আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নারীদের চরম ভোগান্তি বিআরটিসির সেবা কম

চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন নগরীর গণপরিবহনে চলাচলকারী নারীরা। সরকারি-বেসরকারি বাসে তাদের জন্য সংরক্ষিত আসন থেকেও যেন নেই। সংরক্ষিত আসন উদ্ধার করতে গিয়ে পুরুষ যাত্রীদের বিরূপ আচরণে নারীদের অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে। নারী কর্মজীবী ও শিক্ষার্থীদের গন্তব্যে যাওয়ার জন্য রীতিমতো যুদ্ধ করে পুরুষদের পাশাপাশি গণপরিবহনে ধাক্কাধাক্কি করে দাঁড়িয়ে, বাসের পা-দানিতে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে দেখা যায়। অফিস কর্ম সময়ে যখন পরিবহনে চাপ বেশি থাকে তখন বহু বেসরকারি বাসে 'সিট নেই' বলে নারীদের উঠতে দেওয়া হয় না। অন্যদিকে সরকারিভাবে পরিচালিত বিআরটিসি মহিলা বাস সার্ভিসের সেবাও অপর্যাপ্ত। নানা অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার ঘোরটোপে মহিলা বাস সার্ভিসের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নগরীর মহিলা যাত্রীরা। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত নারীদের গণপরিবহন বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। বাসে পুরুষ যাত্রীদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি, কখনো বখাটেদের সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনা হররোজই হচ্ছে। বিআরটিএ মহিলা যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে বেশ কয়েক বছর আগে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। যেখানে বলা হয়, প্রত্যেকটি মিনিবাসে কমপক্ষে ছয়টি এবং বড় বাসে কমপক্ষে নয়টি সংরক্ষিত আসন নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য রাখতে হবে। কিন্তু গণপরিবহনগুলোতে এ প্রজ্ঞাপন মেনে চলার নজির তেমন দেখা যায় না। নারীদের সংরক্ষিত আসন পেতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়। অন্যদিকে চাহিদার তুলনায় কম বাস, নির্দিষ্ট সময়সীমা মেনে না চলা, মহিলাদের জন্য নির্ধারিত বাসে পুরুষ যাত্রীদের বহন করার জন্য দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে বিআরটিসির মহিলা বাস সার্ভিসের যাত্রীদের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ খাতে ক্রমাগত লোকসান হওয়ার কারণে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বাসের সংখ্যা বাড়ানো যাচ্ছে না। অনুসন্ধানে নিয়ম ভেঙে বিআরটিসির বাসগুলোতে পুরুষ যাত্রী বহন করতেও দেখা গেছে। এ ব্যাপারে বিআরটিসির পরিচালক (অপারেশন) মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, বাসগুলোতে সকাল ও বিকালে চাপ থাকলেও অন্য সময় চাপ থাকে না। সেসময় যাত্রী না থাকায় তেলের খরচ পুষিয়ে নিতে পুরুষ যাত্রী বহন করা হয়। বিআরটিসির তথ্যে জানা যায়, বর্তমানে মতিঝিল, রামপুরা, মালিবাগ, চৌধুরীপাড়া, খিলগাঁও, মিরপুরসহ বিভিন্ন রুটে মোট ৮টি মহিলা বাস চলছে। এর মধ্যে কল্যাণপুর রুটে এ সেবা চালু করা যায়নি। ঢাকার বাইরে নারায়ণগঞ্জ-কাঁচপুরে আরেকটির চলাচলের কথা থাকলেও তা বন্ধ হয়ে যায়। মহিলাদের বিড়ম্বনার কথা ভেবে ১৯৯৮ সালে প্রথমবার বিআরটিসি মহিলাদের জন্য আলাদাভাবে বাস সার্ভিস চালু করে। সে সময় রাজধানীসহ পাশর্্ববর্তী জেলাগুলোতে বিআরটিসির ৭টি বাস চলাচল করে। কিন্তু এতে অতিরিক্ত লোকসান হতে থাকলে কর্তৃপক্ষ এ সার্ভিস বন্ধ করে দেয়। মহিলা যাত্রীদের অভিযোগ, বাসগুলো পথে অকারণে প্রচুর সময় নষ্ট করে। এক মহিলা যাত্রী অভিযোগ করেন, সময় মেনে বিআরটিসির বাসগুলো ছাড়ে না। এ জন্য এতে সব সময় চলাচল করা যায় না। তবে এ বাসগুলো শুধু নির্দিষ্ট রুটে এবং সময় মেনে চলাচলের কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বহু নারী এ বাসগুলোতে ভ্রমণ করতে পারেন না। আবার অনেক নারী আছেন যারা এ বাস সার্ভিস সম্পর্কে তেমন কিছুই জানেন না।

এ ব্যাপারে বিআরটিসির চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মহিলা বাসগুলোতে আশানুরূপ যাত্রী না পাওয়ায় বাস চালানোর খরচ পর্যন্ত উঠছে না। আমরা ভর্তুকি দিয়েই এ সেবা চালু রেখেছি। কিন্তু যেহেতু আমরা এ সেবা দেওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, তাই লোকসান হলেও বাস সার্ভিস বন্ধ করব না। ভবিষ্যতে আরও মহিলা বাস বৃদ্ধির পরিকল্পনাও রয়েছে বলে তিনি জানান।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.