আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্লান্ত বিকেলে দুর্গেশনন্দিনীর সুখস্বপ্ন!-- গোলাম মাওলা রনি!

যখন পেয়েছি পথের দেখা তখন আবার দিকভ্রান্ত হয়ে হারিয়েছি পথ.........



অনেকেই তাঁকে নিষেধ করেছিলো এমনতরো স্থানে দূর্গটি নিমার্ণ না করার জন্য। সংকীর্ন গিরিপথ। দুপাশে বৃক্ষহীন পাষান পাহাড়। এরপর ধু ধু মরুভূমি। জন মানবহীন ধুসর মরুভূমিতে দূর্গ নির্মানের সাধ হঠাৎ করে কেন যে তাঁকে পেয়ে বসলো তা তিনি নিজেও জানেন না।

হয়তো নিজের মধ্যকার অবারিত এবং দূর্বোধ্য ইচ্ছাশক্তির তাড়নে তিনি বালির পাহাড়ে সুউচ্চু দূর্গ নির্মাণ করেছেন।
তার পূর্বের দূর্গটি নেহায়েত মন্দ ছিলোনা। জানালা দরজা অনেক বেশি ছিলো। বাইরের আলো বাতাস যেভাবে হুড় হুড় করে দূর্গে প্রবেশ করতো তাতে একদিকে যেমন ভালো লাগতো, ঠিক তেমনি উল্টো দৃশ্যও কম ছিলোনা। বাইরের মানুষের কোলাহল, চিৎকার আর অভাবীদের ফরিয়াদে নিয়ত ব্যাহত হতো জীবনযাত্রা।

দু’দন্ড সুখস্বপ্ন দেখার সুযোগ ছিলোনা। অন্যদিকে প্রতিটি জানালা দরজা পাহারা দেবার ঝক্কি ঝামেলাতো ছিলোই। অকৃতজ্ঞ জনগন নিজেরা পেটপুরে খেয়ে মুখে পান সুপারী চিবুতে চিবুতে দল বেঁধে দূর্গের সামনে আসতো রং তামাসা করার জন্য, দূর্গবাসী- বাসিনীদের সুখস্বপ্ন নষ্ট করার জন্য।
এভাবে কাহাতক চলা যায়! তাইতো তিনি জনমানবহীন নির্জন প্রান্তরে দূর্গ নির্মান করেছেন জীবনের বাকী সময়টা একটু ভিন্ন মাত্রায় কাটাবার জন্য। মরুভূমির মধ্যে বালির পাহাড়, তার ওপর সুউচ্চ বিশাল দূর্গ- এটা কি করে নির্মিত হবে- জ্ঞানী, গুনী, প্রকৌশলীরা নিরন্তর নিষেধ করছিলেন।

কিন্তু তিনি মুচকী হেসে কেবল বলেছিলেন দূর্গ নির্মিত হবে এবং সেখানে আমি বসবাস করবো; সঙ্গে থাকবে আমার উজির, নাজির, পাইক পেয়াদা, চাকর, বাকর- সকলেই। সাহারা মরুভূমিতে যদি দূর্গ থাকতে পারে তবে এখানে নয় কেনো! আফ্রিকা মহাদেশের দূর্গম মরুময় এলাকায় দূর্গ নির্মানের কলাকৌশল সম্পর্কে তিনি বিস্তর পড়াশুনা করলেন। তারপর কোন রকম ভিত্তি ছাড়াই বড় বড় পাথর দিয়ে অদ্ভূত এক কৌশলে নির্মান কাজ আরম্ভ করলেন।
রাজ দরবারের অনেকেই সেদিন হেসেছিলো। দাঁত বের করে কিলবিলিয়ে হাসতে হাসতে তারা গড়াগড়ি খেয়েছিলো।

