেয়ে জাতীয় পার্টি হয় চতুর্ত।

আর জামায়াত তখন মোট ভোট পেয়েছিল ২৩ লাখ ৮৫ হাজার ৩৬১টি। যা মোট কাস্টিং ভোটের শতকরা ৪.২৮ ভাগ। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশের নবম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। জামায়াতে ইসলামী পঞ্চম বারের মত সেই নির্বাচনে অংশগ্রহন করে। ২৩০ টি টি আসনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে।

৩০টি আসন পেয়ে বিএনপি হয় দ্বিতীয়। ২৭ টি আসন পেয়ে জাতীয় পার্টি হয় তৃতীয়। ৩টি আসন পেয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ হয় চতুর্থ। আর ২টি করে আসন পেয়ে যৌথভাবে পঞ্চম স্থান লাভ করে ওয়ার্কার্স পার্টি ও জামায়াতে ইসলামী। জামায়াত তখন মোট ভোট পেয়েছিল ৩১ লাখ ৮৬ হাজার ৩৮৪টি।

যা মোট কাস্টিং ভোটের শতকরা ৪.৬০ ভাগ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ১৫ বছরের মাথায় স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামী দলটি মোট নয়টি সাধারণ নির্বাচনের মধ্যে পাঁচটিতে অংশগ্রহন করার সুযোগ পায়। প্রথম, দ্বিতীয়, চতুর্থ ও ষষ্ঠ সাধারণ নির্বাচনে জামায়াত অংশগ্রহন করেনি। দেখা যাচ্ছে যে, পাঁচটি নির্বাচনের মধ্যে পঞ্চম সাধারণ নির্বাচনে জামায়ত সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে। শুরুতে জামায়াতের ভোট যেখানে ছিল ১৩ লাখ ১৪ হাজার।

সেখানে পাঁচ বছরের মাথায় সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১ লাখ ৩৬ হাজারে। অর্থ্যাৎ প্রায় ৫ বছরে জামায়াতের প্রায় চারগুন ভোট বেড়েছে। আবার পরবর্তী ৫ বছর পর জামায়াতে ভোট ৫ লাখ কমে ৩৬ লাখে নামলেও পরবর্তী ৫ বছরে সেই ভোটের সংখ্যা আরো কমেছিল। ২০০১ সালে সেটি প্রায় ২৫ লাখে গিয়ে পৌঁছায়। কিন্তু পরবর্তী ৭ বছরে জামায়াতের আবার ভোট লাফিয়ে বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৩২ লাখে।

অর্থ্যাৎ ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জামায়াতের ভোট সংখ্যা কমার একটি প্রবনতা ছিল। ২০০৮ সাল থেকে সেটি আবার বাড়ার প্রবনতায় রূপ নিয়েছে। ভোট বাড়ুক আর কমুক, মোট কথা জামায়াতের প্রায় ৫০ লাখ ভোটার যে আছে, একথা প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায়। বাংলাদেশের বিভাগ অনুযায়ী পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে, জামায়াতে ইসলামী'র সবচেয়ে শক্ত ঘাঁটি রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ।

আর স্বল্প পরিসরে বরিশাল ও সিলেট বিভাগে কিছু ঘাঁটি গাড়লেও ঢাকা বিভাগে জামায়াত তেমন শক্ত কোনো অবস্থান গড়ে তুলতে পারেনি। জেলা অনুয়ায়ী দেখলে দেখা যায়, সাতক্ষীরা, পাবনা, নওগাঁ, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কক্সবাজার, লক্ষীপুর ও বরগুনায় জামায়াত শক্ত ঘাঁটি গড়ে তুলেছে। এছাড়া নড়াইল, পিরোজপুর, খুলনা, বাগেরহাট, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, কুস্টিয়া, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম, ব্রাহ্মণবড়িয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, ভোলা, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জে কিছু কিছু বিক্ষিপ্ত জামায়াতের ঘাঁটি গড়ে উঠেছে। গাণিতিক পরিসংখ্যানের বাইরে জামায়াতের বিস্তার ঘটেছে দেশের ব্যবসা বাণিজ্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা, হাসপাতাল, ক্লিনিক, হাউজিংসহ নানান ক্ষেত্রে। ২০০৪ সালে ১৭ আগস্ট সারা দেশের ৬৪ জেলায় একসঙ্গে বোমা ফাটিয়ে জামায়াত তাদের শক্ত অবস্থানের কথা প্রথম প্রকাশ্যে ঘোষণা করে।

