আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামায়াতে ইসলামী : জোটের রাজনীতি

নামের সাথে কামের কিছু মিলতো থাকবোই [জামায়াতে ইসলামী দাবী করে তারা বাংলাদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। অথচ তাদের অনেক কার্যক্রম সরাসরি ইসলামী শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক (অন্তত আমার কাছে মনে হয়েছে)। সেই বিষয়গুলিই আমি তুলে আনার চেষ্টা করেছি। আশা করি এ বিষয়ে সবাই সঠিক মতামত দিবেন। ] আমার দেখায় জামায়াতের জোট বদ্ধ আন্দোলনের শুরু হয় এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময়।

তাকে ঠিক জোট না বলে বলা যেতে পারে পারস্পরিক বোঝাপোড়ার আন্দোলন। যে যার মতো এরশাদ বিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে গেছে। সে সময় জোট বা মহিলা নেতৃত্বের ইস্যুতে যে বক্তব্যগুলো তাদের থেকে শুনেছি তার অন্যতম কথা হচ্ছে বৃহত স্বার্থে ক্ষুদ্র ত্যাগ। সরকার গঠনে একবার বিএনপিকে সমর্থন আবার পরে আওয়ামীলীগকে সমর্থন জামায়াতের নেতারা দেখেছে অন্য দলের কাছে তাদের গুরুত্ব হিসেবে। তারা অনেকটা গর্ব করেই বলতেন তাদের ছাড়া বাংলাদেশের কেউ ক্ষমতায় যেতে পারে না।

কিন্তু সাধারন জনগন এটাকে একটু কটাক্ষ করেই বলতো একবার এর আচলের তলে, আরেকবার আরেকজনের আচলের তলে আশ্রয় নেয়া দল হলো জামায়াতে ইসলামী। সবচেয়ে বেশি বিব্রত হতে হতো সাধারন মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের। নেতৃবৃন্দের শেখানো বুলি বললেও মনে শান্তি পাওয়া কঠিন কারন কিছুদিন আগে তারাই সবাইকে বলে এসেছে নারী নেতৃত্ব হারাম। আওয়ামী সরকারের প্রথম টার্মে ক্ষমতায় আসার কিছু পরেই সম্ভবত জামায়াতের সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় এবং জামায়াত বিএনপির সাথে গিয়ে জোট তৈরী করে। অর্থাত প্রায় ১২-১৩ বছর ধরে জামায়াত-বিএনপি জোট বেধে আছে।

শুধু তাই নয় বিগত সরকারের সময় তারা জোটবদ্ধ অবস্থায় রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। বলতে গেলে জামায়াত-বিএনপি একাকার অবস্থা। জোট করতে গিয়ে যে কাজগুলো জামায়াতকে করতে হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো নারী নেতৃত্ব হালাল করা। শুধু তাই নয় বিভিন্ন সভা সমাবেশে খালেদা জিয়ার আশে পাশেই তাদের অবস্থান ছিলো। আমি ঠিক জানিনা এটি কতটুকু শরীয়তের মধ্যে ছিলো? জোটের রাজনীতিতে জামায়াতের নেতাদের কি লাভ হয়েছে, কতটুকু ক্ষমতার স্বাদ উপভোগ করেছে সে বিষয়ে না যাই কিন্তু ঝামেলা পোহাতে হয়েছে কর্মীদের।

একই সাথে তারা তাদের ভোট ব্যাংক নিয়ে যে গর্ব করতো সে ভোট ব্যাংকে ফাটল ধরেছে। বিষয়টি আরেকটু ব্যাখ্যা করি, জোটবদ্ধ নির্বাচনের সময় মোটামুটি শতকরা ১০টি আসনে নির্বাচনের যদি জামায়াত প্রার্থী পেয়ে থাকে সেখানে দেখা গেলো জামায়াতের নেতৃত্বে থেকে নির্বাচন হচ্ছে ফলে জোটের অন্য কর্মীগন জামায়াতের সাথে মিলেমিশে নির্বাচনী কাজ করছেন। আর স্বাভাবিক ভাবেই জামায়াত বাদে অন্যান্য কর্মীদের বিড়ি-সিগারেট-লিকুইডের ব্যয়ভার জামায়াতই বহন করেছে। অপরদিকে জোটপ্রার্থি যদি বিএনপি হয় তাহলে সেখানে জামায়াত কর্মীরা বিএনপির সাথেই হাততালি দিতে দিতে মিছিল করেছে, ক্ষেত্রবিশেষে ভোটারদেরকে টাকা বিতরনও তাদেরকে করতে হয়েছে। ফলে তারা নিজেরা যতই ইসলামী দলের কর্মি সমর্থক বলুক না কেন, জোট করতে গিয়ে তাদের কিছুটা বিসর্জন দিতে হয়েছে।

নৈতিকভাবে বিএনপি বা অণ্য প্রার্থীকে পছন্দ না হলেও তাকেই ভোট দিতে হয়েছে। আবার নির্বাচনে দীর্ঘদিন পাশাপাশি অবস্থানের কারনে বিএনপির লোক জামায়াত মুখী না হলেও জামায়াতের লোক বিএনপিমুখী হয়েছে। ফলে মেজর লাভ বিএনপির ঘরেই গিয়েছে। একজন জামায়াত কর্মীর ভোটে যখন একজন জোটপ্রার্থী জিতে যায় আর ক্ষমতায় থেকে যখন সে এমপি-মন্ত্রী ত্রানের টিন চুরি করে, বা ২ লাখ টাকার সিএনজি ৪ লাখ টাকায় বিক্রি হয় তখন এর দায়ভার কি জামায়াতের ঐ কর্মীর উপরে যায় কি না? এমনি সময় সামান্যতম ইস্যুতেই জামায়াত-শিবির মিছিল মিটিংএ দেশ গরম করে দেয় কিন্ত ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় দেশ বিদেশে ইসলাম বিরোধী কোন কার্যক্রমে তাদের প্রতিবাদ সর্বোচ্চ মিনমিন করে হয়। বিগত সংসদে তাদের একদিনও দেখি নাই এমপিদের দুর্নীতির প্রতিবাদ করতে।

জোটের রাজনীতি করে জামায়াত কি ইসলাম প্রতিষ্ঠা করছে নাকি ক্ষমতায় যাবার সিড়িকে সহজলভ্য করছে???? বর্তমার জামায়াত কতটুকু দাওয়াতী কাজ করছে আর কতটুকু নির্বাচনে বিজয়ী হবার নকশায় ব্যস্ত রয়েছে? ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.