আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উদঘাটন হয়নি কোনো রহস্য

একের পর এক দুর্ধর্ষ ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। কিন্তু কোনো ঘটনারই রহস্য আর উন্মোচন হয় না। কয়েকটি ঘটনায় নামেমাত্র দু-একজন সন্দেহভাজন আসামিকে গ্রেফতার করেই দায়িত্ব শেষ করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। চাঞ্চল্যকর এসব ঘটনার তদন্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠেছে। এতে করে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাহীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। গ্রাহকদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে হতাশা-আতঙ্ক। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, বিভিন্ন সময়ের ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা গুরুত্বের সঙ্গে দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করবে বাংলাদেশ ব্যাংকের হাই অথরিটি। তবে কিশোরগঞ্জের ঘটনাটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকও গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করবে।

ঘটনা-১: গত বছরের ১৯ অক্টোবর ঈদের ছুটির সময় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ইসলামী ব্যাংকের নিরাপত্তা প্রহরী আইয়ুব আলীকে হত্যা করে ভল্ট ভেঙে ৭২ লাখ ১১ হাজার টাকা লুট করে দুর্বৃত্তরা। পরে ব্যাংকের ম্যানেজার মাহমুদ হাসান বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। ডাকাতরা এসিড দিয়ে ভল্টের তালা ভেঙেছে বলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দাবি করেন।

ব্যাংকের ম্যানেজার মাহমুদ হাসান জানান, ডাকাতরা নাইট্রিক এসিড দিয়ে ভল্টের তালা ভেঙেছে। এ সময় তারা হাতে গ্লাভস ব্যবহার করে, যাতে হাতের ছাপ পাওয়া না য়ায়। ডাকাতরা যাওয়ার সময় ব্যাংকের সিসি ক্যামেরার ডিস্ক খুলে নিয়ে যায় বলেও জানান ম্যানেজার। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইউনুস আলী জানান, সন্দেহভাজন পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জবানবন্দি থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।

ঘটনা-২ : গত বছরের ২৩ জুন কুড়িগ্রামের প্রাণকেন্দ্রে পূবালী ব্যাংকে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দল ব্যাংকের ভল্ট কেটে ৫৮ লাখ টাকা লুট করে। এ ঘটনায় ব্যাংকের নৈশ্য প্রহরী হাবিবুর রহমানকে সন্দেহজনক হিসেবে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর কিছুদিন আগে দুর্বৃত্তরা ইউনিলিভারের লোকাল অফিসে ১৪ লাখ টাকা ডাকাতি করলেও ওই ঘটনার তদন্তের কোনো অগ্রগতি হয়নি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, মামলার তদন্তে কোনো অগ্রগতি নেই। তবে তদন্ত কার্যক্রম চলছে।

ঘটনা-৩ : ২০১২ সালের ১ অক্টোবর ঝালকাঠি ইসলামী ব্যাংক শাখা থেকে দুর্বৃত্তরা ৭৭ লাখ ২২ হাজার টাকা ৩৯০ টাকা লুট করে। ওই ঘটনায় সন্দেহজনক হিসেবে ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবদুর রহিম জানান, গত বছর ১১ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে লুণ্ঠনকৃত দুই লাখ ২০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

ঘটনা-৪: ২০০৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর দুর্বৃত্তরা নাটোরে ন্যাশনাল ব্যাংকের শাখা থেকে গত রাতে এক কোটি ৬২ লাখ টাকা লুট হয়েছে। ডাকাতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বাগাতিপাড়া পৌরসভার মেয়র মোশাররফ হোসেনসহ ১৫ জন সন্দেহজনক হিসেবে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। পরবর্তীতে তারা জামিনে বেরিয়ে আসেন। তবে ওই ঘটনার তদন্তে এখনো কোনো কূলকিনারা করতে পারেনি পুলিশ। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম উদ্দীন জানান, বর্তমানে মামলাটি রাজশাহী সিআইডিতে। তাই এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে তার জানা মতে গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় ব্র্যাক ব্যাংকে ৯০ লাখ টাকার ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এর আগে ওই বছরেরই ৫ জুলাই চাঁদপুর শহরের রূপালী ব্যাংক নাজিরপাড়া শাখার ভেন্টিলেটর ভেঙে ভেতরে ঢুকে ডাকাতির চেষ্টাকালে মেহেদী হাসান (২০) নামের এক ডাকাতকে আটক করে পুলিশ। ২০০৮ সালের ২ মার্চ ব্র্যাক ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখায় ৬২টি লকার ভেঙে স্বর্ণালঙ্কারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মালামাল লুট করে দুর্বৃত্তরা। চাঞ্চল্যকর এসব মামলার বেশিরভাগেরই কোনো অগ্রগতি নেই কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে গতরাতে পুলিশ মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার জানান, খোঁজ না নিয়ে এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করা সম্ভব নয়। সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপারদের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.