জনগন বলেছিলো আমাদের মাথার ঘামের টাকা দিয়ে মরুভূমিতে দূর্গ নির্মান করা যাবে না- আর রাজ্যের জ্ঞানী গুনিরা মস্ত বড় বড় কিতাব থেকে হাজারো উপমা এনে হাজির করে বলেছিলো- দূর্গ নির্মান করা যাবেনা; নির্মান করা গেলেও উচিত হবে না কারন দূর্গটি নাকি টিকবেনা। এসব কথায় তিনি ভারী বিরক্ত হলেন। অসহায়ভাবে চারিদিকে তাকাতে লাগলেন। লোকজনের অভিব্যক্তি দেখে বুঝলেন- কেউ তাঁকে সমর্থন দিচ্ছে না। কিছু খয়ের খা অতিমাত্রায় উৎসাহ দিলেন বটে- কিন্তু তাদের হাঁটুর দিকে তাকাতেই লক্ষ করলেন ওগুলো তখন ভূমিকম্পের তরে থর থর করে কাঁপছে।


দেশের মানুষকে তিনি বহু বছর ধরে চিনেন। এদেরকে কিভাবে চালাতে হয় তাও তিনি জানেন। এ ভূখন্ডের মানুষ যে কবিতার ভাষাকে অপমান করে তা তিনি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন বহুবার। কবিতায় তিনি পড়েছিলেন- শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে। অর্জিত বিদ্যার বাস্তব প্রয়োগ করতে গিয়ে তিনি যখনই মানুষজনকে সোহাগ করতে গিয়েছেন তখনই তারা তাকে লাঞ্ছিত করেছে।

অন্যদিকে যখন বজ্রকন্ঠে হুঙ্কার দিয়ে অত্যাচারের খড়গ তুলে শাসন করতে এগিয়ে গিয়েছেন তখনই তারা সমস্বরে কেঁদে উঠেছে এবং বলেছে ওরে মাগো! কিছু বলবো না, কিছু চাইবো না- এমনকি পান সুপারিও খাবো না;
তিনি তার বাস্তব বুদ্ধি দ্বারাই বুঝেছেন- মেঘে মেঘে অনেক বেলা পার হয়ে গিয়েছে। তার সরলতার সুযোগ নিয়ে রাজ অমাত্যরা দূর্নীতির পাহাড় গড়েছেন। প্রথম দিকে তিনি বিশ্বাস করতেই পারছিলেন না যে তার উজির নাজিররা এসব করতে পারে। আর বিশ্বাস করবেন বা কেমনে- কাউকে এনেছেন অজো পাড়া গাঁ থেকে, কাউকে জঙ্গল থেকে আবার কাউকে হরিজন সম্প্রদায় থেকে। এদের কেউ ধান বেচতো, কেউ মাছ ধরতো আবার কেউবা দিন দুপুরে গ্রামে মোড়লগীরি করতো আর রাত বিরাতে সুযোগ বুঝে ২/৪টা ভালো ভালো নীশিকর্ম করতো।

তিনি এদেরকে ভালো ভালো পদে বসিয়ে ব্যতিক্রমী একটি উদাহরণ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন মহামতি তুর্কী সুলতান সুলায়মানের মতো।
ভূ-মধ্য সাগরের কুখ্যাত ডাকাত খয়ের উদ্দিনের যন্ত্রনায় সুলতান সুলায়মান আর টিকতেই পারছিলেন না। দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ভূখন্ডের শাসক তার সর্বশ্রেষ্ঠ সেনাবাহিনী এবং নৌকমান্ডো নিয়ে বার বার একজন জলদস্যূর নিকট নাজেহাল হচ্ছিলেন। ১৫২০ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর তারিখে সিংহাসন লাভের পর এক নাগাড়ে ১০ বছর তিনি খায়রুদ্দিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন। কিছুতেই কিছু হলো না।

সমগ্র রাজ্য জুড়ে শান্তি কিন্তু সমূদ্রের অশান্তি তাকে পাগল করে তুললো। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন খায়রুদ্দিনের সঙ্গে সন্ধি করার জন্য। খায়রুদ্দিন সাড়া দিলো। সুলতান তাকে রাজধানীতে এনে বিপুল সংবর্ধনা দিলেন এবং রাজকীয় নৌবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত করলেন। তারপরের ইতিহাসতো সবাই জানে- ভূ-মধ্য সাগর, ভারত মহাসাগর, আরব সাগর, লোহিত সাগর এবং কৃষ্ণ সাগরের একচ্ছত্র আধিপত্য চলে এলো অটোম্যানদের হাতে।