দেশের অনেক বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার এখন জামায়াত নেতারা। চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও সিলেট শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবিরের একচ্ছত্র আধিপত্য। ঢাকায় বুয়েটেও তাদের অবস্থান দিন দিন শক্ত হচ্ছে। কুস্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের শক্ত ঘাঁটি গড়ে উঠেছে। এছাড়া বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন যেমন ডাক্তার, প্রকৌশলী, উকিল, ব্যাংকার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ নানান ক্ষেত্রে জামায়াতের শক্ত অবস্থান দিন দিন আরো প্রসার লাভ করছে।

ইসলামী ব্যাংক বিগত বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বড় অফিসিয়াল স্পন্সর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। জামায়াতের স্বাস্থ্য সেবায় ইবনে সিনা ক্লিনিক সারা দেশে শাখা খুলেছে। ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স সারা দেশে বিস্তার লাভ করেছে। এছাড়া মাল্টি কর্পোরেট বিজিনেসের আওতায় নানান নামে জামায়াত এমএলএম ব্যবসা প্রসার করেছে সারা দেশে। পাশাপাশি সৌদি আরব সহ বিভিন্ন মুসলিম দেশের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় বাংলাদেশের মসজিদ ও মাদ্রাসা ভিত্তিক নানান কর্মসূচিতে নানাভাবে শিকড় গেড়েছে জামায়াত।

জামায়াতের রয়েছে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, লিবিয়া, ইরাক থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গি মুজাহিদ। এদের নের্তৃত্বে দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে এবং পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে জামায়াতের রয়েছে গোপন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। সেখানে তারা সামরিক ও অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ গ্রহন করে। জামায়াতের পরিবহণ ব্যবসা আছে, মেডিসিন ব্যবসা আছে, ব্যাংক ব্যবসা আছে, এছাড়া আছে দেশের নানান ক্ষেত্রে শক্ত অর্থনৈতিক অবস্থান। পাশাপাশি রাজনীতিতে তারা কেবল ভোটের হিসেবে দেশের চতুর্থ বৃহত্তম শক্তি।

জামায়াতের এই বেপড়োয়াভাবে বিস্তার লাভের পেছনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি সবচেয়ে বেশি দায়ী। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর জেনারেল জিয়া জামায়াতকে রাজনীতি করার অধিকার ফিরিয়ে দেন। জেনারেল এরশাদ জামায়াতকে সমর্থণ করে সংবিধান সংশোধন করে বাংলাদেশকে একটি ইসলামী রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। বেগম জিয়া জামায়াতকে মন্ত্রীসভায় স্থান দিয়ে জাতীয় পতাকার সঙ্গে বেঈমানী করেন। আর শেখ হাসিনা জামায়াতের ভোটের সুবিধা পাওয়ার জন্য জামায়াতের সঙ্গে এরশাদ পরবর্তী রাজনৈতিক মেরুকরণে ছায়া জোট গঠন করেন।

বাংলাদেশের সকল বৃহত্তম রাজনৈতিক দলগুলোই জামায়াতকে নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দান করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার যে কৌশল গ্রহন করেছিল, সেই সুযোগের শতভাগ সুবিধা আদায় করে আজ জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে চিন্থিত হয়েছে। আজ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে ইউনিয়ন কাউন্সিল পর্যন্ত সব জায়গায় জামায়াতের পদচারণা। আদালত থেকে হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাংক বীমা, জনপ্রশাসন থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বত্র জামায়াতের সরাসরি অনুপ্রবেশ রয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী'র শুধু এককভাবে সরকার গঠনের ইতিহাস সৃষ্টি করাটি বাকি আছে। বাকী সকল ক্ষেত্রে জামায়াত ধীরে ধীরে বেশ শক্তভাবেই শিকড় গেড়েছে।

তাই জামায়াতের মত একটি জঙ্গি সংগঠনকে রাতারাতি বন্ধ করা যথেষ্ঠ ঝুঁকিবহুল। যদি দেশের বাকী সকল রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনগুলো একত্রে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ না করে, তাহলে জামায়াতে ইসলামীকে প্রতিরোধ করা ভবিষ্যতে আরো কঠিন হয়ে যাবে। দেশের সকল পক্ষকে একত্রে ঐক্যমতে পৌঁছাতে হবে জামায়াতের ব্যাপারে। নইলে এই দানব রুখে দেওয়া সত্যি সত্যিই কষ্টকর। কারণ, বিশ্ব রাজনীতি'র টানাপোড়নে জামায়াত সুবিধাবাদী গোষ্ঠীগুলোর একটি শক্তিশালী হাতিয়ার।

