আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নীলফামারী'র টুপামারী'র আজকের আওয়ামী লীগ ও বিএনপি'র যৌথ মানববন্ধন ও সমাবেশ একটি শিক্ষণীয় কর্মসূচি!!

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

কেউ হয়তো মফস্বল সংবাদ বলে উড়িয়ে দেবেন। কেউ হয়তো বলবেন এটা একটা সাজানো নাটক। কিন্তু নীলফামারীতে আজ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি'র নেতাকর্মীরা একসঙ্গে একটি মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধনটি পরে সমাবেশে রূপ নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়। আমাদের জাতীয় পর্যায়ের নেতাদের আজকের এই নীলফামারীতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধ ও সমাবেশ থেকে শেখার আছে অনেক কিছুই।


বিগত ১২ ডিসেম্বর একাত্তরের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতা আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার দিন রাতে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা নীলফামারী জেলা সদরের লক্ষীচাপ ও পলাশবাড়ী ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা চালায়। ১৪ ডিসেম্বর নীলফামারী'র ওই অঞ্চলের আওয়ামী লীগের সাংসদ আসাদুজ্জামান নূর সেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে বিকেল ৫টা দিকে রামগঞ্জ বাজারের কাছাকাছি সাংসদ আসাদুজ্জামান নূরের গাড়িবহরে জামায়াত শিবির হামলা চালায়। হামলায় আসাদুজ্জামান নূর প্রাণে রক্ষা পেলেও তাঁকে মানব ঢালের মাধ্যমে বাঁচাতে গিয়ে আওয়ামী লীগের চার নেতা-কর্মী ও একজন পথচারী নিহত হন। ওই দিন রাতেই ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা প্রায় দেড় হাজার ব্যক্তির বিরুদ্ধে নীলফামারী সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বাবুল আকতার বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
আজকের মানববন্ধন ও সমাবেশ ছিল সেই হামলার বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সহ সর্বস্তরের জনসাধারণের একটি সম্মিলিত প্রতিবাদ।

এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী বিএনপির নেতা-কর্মীরাও জামায়াত-শিবিরের সহিংসতা প্রতিহত করার পাশাপাশি শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকারও ঘোষণা দেন। টুপামারী বাজারে আজ সোমবার সকালে এ মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করে টুপামারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ।
মানববন্ধন শেষে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম শাহ'র সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা দেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোকছেদুল ইসলাম, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক সামসুদ্দোহা শাহ, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মছিরত আলী শাহ ফকির, সদর উপজেলা জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার আলী ভুট্টু, ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মশিউর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক হেলাল উদ্দীন, সদর উপজেলা যুবলীগের অর্থ সম্পাদক আবুল কাশেম শাহ, আওয়ামী লীগের নেতা ছমির উদ্দিন সরকার ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন চৌধুরী।
সাংসদ আসাদুজ্জামান নূরের ওপর হামলার জন্য জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের দায়ী করে সমাবেশে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা ওই হামলা ও হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি করেন।
জাতীয় পর্যায়ে আমরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে কি এভাবে কখনো ভাবতে পারি? একই অনুষ্ঠানে দেশের দুইটি প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মানববন্ধন ও সমাবেশ করবে? যেখানে জামায়াত শিবিরের সহিসংতা ও নাশকতার বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি'র জাতীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা? নীলফামারী'র টুপামারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ওই কর্মসূচি আয়োজন করলেও সেখানে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা যেভাবে সপ্রণোদিত হয়ে যোগদান করেছেন, তা থেকে কি আমাদের বড় দুইটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা কোনো শিক্ষাগ্রহন করতে পারে?
নীলফামারী'র টুপামারী'র এই চিত্রটি যদি ঢাকায় বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে বাংলাদেশ থেকে জামায়াত শিবির পালানোর পথ পাবে না।

টুপামারী আজ আমাদের যে শিক্ষা দিলেন, আমাদের বড় দুইটি রাজনৈতিক দল সেখান থেকে অনেক কিছু শিখতে পারেন। শিখতে না পারলেও অন্তত তাদের অনুসরণ করতে পারেন। তাহলে বাংলাদেশের মাটিতে স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত শিবির একদিন নিশ্চিন্থ হয়ে যাবে। যদি আপনারা সত্যি সত্যিই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হয়ে থাকেন, তাহলে টুপামারীকে অনুসরণ করে দুই দল একত্রে ঢাকা'র জাতীয় প‌্যারেড গ্রাউন্ডে একটি সম্মিলিত কর্মসূচি দিয়ে বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ পথে ফিরিয়ে আনতে পারেন।
বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বলবো, আপনি টুপামারী স্থানীয় বিএনপি থেকে রাজনৈতিক পরামর্শ গ্রহন করুন।

আর আওয়ামী লীগকে বলবো, আপনারাও টুপামারী স্থানীয় আওয়ামী লীগের অর্জনকে জাতীয় পর্যায়ে ছিড়েয় দিন। তাহলে বাংলাদেশ একটি শান্তির জনপদে ফিরে আসবে। দয়া করে আপনারা টুপামারী'র মত একটি সম্মিলিত সমাবেশ করে বাংলাদেশের নিরীহ সাধারণ মানুষকে শান্তিতে বসবাস করার সুযোগ দিন। আমীন।



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।