না তিনি যেমন সোলায়মান হতে পারেননি তেমনি তার নিয়োগকৃত লোকজনও খয়েরউদ্দিনের মতো সফলতা দেখাতে পারেনি। বরং নানাবিধ দুষ্কর্ম এবং বাহারী সব কেলেংকারীর ঘটনা ঘটিয়ে দেশ বিদেশে রীতিমতো হৈচৈ ফেলে দিয়েছে। তিনি নিজেও কম অবাক হননি এত্তোসব কান্ড কারখানা দেখার পর। মাঝে মধ্যে ভাবতেন- এতো সব শয়তানী ওরা শিখলো কোথায়! তারপর এক অদ্ভূত ক্ষমতায় তিনি ওদের প্রতি স্নেহ পরবশ হয়ে পড়লেন যখন দেখলেন লোক গুলো নেহায়েত বোকা, নির্বোধ এবং অনেকটা শিশু প্রকৃতির । ইতিপূর্বে তিনি প্রাজ্ঞ, অভিজ্ঞ এবং ঝানু ব্যক্তিগনকে রাজ অমাত্য নিয়োগ দিয়েছিলেন।

তারা সবকিছুই করতো দক্ষতার সঙ্গে এমনকি দূর্নীতি এবং অপকর্মগুলোও। তিনি এসব জানতেন কিন্তু দেশবাসী জানতো না।
ইদানিং কালের ঘটনা সব কিছু লেজে গোবরে করে ফেলেছে। বোকা ও অবোধ শিশু প্রকৃতির উজির নাজিররা তাদের পূর্বসূরীদের তুলনায় তেমন মারাত্মক কিছু করেনি কিন্তু আম দুধের মতো সব কিছু মাখিয়ে ফেলেছে। ফলে তাদের কর্মগুলো এখন আমাশয় রোগীর বিষ্ঠার মতো লাগছে


আসল ঘটনা হলো হজম করতে পারেনি- ঠিক যেনো ঘাউরা মাছের মতো । সব মাছেরাই নাকি গু খায় কিন্তু বদনাম হয় ঘাউরা মাছের। কারন ঘাউরা মাছেরা ওগুলো হজম করতে পারে না। তারপরও কিছু মানুষ ছাড়া বেশিরভাগ মানুষই ঘাউরা মাছ খায়। কিন্তু মানুষ যদি ঘাউরার মতো নিজেদের কুকর্মকে হজম করতে না পারে তবে সমাজ তাদেরকে ক্ষমা করে না- ছ্যাচা, গুতা, কিল, ঘুসি দিতে দিতে এক সময় মেরেই ফেলে।


তিনি যখন সবকিছু বুঝলেন তখন বড্ড দেরী হয়ে গেছে। ওদিকে তার ঘাউরা মাছেরা বহুবিধ এবং বহু সংখ্যক বাচ্চা কাচ্চা উৎপাদন করে নিজেদের সংখ্যা ও পরিমান বহুগুনে বৃদ্ধি করেছে। এতো মাছ মারা সম্ভব নয়; আবার ফেলে দেওয়াও সম্ভব নয়। ফলে তাদের জন্য তিনি পরিকল্পনা করলেন একটি নিরাপদ অভয় আশ্রম তৈরী করার জন্য। সেই লক্ষেই মরুভূমির মধ্যে নির্মিত হয়েছে দূর্গ।


দূর্গ নির্মানের পর তিনি মহা সমারোহে সকলকে নিয়ে সেখানে ঢুকলেন স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য। সকলেই মহা খুশী। তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে শুরু করলো কান্না- কৃতজ্ঞতার কান্না। ওদের কান্না দেখে তার খুব মায়া হলো- ভেতরকার মাতৃস্নেহ মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো। নতুন স্থানে এসে তিনি নতুন করে সাজালেন সবকিছু - পাত্র মিত্র, উজির নাজির নতুন করে নিয়োগ দিলেন।

