আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৬৬'র বিশ্বকাপের সেই ম্যাচ

উত্তর কোরিয়া তখন এশিয়ান ফুটবলের পরাশক্তি। বিশ্ব ফুটবলেও তাদের কদর রয়েছে যথেষ্ট। ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপে ইতালি এবং চিলির মতো দলকে টপকে উত্তর কোরিয়ানরা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে। এই দুর্দান্ত উত্তর কোরিয়ারই মুখোমুখি হয় ইউসেবিওর পর্তুগাল। গত রবিবার পর্তুগিজ এই ফুটবল কিংবদন্তি পৃথিবী ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন ভিন্ন জগতে।

ইউসেবিও চলে গেছেন তবে ফুটবল ভক্তদের জন্য এখনো ১৯৬৬ সালের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটা অবিশ্বাস্যই হয়ে আছে।

লিভারপুলের গুডিসন পার্কে ১৯৬৬ সালের ২৩ জুলাই কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ খেলতে নামে পর্তুগাল-উত্তর কোরিয়া। গ্রুপ পর্বে ইউসেবিওর দুর্দান্ত পর্তুগাল পেলের ব্রাজিলকে হারিয়েছিল ৩-১ গোলে! হারিয়েছিল সে সময়ের ফুটবল পরাশক্তি হাঙ্গেরিকেও। কোয়ার্টার ফাইনালে উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে ফেবারিট ছিল পর্তুগালই। তবে ফুটবল ভক্তদের অবাক করে দিয়ে প্রথম মিনিটেই প্যাক সিয়াং জিনের গোলে এগিয়ে যায় উত্তর কোরিয়া।

ম্যাচের ২২তম মিনিটে লি ডঙ এবং ২৫তম মিনিটে ইয়াংয়ের গোলে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় এশিয়ানরা! এখানেই যারা ম্যাচের সমাপ্তি ভেবেছিলেন তাদের জন্য ম্যাচের পরবর্তী অংশ নিয়ে এসেছিল চরম বিস্ময়। ২৭ মিনিটে পর্তুগিজদের পাল্টা আক্রমণের মুখে পড়ে উত্তর কোরিয়া। গোল করেন ইউসেবিও। ৪৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে দ্বিতীয় গোল করেন দলের পক্ষে। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধেও ইউসেবিওর আগুনের ছোঁয়া সইতে পারেনি উত্তর কোরিয়া।

৫৬ মিনিটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি। ৫৯ মিনিটে পেনাল্টি থেকে আরেকটি গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ৪-৩ ব্যবধানে। যেসব ভক্তরা পরাজয়ের প্রহর গুনছিলেন তাদের চোখে মুখে ফুটে উঠেছিল স্বস্তির চিহ্ন। ম্যাচের ৮০ মিনিটে অগাস্তু আরেকটি গোল করে পর্তুগালকে এনে দেন ৫-৩ ব্যবধানের জয়। সে বিশ্বকাপে পর্তুগাল সেমিফাইনালে হেরে গিয়েছিল স্বাগতিক ইংল্যান্ডের কাছে ২-১ গোলে।

সেমিতেও এক গোল করেছিলেন ইউসেবিও। গোল করেছিলেন তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচেও। সোভিয়েত ইউনিয়নকে এই ম্যাচে পর্তুগাল হারিয়েছিল ২-১ গোলে। ১৯৬৬ বিশ্বকাপে তৃতীয় স্থান নিয়েই বাড়ি ফিরেছিল পর্তুগিজরা। এখনো পর্যন্ত বিশ্বকাপের পর্তুগালের এটাই সর্বোচ্চ অর্জন।

এরপর ২০০৬ সালে লুই ফিগো-ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোরা পর্তুগালকে তুলে এনেছিলেন সেমিফাইনালে। পর্তুগাল সেবার চতুর্থ হয়েছিল।

ইউসেবিও চলে গেছেন। তবে রেখে গেছেন অসংখ্য স্মৃতি। পর্তুগিজদের জন্য তো বটেই, ফুটবলভক্তদের জন্যও।

পেলে-পুসকারদের ছায়া থেকে বেরিয়ে ইউসেবিও আলো ছড়িয়েছেন আপন ভুবনে। তার রেখে যাওয়া অসংখ্য স্মৃতির সঙ্গে ১৯৬৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের কথাও ফুটবলভক্তরা কখনো ভুলবে না।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।