আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নীলফামারীতে নূরের বহরে হামলাকারী মেহেরপু

বিভিন্ন জেলায় যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গতকাল বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। এদিকে মেহেরপুর জামায়াত নেতা তারিক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম গুলিতে নিহত হয়েছেন। নীলফামারীতে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের গাড়িবহরে হামলা ও আওয়ামী লীগের চার নেতা-কর্মী হত্যা মামলার আসামি ছাত্রদল নেতা আতিকুর রহমান আতিকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

মেহেরপুর : জেলা জামায়াতের সহ-সেক্রেটারি তারিক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম (৩৫) পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। নিহত তারিক জেলা জামায়াতের আমির ছমির উদ্দীনের ছেলে। রবিবার রাত পৌনে ৩টায় তারিককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় বলে জানিয়েছেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আবুল কাশেম। সদর থানার ওসি রিয়াজুল ইসলাম জানান, রবিবার রাত আড়াইটার দিকে তারিককে নিয়ে বন্দর এলাকায় জামায়াতের খুলনা বিভাগীয় আঞ্চলিক নেতা আবদুল মতিনকে ধরতে গেলে জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা গুলি ও বোমা ছোড়ে। এ সময় পুলিশও আত্দরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে। উভয় পক্ষের গুলি বিনিময়ের মাঝখানে পড়ে তারিক গুলিবিদ্ধ হন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ সুপার এ কে এম নাহিদুল ইসলাম রবিবার বিকালে জানিয়েছিলেন, হরতাল-অবরোধের সময় পুলিশের ওপর হামলা, সড়কের পাশে সরকারি গাছ কাটা, ককটেল বিস্ফোরণ ও সংঘর্ষের ঘটনায় কয়েকটি মামলার আসামি হিসেবে তারিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে জামায়াতের পক্ষ থেকে এটিকে হত্যা দাবি করে জেলা ভারপ্রাপ্ত আমির সিদ্দিকুর রহমান জানান, তারিক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে পরিকল্পিতভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হত্যা করেছে। তিনি বলেন, এভাবে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের আটক করে নির্মমভাবে হত্যা করে ইসলামী আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। নীলফামারী : সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের গাড়িবহরে সহিংস হামলা এবং আওয়ামী লীগের চার নেতা-কর্মী হত্যা মামলার আসামি আতিকুর রহমান আতিক (২৬) নামে এক ছাত্রদল নেতার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আতিক সদর উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নের সুখধন গ্রামের কারি ফজলুল করিমের ছেলে এবং ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। গতকাল সকাল ১০টার দিকে সৈয়দপুর উপজেলার বাইপাস সড়কের ধলাগাছ নাড়িয়া ডাঙ্গা নামক স্থান থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আতিকের বড় ভাই আমিনুল ইসলাম জানান, ১৩ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার থানার সাঁথিয়া স্কুলের পাশে বাবুল খানের বাড়ি থেকে আতিক এবং মহিদুলকে (২৬) ডিবি পুলিশ পরিচয়ে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। গতকাল সকালে আমার স্ত্রী রেহানা পারভিন লাশ দেখে আতিক বলে শনাক্ত করে। জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোর্শেদ আযম জানান, আতিক টুপামারী ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সদর থানার ওসি (তদন্ত) বাবুল আকতার জানান, ১৪ ডিসেম্বর রামগঞ্জের সহিংসতায় নিহত ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরীর ভাই রাশেদ আলম চৌধুরী হত্যা মামলা করেন। মামলায় ৮৬ জন আসামির মধ্যে আতিক ছিলেন চার নম্বরে। আদালতের নির্দেশে পুলিশের পক্ষে দায়ের করা সংস্কৃতিমন্ত্রী নূরের গাড়িবহরে হামলা মামলায় ওই মামলাটিও সংযুক্ত করে তদন্ত করা হচ্ছে। সৈয়দপুর থানার ওসি (তদন্ত) ফিরোজ আহমেদ জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। লাশের ডান কানের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রসঙ্গত, ১৪ ডিসেম্বর রামগঞ্জে সংস্কৃতিমন্ত্রী নূরের গাড়িবহরে হামলা এবং আওয়ামী লীগের চার নেতা-কর্মী হত্যার ঘটনায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দেড় হাজার জনকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ। চট্টগ্রাম : সীতাকুণ্ড ও সাতকানিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রবিবার রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ পাঁচ জামায়াত কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে গাড়ি ভাঙচুর ও অগি্নসংযোগের মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানায়। সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল খালেক বলেন, পশ্চিম ঢেমশা থেকে পল্লী চিকিৎসক মোহাম্মদ ইমরান, আধুনগর থেকে আবদুল আজিজ ও কেউচিয়া থেকে জামাল উদ্দিন নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। সীতাকুণ্ড থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইফতেখার হাসান বলেন, গাড়ি ভাঙচুর ও অগি্নসংযোগের অভিযোগে খাইরুল ইসলাম ও ইকবাল নামে জামায়াতের দুই কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিলেট : শনিবার রাত থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত মহানগর পুলিশের আওতাধীন ৬ থানা পুলিশ ১৭ জনকে ও জেলা পুলিশের অন্তর্ভুক্ত ১১ থানা থেকে ২৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৮ দলীয় জোটের কয়েকজন নেতা-কর্মী রয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। নারায়ণগঞ্জ : রবিবার রাত থেকে গতকাল দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন থানায় অভিযান চালিয়ে জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৫৯ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, নাশকতার আশঙ্কায় ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনে তল্লাশি চালিয়ে ৪৫ জনকে আটক করা হয়েছে। জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকার জানান, পুলিশ নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করে চরমভাবে গণতন্ত্র লঙ্ঘন করেছে। দিনাজপুর : হাকিমপুর উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহ আলমকে গতকাল বিকালে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে আটক করেছে পুলিশ। আটকের পর স্থানীয় জনতা থানার সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে। হাকিমপুর থানার ওসি আহসান হাবিব জানান, ওয়ারেন্ট থাকায় পুলিশ তাকে আটক করেছে। কুড়িগ্রাম : শনিবার ও রবিবার রাত পর্যন্ত বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের ৩৬ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্র জানায়, সহিংসতা ও নাশকতার আশঙ্কায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সুপার সঞ্জয় কুমার কুণ্ডু জানান, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ রাখতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.