সকলে মিলে পরম কৃতজ্ঞতায় তাদের নিয়োগ কর্তার উপাধী দিলেন দূর্গেশনন্দিনী।
মহিয়সী দূর্গেশনন্দিনী আজ কেনো জানি বেশ উৎফুল্ল। তাঁর ইচ্ছে হলো বিকেলটা দূর্গ বেদীতে একাকী কাটাবেন। এখানে আসার পর তিনি বেদীতে উঠেননি। তবে সকলেই বলেছে বেদীতে দাঁড়িয়ে সূর্য অস্ত যাওয়ার দৃশ্য নাকি বড়ই চমৎকার এবং উপভোগ্য।

সারা দিনের কর্মক্লান্ত শরীর নিয়ে দূর্গেশনন্দিনী দূর্গ বেদীতে উঠলেন। সূর্য তখন রক্তিম রং ধারন করেছে- পাখিরা যার যার নীড়ে ফেরত যাবার জন্য আসমানে পাখা মেলে এলো মেলো ভাবে উড়ছে কখনো উপরে উঠে যাচ্ছে ধাই ধাই করে, আবার পরক্ষনে সা করে নীচে নেমে আসছে। গোধুলী লগ্নে পাখীদের এমন উত্থান পতনের উড়াউড়ির মর্মকথা তিনি বুঝতে পারলেন না।
পশ্চিম দিকে মুখ করে দূর্গেশনন্দিনী এবার বসলেন। তার প্রিয় বিড়াল এবং একজন আয়া ছাড়া সেখানে অন্য কেউ ছিলো না।

ছিলোনা মানে থাকার অনুমতি ছিলো না। তিনি একান্ত নিভৃতে বসে রক্তিম আকাশে অস্তগামী সূর্যের হারিয়ে যাবার দৃশ্য দেখবেন এবং এলোমেলো বাতাসে দোল খেতে খেতে জীবনের কিছু উপাখ্যান স্মরন করার চেষ্টা করবেন। আয়া এসে এক মগ গরম উটের দুধ এবং খুরমা খেজুর রেখে গেলো। নতুন এই দূর্গে আসার পর তিনি বিলক্ষন বুঝতে পারছেন যে, চাটুকারেরা যাই বলুক না কেন সামনের দিনগুলো কিন্তু ভালো যাবে না। কাজেই অসুস্থ পরিবেশে একটি মানুষের সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো তার সুস্থ দেহ এবং সুস্থ মন।

তাই তিনি নিয়ম করে আরব দেশীয় বীরদের মতো উটের দুধ এবং খুরমা খেজুর খাওয়া শুরু করেছেন। অন্যদিকে মনের স্থিরতা এবং প্রশান্তি লাভের জন্য দিনের কিছুটা সময় একাকী কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মুখে খেজুর পুরে চিবোতে চিবোতে দূর্গেশনন্দিনী ৩ বার আকাশের দিকে তাকালেন। তারপর তার দৃষ্টি জমিনে নিপতিত করলেন। বড় করে নিঃশ্বাস নিলেন- তারপর ভাবলেন কেনো আমি এতোসব করছি এবং কার জন্য! হঠাৎ করেই তার মরহুম আব্বা হুজুর, আম্মা হুজুর স্নেহের ছোট ভাই বোন ও আত্মীয় স্বজনের কথা মনে পড়লো।

তিনি খেজুর চিবানো বন্ধ করলেন। বহু কুজন, বহু দূর্জনে মিলে তার আব্বা হুজুরকে বাধ্য করেছিলো একটি সাধের সৌধ নির্মান করার জন্য কিন্তু সেই বেদীতে অনুপ্রবেশের পূর্বেই নির্মমভাবে তাকে সপরিবারে খুন করা হয়েছিলো। শয়তানেরা কুকর্মটি করে লাশগুলো ফেলে রেখেছিলো বিকেল অবধি- সেগুলো রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলো মেঝেতে। অন্যদিকে ক্ষমতা ভাগাভাগির জন্য পিতার লাশ পায়ে মাড়িয়ে পুরোনো প্রাসাদে চলছিলো মানসপুত্রদের উল্লাস নৃত্য।
কেনো আব্বা হুজুরকে মরতে হয়েছিলো।

