আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বরিশালে আটটি আসনে জাপার প্রার্থী থাকলেও মাঠে নেই কেউ

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী বরিশাল বিভাগের ২১টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৫ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ হবে নয়টিতে। এর মধ্যে ৮টি আসনে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী থাকলেও তারা কেউই মাঠে নেই। যেসব আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রয়েছেন তারা একতরফাভাবে গণসংযোগ করছেন। তবে বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া), পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) ও বরগুনা-১ (সদর-আমতলী-তালতলী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলায় মোটামুটি নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়েছে। অপর ৬টি আসনে নির্বাচনী আমেজ নেই একেবারেই।

বরিশাল জেলার ৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ও বরিশাল-৫ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের শওকত হোসেন হিরণ এবং বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনে জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন জাহান রত্না আমিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। যদিও রত্না আমিন মনোনয়ন প্রত্যাহারের আবেদন করলেও সেটি গ্রহণ করেননি রিটার্নিং অফিসার। জেলার অপর তিন আসনের মধ্যে বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনে ৩ জন, বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে ৩ জন এবং বরিশাল-৪ (মেহেন্দিগঞ্জ-হিজলা) আসনে ৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উলি্লখিত ৩টি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী থাকলে তাদের কোনো প্রচার-প্রচারণা নেই। এমনকি তারা নির্বাচনী এলাকায়ও অনুপস্থিত।

বরিশাল-৩ আসনে ড. সিরাজুল ইসলাম ও বরিশাল-৬ আসনে মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ মলি্লক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেও দলীয় প্রতীক ব্যবহারের চিঠি না দেওয়ায় তাদের প্রতীক বরাদ্দ দেননি রিটার্নিং অফিসার মো. শহীদুল আলম। বরিশাল-৩ আসনে জাপার প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি গত শনিবার এলাকায় এসে প্রচারণা শুরু করেছেন। সেখানে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট টিপু সুলতান গণসংযোগ-কর্মিসভা করলেও বাবুগঞ্জ-মুলাদীতে কোনো নির্বাচনী আমেজ নেই।

জেলার একমাত্র নির্বাচনী উত্তাপ রয়েছে বরিশাল-২ আসনে। এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস এমপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জাসদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক উজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বাদলের সহধর্মিণী সমাজ সেবিকা মিসেস সাবিনা আক্তার প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন সমানতালে।

অপরদিকে বানারীপাড়া এবং উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশ তালুকদার ইউনুসের সঙ্গে না থাকায় ঘাম ঝরাতে হচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদককে। বরিশাল-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনএফের প্রার্থী আঞ্জুমান সালেহীন। পঙ্কজ দেবনাথ একা প্রচারে থাকায় সেখানে নির্বাচনী আমেজের লেশমাত্রও নেই। বরগুনার-২টি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলের দুই বিদ্রোহী নেতা স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় সেখানে প্রচার-প্রচারণায় কিছুটা প্রাণচাঞ্চল্য রয়েছে। বরগুনা-১ (সদর-আমতলী-তালতলী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বিরুদ্ধে লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি দেলোয়ার হোসেন।

বরগুনা-২ (পাথরঘাটা-বামনা-বেতাগী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য শওকত হাছানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর মো. আবুল হোসেন শিকদার। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করায় আবুল হোসেন শিকদারকে বহিষ্কারের জন্য ইতোমধ্যে জেলা কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ পাঠিয়েছে। এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম সবুর টুলু গত ২৬ জুলাই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর গত ৩ অক্টোবরের উপনির্বাচনে রিমন নৌকা প্রতীক নিয়ে ৬৫ হাজার ৮১৩ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পটুয়াখালী-১ (সদর-দুমকী) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাহারের আবেদন করার পরও স্বাক্ষর না মেলার অজুহাতে প্রার্থিতা বহাল রয়েছে জাতীয় পার্টির মহাসচিব নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রী এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের। তার প্রতিদ্বন্দ্বী জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান শওকত এককভাবে গণসংযোগ ও কর্মিসভা করছেন।

অপরদিকে পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনেও জাসদ নেতা হাবিবুর রহমান শওকত প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক প্রতিমন্ত্রী আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের বিরুদ্ধে। শওকতের অনুপস্থিতিতে সেখানে এককভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন জাহাঙ্গীর। পিরোজপুরের তিনটি আসনের মধ্যে ভোটগ্রহণ হচ্ছে একমাত্র পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনে। আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি ডা. আনোয়ার হোসেন এবং সাবেক এমপি জাতীয় পার্টির ডা. রুস্তম আলী ফরাজীর ব্যাপক প্রচার-প্রচারণায় সেখানে কিছুটা নির্বাচনী আমেজ রয়েছে। ওই আসনে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রমা রানী মজুমদার স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও তার কোনো প্রচারণা নেই।

ভোলার ৪টি আসনের মধ্যে ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমুদ্দিন) এবং ভোলা-২ (বোরহানউদ্দিন-দৌলতখান) আসনে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। ভোলা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন এমপি প্রচারণায় থাকলেও মাঠে নেই জাপা প্রার্থী অ্যাডভোকেট একেএম নজরুল ইসলাম। ভোলা-২ আসনেও একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী জেপির প্রার্থী মো. সালাউদ্দিনের অনুপস্থিতিতে একতরফা প্রচারণায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলী আজম মুকুল। ফলে ওই দুই আসনে কোনো নির্বাচনী আমেজ নেই।

 

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।