সেই হাতিয়ারের বিরুদ্ধে একটা সমাবেশ করে, বা একটা নামমাত্র নিষিদ্ধ ঘোষণা দিয়ে, বা টেলিভিশনের টকশোতে গলাবাজী করে জামায়াতের মত একটি প্রশিক্ষিত রাজনৈতিক শক্তিকে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। আর রাষ্ট্রীয়ভাবে জামায়াতকে ঠিক কি হিসেবে দেখা হবে, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণা এবং সেই ঘোষণার যথাযথ বাস্তবায়ন সমন্বিতভাবে জাতীয় ঐক্য নিয়ে করতে না পারলে, জামায়াত দানব বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। আর এই হুমকি আজ তৈরি হয়েছে আমাদের জাতীয় ঐক্যের অভাব, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ি, জামায়াত প্রীতি, আর তলে তলে জামায়তের সকল সুবিধা বাস্তবায়নের পথ সুগম করার জন্যে। যা আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় কলংকের চিন্থ। আফগানিস্তানে যেমন তালেবানরা মার্কিন প্রশাসনের সক্রিয় সহায়তায় ক্ষমতায় এসেছিল, মিশরে যেমন মার্কিন প্রশাসনের মদদে ও সহযোগিতায় ব্রাদারহুড ক্ষমতায় এসেছিল, তেমনি আগামীতে আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদের সরাসরি সহযোগিতায় যেমন- মার্কিন স্বার্থ, ভারতীয় স্বার্থ, চীনের স্বার্থ, পাকিস্তানের স্বার্থ, সৌদি আরবের স্বার্থ ইত্যাদি আন্তর্জাতিক স্বার্থের কুটকৌশলে জামায়াত যে বাংলাদেশে একদিন ক্ষমতায় আসবে না, সেই গ্যারান্টি তো নেই!!! আমাদের ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও স্বার্থের সুযোগ নিয়ে জামায়াতের মত একটি অপশক্তির দানবকে আমরাই ধীরে ধীরে এতো বড় করেছি।

বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে, বাংলাদেশের বাঙালি জাতিসত্ত্বা বাঁচাতে হলে, বাঙালি সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখতে হলে, জামায়াতে বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নাই। যতোদিন আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিতে সময় ক্ষেপন করব ততোদিনে জামায়াত বাংলাদেশের অবশিষ্ট অঞ্চলগুলোতে আরো শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে সমর্থ হবে। গণতন্ত্র রক্ষার চেয়ে জামায়াতের হাত থেকে দেশ রক্ষার বিষয়টি এখন সবচেয়ে প্রধান ইস্যু হওয়া উচিত। সেখানে সিদ্ধান্ত নিতে ভুল হলে ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করবে না। ভোটের রাজনীতিতে কে ক্ষমতায় যাবে আর কে যাবে না, সেই দুষ্টু কুতর্ক করার সময় ভবিষ্যতে আরো পাওয়া যাবে।

কিন্তু জামায়াতের বিরুদ্ধে দেশের সর্বস্তরের সকল মানুষ যতোক্ষণ না ঐক্যবদ্ধ না হচ্ছে, ততোক্ষণ সেই আশংকা থেকেই যাচ্ছে। মুরব্বী মীর মশাররফ হোসেন যথার্থই বলেছিলেন, স্বাধীনতা অর্জন করার চেয়ে স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখা সবচেয়ে কঠিন কাজ। আমরা স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হলেও সেই স্বাধীনতার সুফল ভোগ করার জন্য কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এখন। বিগত ৪২ বছরে কে কি ভুল করলো, কে ইতিহাস বিকৃত করলো, কে ইতিহাস নিজের মত লিখলো, কে কাকে সুবিধা দিল, কে কত অর্থ বিদেশে পাচার করলো, কে কত বড় দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন, কে কত বড় লুটকারী-লুণ্ঠনকারী, কে কত বড় সম্পদের মালিক, কার ব্যাংক ব্যালেন্স কত এসব বিষয় পেছনে ফেলে এখনই আমাদের রাজনৈতিকভাবে জামায়াতের বিরুদ্ধে একটি ঐক্যমতে পৌঁছানোর সময়। যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে গড়ে তোলার সত্যিই সদিচ্ছা আমাদের রাজনৈতিক নেতারা পোষণ করেন, তাহলে এখনই জাতীয় স্বার্থে এক কাতারে নাম লেখান।

নইলে বাংলাদেশ যেভাবে স্বাধীনতা বিরোধীদের কাছে বিপন্ন হচ্ছে, সেখান থেকে আপনারা কেউ পালানোর সুযোগ পাবেন না। দেশের ১৬ কোটি মানুষ আপনাদের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। আপনারা এখনই কিছু একটা করুন। নইলে মহাকালের ইতিহাসের কাঠগড়ায় একদিন আপনাদেরও দাঁড়াতে হবে। ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.