কারা তাকে তিলে তিলে মৃত্যুর পানে ঠেলে দিয়েছিলো; কারা তার হত্যাকান্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহন করেছিলো- এসব তথ্য সবই জানেন মহিয়সী দূর্গেশনন্দিনী। ওদের সবার চেহারা, চরিত্র আর অন্তরের মোনাফেকী তাঁর জানা আছে। ওরা আজও তারসঙ্গে ছায়ার মতো আছে। ওরা মনে করে তিনি হয়তো ভুলে গেছেন। নাহ! তিনি ভূলেননি।

তিনি ওদেরকে কৌশলে বন্দী করে ফেলেছেন। ওদের বমি আবার ওদের দ্বারাই পুনরায় গলধ করন করাচ্ছেন- তারপর নিয়ে যাচ্ছেন সেই পরিনতির দিকে যা তারা কল্পনাও করতে পারছেনা।
হঠাৎ কোত্থেকে যেনো একটি টিয়া পাখি দূর্গবেদীতে উড়ে এসে দূর্গেশনন্দিনীর একদম পায়ের কাছে বসলো। পাখিটি একদম ভয় পেলো না। পায়ের কাছে গড়া গড়ি খেতে খেতে বনের পাখি মর্তের মানবীর কোলে এসে বসলো।

পাখির এতোসব কান্ডে দূর্গেশনন্দিনী হৃদয়ে অনাবিল প্রশান্তি অনুভব করলেন। পাখিটির দিকে তাকিয়ে তার নিহত হওয়া ছোট বালক ভাইটির কথা মনে পড়লো। তার ভাই যে টিয়া পাখি পছন্দ করতো সে কথা তিনি ভুলেই গিয়েছিলেন। পরম মমতায় ভাইয়ের স্মৃতি মনে করে তিনি যখন পাখিটি ধরতে যাবেন ঠিক তখনই পোষা বিড়ালটি লাফিয়ে পড়লো টিয়া পাখিটির উপর। পাখি উড়ে গেলো- বিড়াল মিউ মিউ শুরু করলো।


পাখিটার জন্য ভীষন মন খারাপ হয়ে গেলো। মনে হতে লাগলো পাখিটা বোধ হয় স্বর্গ থেকে তার কাছে এসেছিলো ছোট ভাইটির কোন বার্তা নিয়ে। কি সেই বার্তা! এসব চিন্তা করতেই ক্লান্ত বিকেলটা তাকে আরো অবসন্ন করে তুললো। তিনি আনমনে তার আব্বা হুজুর, আম্মা হুজুর ও ভাইবোনদের উদ্দেশ্য করে বিড় বিড় শব্দে কি যেনো বললেন তারপর মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়ালেন। রক্তিম সূর্য তখন ডুবে যাচ্ছিলো- মরুভূমির অস্তাচলে।

গোধুলী লগ্নে একাকী নির্জনে, ধুসর মরুভূমির নির্মম প্রান্তরে, উদাস দৃষ্টির প্রচ্ছন্ন সীমাবদ্ধতায় তিনি খোঁজ করলেন নিজেকে, নিজের অস্তিত্বকে; কিছুই খুঁজে পাচ্ছিলেন না। ক্লান্ত শরীর আর অবসন্ন মন নিয়ে তিনি হঠাৎ লক্ষ করলেন- টিয়া পাখিটি ফিরে এসেছে। দূর্গেশনন্দিনী উৎফুল্ল হয়ে উঠলেন- তারপর একরাশ স্বপ্ন, ভলোবাসা, আর আবেগকে জোটবদ্ধ করে এগিয়ে গেলেন পাখিটি ধরার জন্য।


রনি ফেবু থেকে!!



একটা ভ্রমণ ব্লগ!




 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।